এই দিনে ইয়াসির আরাফাত মারা গিয়েছিলেন, কিংবা যে পূর্বঘোষিত মৃত্যুর দিকে তাঁকে তিলে তিলে টেনে নেওয়া হচ্ছিল , এই দিনে তা পূর্ণতায় পৌঁছে। আধুনিক ফিলিস্তিনি জাতির এই পুরোধা পুরুষের মৃত্যুর নয় মাস পর ইসরায়েলের প্রধান পত্রিকা হারিতজ পত্রিকা তাদের শিরোনাম করে: “আরাফাত মারা গেছেন এইডস অথবা বিষপ্রয়োগে: চিকিতসকগণ”। এইডস এসেছে প্রথমে।
যুগ-যুগ ধরে সরকারি মদদে ইসরায়েলি মিডিয়া ফিলিস্তিনি নেতার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার চালিয়েছে। তাঁর ওপর বর্ষণ করা হয়েছে অযুত পরিমাণ ঘৃণাবাক্য এবং তাঁকে বানানো হয়েছে শয়তান। এ ভাগ্য আরাফাতের সময়ে আর কারুরই হয়নি। তাঁর মৃত্যুর পরও সেই ঘৃণাবর্ষণের অবসান হয়নি। ওপরে বলা ঐ রিপোর্টটি সেই একই বিস্তৃত ও ধারাবাহিক প্রচারণারই অংশ। এর চুম্বক শব্দটি হচ্ছে, ‘এইডস’। অথচ এই দীর্ঘ রচনাটির কোথাও এ অভিযোগের পক্ষে একটিও প্রমাণ নাই। রিপোর্টাররা ‘ইসরায়েলি সিকিউরিটি স্ট্যাবলিশমেন্টের সোর্সদের’ বরাত দিয়েছেন। তারা ইসরায়েলি ডাক্তারদের কথাও তুলে দিয়েছেন, ‘যারা আবার সেটা শুনেছেন ফরাসি ডাক্তারদের কাছ থেকে রোগ নির্ণয়ের কী খাঁটি পদ্ধতি! ইসরায়েলের একজন নামী অধ্যাপক এমনকি শেষকথা বলার মত প্রমাণও পেয়েছেন। হায় পরিহাস! অথচ তারা বলে না যে, এর আগে রামাল্লায় আরাফাতের এইডস টেস্ট করা হয়েছিল এবং তাতে তিনি নিরোগ প্রমাণিত হয়েছিলেন। এই টেস্টটি করেছিলেন তিউনিসিয়ার একদল চিকিৎসক, কিন্তু আরবদের কে বিশ্বাস করবে?
পত্রিকাটি জানে কীভাবে নিজেকে রা করতে হয়ে। রিপোর্টটির কোনো একখানে, তার আকর্ষণীয় শিরোনামের থেকে অনেক দূরে তারা নয়টি শব্দে লিখেছে, ‘তবে আরাফাতের এইডস হওয়ার সম্ভাবনার পে জোরদার প্রমাণ নাই’। অতএব হারিৎজ ভুল করেছে বলা যাবে না। সামরিক বাচনভঙ্গি ব্যবহার করে বললে, তাদের পশ্চাদ্দেশ সুরতি। এর সঙ্গে তুলনা করা যায়, একইদিনে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একই বিষয়ক প্রতিবেদনটিকে। সেখানে এইডসের কথা বলা হয়েছে; তবে সন্দেহের সাথে।
এটা যে ডাঁহা মিথ্যা তা সরলভাবেই প্রমাণ করা যায়: যদি এর কনামাত্রকেও সত্য বলার অবকাশ থাকতো, তবে ইসরায়েলি সরকারের বিপুল প্রচারযন্ত্র বং বিশ্বময় ছড়ানো ইহুদি প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ মাস অপো না করে আরাফাতের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই ছাদে উঠে ঢোল পিটিয়ে তা ঘোষণা করতো। কিন্তু ঘটনা হলো, এর কোনো প্রমাণ নাই। তাছাড়াও রিপোর্টটির লেখকদ্বয় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, আরাফাতের লোগলণ কোনোভাবেই এইডসের সঙ্গে মেলে না।
তাহলে কীসে তার মৃত্যু হলো?
রামাল্লায় আরাফাতের জনকলরোলভরা জানাজায় আমি সামিল ছিলাম। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে কিছু বলা থেকে আমাকে বিরত করা হয়। আমি চিকিৎসক নই, তবে একটি অনুসন্ধানী পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে কয়েক যুগের অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে: যা আমি আদালতে প্রমাণ করতে পারবো না তা কখনো উচ্চারণ করতে নাই। কিন্তু এখন যখন সমস্ত বাধা সরে গেছে, মনে যা আছে তা বলার জন্য এখন আমি তৈরি: প্রথম মুহূর্ত থেকেই আমি নিশ্চিত ছিলাম, আরাফাতকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
হারিতজ যে সকল চিকিতসকের সাক্ষাতকার নিয়েছে, তাঁরাও যাচাই করে দেখিয়েছেন সকল লক্ষণ বিষপ্রয়োগের সঙ্গেই মেলে, আর কিছুর সাথে নয়। যে ফরাসি চিকিতসকরা মৃত্যুর আগের দু‘সপ্তাহ ধরে তাঁর চিকিতসা করেছেন তাদের দেয়া রিপোর্ট বলছে, মৃত্যুর কারণ তাদের কাছে অনাবিষ্কৃত। সত্যিই, পরীক্ষায় দেহে বিষপ্রয়োগের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। কিন্তু এসকল টেস্ট তো করা হয় সাধারণ বিষের জন্য! আর এটা কে না জানে যে, দুনিয়ার অনেক গোয়েন্দা সংস্থা এমন কিছু বিষ তৈরি করেছে যাকে কখনো সনাক্ত করা যায় না, বা যা কাজ সারার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায়।
কয়েক বছর আগে, ইসরায়েলি গোয়েন্দারা আম্মানের সদর রাস্তায় একটা ছোট্ট খোঁচা দিয়ে হামাস প্রধান খালেদ মিশালের শরীরে বিষ ঢুকিয়ে দেয়। বাদশাহ হুসেন ততক্ষণাত ইসরায়েলের কাছে এর প্রতিষেধক দাবি করেছিলেন এবং তাঁর চাপে সেটা দেয়া হয় বলে সে যাত্রায় মিশাল বেঁচে যান। (আবার আগাম দায়মুক্তি হিসাবে, ইসরায়েলের ততকালীন প্রধানমন্ত্রি বেনিয়ামিন নেতিনেয়াহু হামাসের আরেক প্রধান শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে মুক্তি দেয়। কিন্তু বছর কয়েক আগে গাজায় ফিরে আসার পর তাঁকেও হত্যা করা হয়। এটা করা হয় কোনো গোপন পথে নয়, অনেক সোজাসাপ্টা পথে মিসাইল মেরে।)
যখন পরিচিত কোনো রোগলণ অনুপস্থিত এবং বিষপ্রয়োগের পরিষ্কার চিহ্ন বর্তমান, তখন এটাই হওয়া সম্ভব যে, বিষের প্রতিক্রিয়া শুরুর ৪ ঘন্টা আগে ডিনারের সময়ই আরাফাতের শরীরে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল। আরাফাতের চারপাশে নিরাপত্তার এন্তোজাম যে খুবই শিথিল ছিল তা আমি প্রমাণ করে দিতে পারি। বিভিন্ন দেশে যখন ডজনেরও বেশি বার তাঁর সাথে মিলিত হয়েছি, তখন আমি দেখে খুবই অবাক হয়েছি যে, কত সহজেই না আততায়ীরা তাঁকে হত্যা করতে পারে! যেভাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রিকে পাহারা দেয়া হয় তার সাথে তুলনায় আরাফাতের নিরাপত্তা খুবই সাধারণ মানের। তিনি প্রায়শই বাইরের লোকের সাথে খেতে বসতেন, দেখা করতে আসা যে কারো সঙ্গেই কোলাকুলি করতেন। তাঁর সঙ্গিরা জানিয়েছে, তিনি যখন তখন বাইরের লোকের দেয়া মিষ্টি খেতেন, এমনকি তাদের দেয়া ওষুধ নিতেন তো বটেই এবং তাদের সামনেই তা খেয়ে ফেলতেন। ডজনখানেক হত্যা প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়া এবং একটি প্লেন দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়ায় তাঁর মধ্যে নিয়তিবাদী মনোভাব তৈরি হয়েছিল যে, ‘সবই আল্লাহ্রর হাতে’। আমার মনে হয়, তাঁর অন্তরের অন্তঃস্থলে এমন এক বিশ্বাস ছিল যে, আল্লাহ নিশ্চয়ই আরাধ্য কাজ সমাধা হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবেন।
যদি তিনি বিষেরই শিকার হয়ে থাকেন_ তবে কার দ্বারা?
প্রথমেই সন্দেহ যাবে ইসরায়েলি সামরিক সংগঠনের দিকে। অবশ্যই, এ্যারিয়েল শ্যারন বিভিন্ন সময়ে অনেকবার আরাফাতকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি মন্ত্রীপরিষদের সভাতেও উঠেছিল। গত কয়েক বছরে একাধিককবার আমি এবং আমার বন্ধুদের মনে হয়েছে, এটা ঘটতে যাচ্ছে। তাই আমরা রামাল্লার মুকাতায় হাজির হয়েছিলাম আরাফাতের মানববর্ম’ হতে। এক সাক্ষাতকারে শ্যারন বলেছেন, আমাদের উপস্থিতির কারণেই সেবার তিনি পিছিয়ে গিয়েছিলেন।
কিন্তু সত্য হলো, শ্যারন তখন নিরস্ত হয়েছিলেন প্রধানত আমেরিকানদের বাধার কারণে। তারা ভয় পাচ্ছিল যে, আরাফাত খুন হলে গোটা আরবে ব্যাপক ঝড় বয়ে যাবে এবং মার্কিন বিরোধী প্রতেরোধ অনেকগুণ বাড়বে। ইসরায়েলি গোয়েন্দারা কোনো চিহ্ন না রেখেই লোকজনকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলতে সক্ষম, মিশালের ঘটনা তারই প্রমাণ। ঘাতকরা হাতেনাতে ধরা পড়েছিল বলে বিষপ্রয়োগের ব্যাপারটা তখন জানা গিয়েছিল।
যাই হোক সম্ভাবনা সম্ভাবনাই, প্রমাণ নয়। ইসরায়েলিরাই আরাফাতকে বিষ দিয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত করা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। কিন্তু যদি তারা না হয় তবে কারা? মার্কিন গোয়েন্দারাও এ কাজের উপযুক্ত। প্রেসিডেন্ট বুশ কখনোই আরাফাতের প্রতি তার ঘৃণা গোপন করেননি, আবার আরাফাতও তার নির্দেশ মোতাবেক চলতে রাজি ছিলেন না। তার বদলে মাহমুদ আব্বাসকে বরণ করায় বুশের আগ্রহ ছিল। এমনকি এখনও মার্কিন প্রতিনিধিরা মুকাতায় এলে এর প্রাঙ্গনে আরাফাতের কবরে শ্রদ্ধানিবেদন থেকে দৃষ্টিকটুভাবেই বিরত থাকে।
তবে আমেরিকানদের সন্দেহ করার মত প্রমাণও আমাদের হাতে নাই। তাহলে ভাবা যেতে পারে অন্য কারো কথা, এমনকি ঘাতকরা আরবদের মধ্যে থেকেও আসতে পারে।
আরাফাতের মৃত্যু কি শ্যারনকে লাভবান করেছে?
প্রাথমিকভাবে না। যতদিন আরাফাত বেঁচে ছিলেন, ততদিন ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন ছিল সীমাহীন। কিন্তু তার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রেসিডেন্ট বুশ তার উত্তরসূরীর প্রতি মুখ ফেরালেন। ইরাকে শোচনীয় ব্যর্থতার পর বুশ বাধ্য হয়ে ‘বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের’ অন্য কোথাও দেখাবার মত সাফল্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাই আরব ও মুসলিম বিশ্বের ওপর দিয়ে নয়া মার্কিন হাওয়ার প্রতীক হিসাবে তিনি মাহমুদ আব্বাসকে হাজির করেছেন। আবার যাতে আব্বাসের ওপর ফিলিস্তিনিরা আস্থা আনে, তার জন্য শ্যারনকেও নমনীয় হতে নতুন ধরনের চাপ দিচ্ছেন। সম্ভবত শ্যারন মনে মনে অতীতের সেই সুসময়ের আশা করেন, যখন জীবন ছিল সোজা এবং শত্রুও ছিল চেনা।
কিন্তু যে ব্যাক্তির ধ্যানজ্ঞান হলো, ফিলিস্টিøনী জনগণের ঐক্যকে টুকরা টুকরা করা এবং যে কোনো মহƒল্যে একটি কার্যকর ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঠেকানো, সে ঐকান্তিকভাবেই চাইবে আরাফাতের অবসান। যে আরাফাত সমগ্র ফিলিস্তিনী জনগণকে একতাবদ্ধ করেছেন। তারই আছে জনগণকে আদেশ করার অধিকার, এবং তিনি এটা করেন জোর ও সহৃদয়তার সঙ্গে, মানবিক প্রজ্ঞা কৌশলের সঙ্গে।
ইসরায়েলে এমন অনেক লোক আছে যারা আশা করেছিল যে, আরাফাতকে ছাড়া ফিলিস্তিনি মাজ ভেঙ্গে পড়বে, ব্যাপক নৈরাজ্যের কারণে এর ভিত্তি টলে যাবে এবং সশস্ত গোষ্ঠীগুলো একে অন্যকে এবং তাদের জাতীয় নেতৃত্বকে হত্যা করবে। আরাফাতের মৃত্যুতে যারপরনাই খুশি হয়ে এখন তারা প্রার্থণা করছে যাতে মাহমুদ আব্বাস ব্যর্থ হন। একবার আরাফাত আমাকে নিশ্চিত করে বলেছিলেন যে, আমরা উভয়ে আমাদের জীবিতকালেই শান্তির দেখা পাব। কিন্তু তাকে সেই দিনটির কাছে যাবার আগেই তাকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। যে এটা করেছে,সে যেই হোক সে শুধু ফিলিস্তিনী জনগণের বিরুদ্ধেই পাপ করেনি, সে পাপ করেছে শান্তির বিরুদ্ধে, এবং সেকারণে ইসরায়েলেরও বিরুদ্ধে।
লেখক: ভিন্নমতাবলম্বী পত্রিকা গুশ সালোমের সম্পাদক, সাবেক সাংসদ এবং ফিলিস্তিনীদের পক্ষের আন্দোলনের নেতা।
Have your say
You must be logged in to post a comment.
৬ comments
ফারুক ওয়াসিফ - ১১ নভেম্বর ২০০৮ (১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ)
হেগেল এই কথাকেই ঘুরিয়ে বলেছিলেন, যা বাস্তব তা-ই যৌক্তিক। অর্থাত যা প্রতিষ্ঠিত তা যৌক্তিক বলেই প্রতিষ্ঠিত, যা চলিত তাই সত্য। কিন্তু আদতে তা ঠিক নয়। সবাই যে বিষয়ে একমত থাকে, বিশ্লেষক-দার্শনিকের কাজ শুরু হয় সেখান থেকেই।
প্রথমত, ফিলিস্তিনে কিন্তু আনঅফিসিয়ালি এটা প্রচলিত যে আরাফাত বিষপ্রয়োগে মারা গেছেন। পাশ্চাত্যে উল্টোটা প্রচলিত। সুতরাং প্রচলনের দোহাই দেশ ও স্বার্থ নিরপেক্ষ নয়।
দ্বিতীয়ত, আরাফাতের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য যা ফরাসিদের কাছে আছে তা প্রকাশ করা হোক। তাহলে তো সত্যের আভাসটা পরিষ্কার হয়। সেটা ফরাসি সরকার এবং ফিলিস্তিনি সরকারের এখতিয়ারে। প্রশ্ন হচ্ছে, সেটা তারা করছে না কেন? এ বিষয়ে আরাফাতের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক কুর্দি বলছেন,
At the least, that judgment seems entirely strange and out of the ordinary especially for man of Arafat’s prominence. He may have been the victim of a slow acting and developing hard to detect poison somehow administered to him inside his West Bank compound from which no cure was possible at least once the Palestinian leader arrived in Paris. But nothing
was done to prove it conclusively as Arafat’s personal physician for over 25 years, Dr. Ashraf Al Kurdi, confirmed explaining his successor as PA president, Mahmoud Abbas, refused to allow an autopsy. He said: “They didn’t want to do it. When you talked to them about an autopsy they would get fits. He (Abbas) said it would disturb relations with France.”
Dr. Kurdi, in a later interview, called this “stupid,” said he didn’t believe it would upset the French, and that in Jordan autopsies in suspected criminal cases are mandatory to determine cause of death. Given the strong possibility Arafat was poisoned, French doctors almost certainly would have been willing to conduct one as well, if not deterred, but had it been done, it might have been very disturbing to relations with Israel and the US, and it may be Mahmoud Abbas got his marching orders to participate in a coverup.
সূত্র : ttp://www.globalresearch.ca/index.php?context=va&aid=4309
আরাফাতের দেহ অটোপসি করায় বাধা দিয়েছিলেন মাহমুদ আব্বাস এবং তাঁর স্ত্রী সুহা। এমনকি যিনি আরাফাতের বিশ্বস্ত ছিলেন এবং ২৫ বছর ধরে র্তাঁর সঙ্গে আছেন তাঁকে আরাফাতের সঙ্গে প্যারিসে যেতেও দেয়া হয়নি। প্যারিসের ডাক্তাররাও আরাফাতের রোগের ইতিহাস তাঁর কাছে জানতে চায়নি।
ডিনারের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আরাফাত অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথম দিকে তাঁকে চিকিৎসা করেন মিসর ও তিউনিসিয়ার একদল ডাক্তার। যারা আগে কখনো তাঁর চিকিৎসা করেনি। ড. কুর্দিকে ডাকা হয়:
I was called on the sixteenth day after his illness, and when I went there I saw a group of Tunisian doctors sent by his wife to Ramallah without calling me. These people never had any idea about Arafat’s health- never saw Arafat before. I saw four Egyptian doctors and three Palestinian doctors. After I went to Ramallah with my group, I went straight to see him. There were signs of poisoning, manifested by a reddish patch on his face and a metallic, yellow color to his skin.
ইউরি অ্যাভনরি এ বিষয়ে বলেন,
Most of the doctors interviewed by Haaretz testified that the symptoms point towards poisoning, and, in fact, are incompatible with any other cause. The report of the French doctors, who treated Arafat during the last two weeks of his life, states that no known cause for his death was discovered. True, the tests did not find any traces of poison in his body – but the tests were conducted only for the usual poisons. It is no secret that many intelligence services in the world have developed poisons that cannot be detected at all, or whose traces disappear in a very short time…
…In the absence of symptoms of any known disease, and since clear indications of poisoning were present, the highest probability is that Yasser Arafat was indeed poisoned while having dinner four hours before the first symptoms appeared.
সূত্র: http://www.globalresearch.ca/index.php?context=va&aid=924
আপাতত এই। এর সঙ্গে নিউইয়র্ক টাইমস ও দি হেরাল্ড ট্রিবিউন এর আর্কাইভেও সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। তারাও গুরুতর সন্দেহ তুলেছে।
শেষ বিচারে প্রশ্ন হচ্ছে, কী আমরা বিশ্বাস করতে চাই আর কী চাই না। জ্ঞানের রাজনীতি এখানেই সক্রিয়। সবসময়ই কায়েমি তথ্যই যে সঠিক, তা নয়। তাই প্রতিষ্ঠিত সত্যকে প্রশ্ন করেই এগতে হয়। বিশেষত সেই বিশ্বে যেখানে ম্যাসিভ মিসইনফর্মেশনের জাল পাতা। সেসব নিয়ে কথা বলা মাত্রই তাই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নয়। আর যে বিশ্বে রাজনীতির অর্ধেকটা থাকে গোপন যোগসাজশ আর আঁতাতের মধ্যে সেখানে ষড়যন্ত্র একটা বাস্তব ফর্মুলা। একে উড়িয়ে দেয়ার মধ্যে তাই কোনো বুদ্ধিবত্তার প্রমাণ মেলে না।
শেখ মুজিবের মৃত্যুতে সিআইএ-র হাত এখন আর ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিষয় নয়। লিফসুলজ এবং মার্কিন দলিলগুলো তা সত্য প্রমাণ করেছে। আরাফাতের মৃত্যুর সত্য জানতে আমাদের হয়তো আরো অপেক্ষা করতে হতে পারে।তার আগে, গুরুতর যে প্রশ্নগুলো উত্থাপিত হয়েছে, যেগুলোকে বলা যায় পারিপার্শ্বিক আলামত, আদালতে কিন্তু তাও বিবেচ্য। আশা করি, আরাফাতকে কে খুন করেছে বা তিনি আদৌ খুন হয়েছেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এমন ধারণা নিয়ে বসে থাকা কঠিন হবে।
মাহতাব - ১৪ নভেম্বর ২০০৮ (১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ)
ফারুক, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার লেখার জন্য।আমরা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অবস্হা এবং সেখানে একসময় বাম রাজনীতির বিকাশ ও পরবর্তীতে তার ক্ষয়, এসব বিষয় নিয়ে আপনার একটা লেখা চাই।আশায় থাকলাম।
আহমেদ মুনির - ১৪ নভেম্বর ২০০৮ (১২:১৪ অপরাহ্ণ)
ফারুক, আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগলো । ইসরায়েলে বসতী স্থাপনকারী বহু ইহুদি বামধারার রাজনীতির সাথে যুক্ত । মধ্যপন্থি পিএলও কিংবা বামপন্থি ফিলস্তিনি সংগঠনগুলোকে তারা কী চোখে দেখে ? এ বিষয়ে লিখলে উপকৃত হব।
অবিশ্রুত - ১৫ নভেম্বর ২০০৮ (১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ)
প্যালেস্টাইনের মুক্তি আন্দোলনের প্রতি সমর্থন আছে বলেই এখন খতিয়ে দেখার সময় এসেছে, তাদের নেতৃত্ব কেন এই মৃত্যুখুন মেনে নিয়েছে। এবং এটিও ভেবে দেখতে হবে, হামাসের মতো দল সেখানকার মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে আসলে কোনখানে নিয়ে যাবে।
মাসুদ করিম - ৭ নভেম্বর ২০১৩ (১২:২৫ অপরাহ্ণ)
সুইস বিশেষজ্ঞদের স্টাডি বলছে, ইয়াসির আরাফাতের উপর উচ্চমাত্রায় তেজষ্ক্রিয় ‘পলোনিয়াম’ প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং এর বিষক্রিয়ায় ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু হয়েছে।
মাসুদ করিম - ৪ ডিসেম্বর ২০১৩ (১:২৯ পূর্বাহ্ণ)
ফ্রান্সের ফরেনসিক রিপোর্ট বলছে কোনো ধরনের বিষক্রিয়ায় ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু হয়নি।