আমাদের সমাজে এই নারী হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি কি রকম? "ভালো" মেয়ে প্রশ্ন করে না, জোরে হাসে না, জোরে কথা বলে না, তর্ক করে না, প্রতিবাদ করে না, নিজের চাহিদার কথা মুখ ফুটে বলে না। সে জটিলতা বোঝে না, রাজনীতি তো নয়ই। তার শরীর তার লজ্জার বস্তু তাই নিজেকে আবৃত রাখে সে। পা ঢাকে, মাথা ঢাকে, তাতেও যখন হয় না তখন মুখ ঢাকে। একসময় নিজের মনুষ্যত্বটুকুও ঢাকে প্রাণপণে। হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এণ্ডারসনের "লিটল মারমেইড" গল্পটির কথা মনে আছে কারো? সেই যে ছোট্ট জলপরী, রাজপুত্রের কাছে এবং তার সমাজের কাছে গ্রহনীয় হওয়ার জন্য ধীরে ধীরে একটি একটি করে স্বকীয়তা হারায় সে? সবশেষে হারায় তার কণ্ঠস্বর।

তাই খোলা চোখ চেয়ে দেখুন বাংলাদেশে আজ ভালবাসার দিক থেকে আনন্দের দিক থেকে যৌনতার দিক থেকে উদযাপন ও অনুসঙ্গতার সবকিছু নির্মমতম নিষ্ঠুরতায় ধ্বস্ত [...]

ভালবাসার দিক থেকে আনন্দের দিক থেকে যৌনতার দিক থেকে মানুষের অর্থাৎ নারী পুরুষ বা অন্যান্য লিঙ্গের এক ধরনের পারস্পরিক দ্বৈরথ থাকেই - কিন্তু কখন সেটি অপরাধে রূপ নেয়, কখন সেটি জঙ্গিহানা হয়ে ওঠে তা যেসমাজ বোঝে না - সেসমাজ পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতার আগ্রাসনে নারী ও অন্যান্য লিঙ্গের কাপড় আর চালচলনের মান্দাতার কিছু বুলি ছাড়া আর কিছুই বোঝে না - আর তার শক্তি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীর যৌন অপরাধী ও জঙ্গিরা সমাজে দাবড়ে বেড়াচ্ছে - এবং এই সামুহিক কুশিক্ষার প্রভাবেই বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্র ও তার সরকারেরা অন্য ধর্মের উপাসনালয় ও জনপদ ভাঙলে, নারী ও অন্যান্য লিঙ্গের উপর অপরাধী ও জঙ্গি আক্রমণ হলে, নাস্তিক ব্লগার ও প্রগতিশীল মানুষের মাথা কুপিয়ে হযরতকে সমুন্নত করলে, উন্মুক্ত উৎসব ও সাংস্কৃতিক অবস্থানে ইসলামবাদী হামলা করলে তার বিচার করতে পারে না - এখানে রাষ্ট্র ও সরকার সমাজের সামুহিক কুশিক্ষাকে প্রণোদনা দেয় কারণ তার মধ্যে এটা জোরেশোরে কাজ করে যে এই সামুহিক কুশিক্ষার তোয়াজ করলেই সহজেই টিকে থাকে ক্ষমতা, রাষ্ট্র ও সরকার এটা বোঝে না সেই টিকে থাকার নির্লজ্জ ক্ষমতাকে সার্বক্ষণিক ব্যঙ্গ করে মানবতা। তাই খোলা চোখ চেয়ে দেখুন বাংলাদেশে আজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বহুবিভক্তির বহুরূপী বর্ণার্ঢ্যতা বিপর্যস্ত - তাই খোলা চোখ চেয়ে দেখুন বাংলাদেশে আজ ভালবাসার দিক থেকে আনন্দের দিক থেকে যৌনতার দিক থেকে উদযাপন ও অনুসঙ্গতার সবকিছু নির্মমতম নিষ্ঠুরতায় ধ্বস্ত।

[...] ব্যথার সীমা দিয়ে এইভাবে দেশও চেনা যায়, বাংলা নামের দেশ, বাংলাদেশ। এই এত্তটুকুন নাম, অর্ধশতকও হয়নি তার স্বাধীনতালাভের, এত্তটুকুন দেশ (ফুলবাতাসা-পালের নাও-তেঁতুলতলা-শাপলাপুকুরের দেশ), কিন্তু হাজার মাইল দূরের কত ছেলেমেয়েদের মনে চুপচাপ বসে থাকে এই দেশ। আওয়াজ করে না, নড়াচড়াও না, শুধু মাঝে মাঝে ভিতরে মুচড়ে দেয় ব্যথার সীমানা, আমরা বুঝতে পারি ঐ যে আমার দেশ, ঐ যে আমার দেশের ইতিহাস, ভয়াল গণহত্যার আর গণধর্ষণের এবং তারপর আবার উঠে দাঁড়ানোর। [...]

আমার ছোট্ট ছেলে জন্মাবার পর জীবনের একপর্যায় থেকে নিজের শরীরের নানান অংশ নিজেই টেনে ব্যথা পেয়ে চিৎকার দিত, এমন করে সে চিনেছিল নিজের শরীরের সীমা। কোথায় লাগলে নিজের শরীরে বাজে এমন করে। এইভাবে মানবশিশু হাতড়ে হাতড়ে ব্যথার সীমানা দিয়ে নিজের আকার আবিষ্কার করে সেটা দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম আমি। ব্যথার সীমা দিয়ে এইভাবে দেশও চেনা যায়, বাংলা নামের দেশ, বাংলাদেশ। এই এত্তটুকুন নাম, অর্ধশতকও হয়নি তার স্বাধীনতালাভের, এত্তটুকুন দেশ (ফুলবাতাসা-পালের নাও-তেঁতুলতলা-শাপলাপুকুরের দেশ), কিন্তু হাজার মাইল দূরের কত ছেলেমেয়েদের মনে চুপচাপ বসে থাকে এই দেশ। আওয়াজ করে না, নড়াচড়াও না, শুধু মাঝে মাঝে ভিতরে মুচড়ে দেয় ব্যথার সীমানা, আমরা বুঝতে পারি ঐ যে আমার দেশ, ঐ যে আমার দেশের ইতিহাস, ভয়াল গণহত্যার আর গণধর্ষণের এবং তারপর আবার উঠে দাঁড়ানোর। কমলা কালেকটিভের ‘বীরাঙ্গনা’ দেখতে গিয়েছিলাম, মরিয়মের গল্প, পরে খুশি-মায়া-মেহেরের গল্প, আরো পরে কালো পর্দা জুড়ে এক এক করে ফুটে ওঠা টকটকে লাল হরফে বীরাঙ্গনাদের নাম, বাহাতুন-জয়গুন-শামসুন্নাহার-রাজুবালা-গুরুদাসীদের নাম... সেই নামগুলোই বিধুর গল্প। আহা, পানির নিচে জোঁকের—জলজ ফুলের মৃণালের—মাছের ভাই ভাই হয়ে নাক ভাসিয়ে থাকা গর্ভিণী নারীর গল্প। শুকনো পুকুরে লুকাবার চেষ্টা করা নারীর গল্প। মায়ের গায়ে আগরবাতির মিষ্টি গন্ধ শোঁকা মেয়েশিশুর গল্প। তেঁতুলগাছে উঠে দুরন্তপনা করতে গিয়ে প্রেম আবিষ্কার করা কিশোরীর গল্প, মাথায় চালের বস্তা আর কাঁখে শিশুসন্তান নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করা নারীর গল্প। লোককাহিনীর রাজকন্যা কমলার শুষ্ক সরোবরে জল আনতে গিয়ে আত্মাহুতি দেবার গল্প। শো’র উদ্বোধন করতে গিয়ে স্বনামধন্য বৃটিশ-বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পী আকরাম খান স্মরণ করেন মার্টিন লুথার কিং-এর অমোঘ বাণী — “দেয়ার কামস আ টাইম হোয়েন সাইলেন্স ইজ বিট্রেয়াল”, এর চেয়ে সংক্ষেপে বাঙালি হিসেবে আমাদের ব্যর্থতাকে বোধহয় তুলে ধরা যায় না। বীরাঙ্গনারা ফিরে এসেছিলেন পাকবাহিনী ও তার দোসরদের পরিখা থেকে — ক্যাম্প থেকে, যেমন করে ফিরে এসেছিলেন যুদ্ধজয়ী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা। বীরাঙ্গনাদের কাউকে কাউকে তাঁদের পরিবার ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করেছিলেন — তাঁরা চলে গেছেন অজানার পথে—অচেনা গ্রামে—পতিতালয়ে, আর কাউকে কাউকে তাঁদের পরিবার গ্রহণ করেছিলেন একটিমাত্র শর্তে, সে শর্তের নাম নৈঃশব্দ্য। জন্মান্ধ যেমন আমৃত্যু অন্ধকার এক পৃথিবীতে সাঁতরে ফেরে, বীরাঙ্গনাদের অনেকে তেমনি এক অন্ধকার নৈঃশব্দ্যে সাঁতরে ফিরেছেন, তাঁদের মৃত্যুর সাথে সাথে তাঁদের…

‘বীরাঙ্গনা’ একটা শব্দ, একটা সংকেত, এই শব্দটার সাথে কত যে ফিসফাস জড়িত, শুনলেই আমরা নির্যাতিত নারী দেখতে পাই, বিবস্ত্র নারী, চুল দিয়ে উর্ধ্বফাঁস দিয়ে রাখা নারী, পরিখা থেকে পচনশীল হিউমাসের মতন উদ্ধারকৃত মিউটিলেটেড নারী, শিখ সৈন্যদের পাগড়ি দিয়ে লজ্জা নিবারণ করা নারী, মুখ লুকানো আশিরপদনখ বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া নারী। (‘অরুনোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’র) এই সব দৃশ্যই আসলে বীরাঙ্গনাদের মৌলিক গুণনীয়ক। যাদের অবিশ্বাস্য নির্যাতনের বিবরণ একনিশ্বাসে আজো পড়া যায় না, যাদের ফিরে আসাকে কেউ স্বাগত জানায়নি, যাদের বেঁচে থাকাকে কেউ সৌভাগ্য মনে করেনি, তাদের জন্যে আমরা একটা শব্দ নিয়োগ করেছি ‘বীরাঙ্গনা’, এর সাথে ব্র্যাকেটবন্দী কিছু ফিসফাস এবং দৃষ্টিভঙ্গী (গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক)। যে মৃত তার জন্যে মিনার আছে, সৌধ আছে, ‘শহীদ’ খেতাব আছে, বীরত্ব তার শ্রেষ্ঠত্বের মালা, তার প্রতীক। যে অঙ্গহানি হওয়ার কারণে অর্ধমৃত, তার জন্যেও কোথাও না কোথাও একটু সহানুভূ্তির-আদরের ‘আহা’ শব্দ আছে, পিঠের ’পরে আত্মীয়তাকামী হাত আছে। যে ‘সম্ভ্রম’ হারালো (একজনের ধর্ষণের কারণে কেমন করে আরেকজন মানুষের সম্ভ্রহামহানি হতে পারে? সম্ভ্রম তো নিজের জিনিস, অত্যুচ্চ এবং সার্বভৌম শব্দ)- তার জন্যে আছে পুনঃসম্ভ্রমহানি, এইবার আত্মীয়তাকামী হাতে, ‘আহা’ শব্দসমেত। ‘বীরাঙ্গনা’ শব্দের ব্যঞ্জনা এইই, আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি সেই শ্রদ্ধা সেই অসমাপ্ত শ্রদ্ধাকে শ্রদ্ধা বলতে রাজি নই, যা এই নারীদের মানুষ-অস্তিত্ব, নারী-অস্তিত্বকে পুনরায় সসম্মানে-সস্নেহে গ্রহণ করতে নারাজ। আমি সেই শব্দে কেবল কৌমার্যপূজারী পুরুষতান্ত্রিক পূঁজ দেখতে পাই, আর কিছু নয়। ‘বীরাঙ্গনা’ শব্দের বদলে অনেকে এখন ‘বীরজননী’ আখ্যা দেয়া শুরু করেছেন, আসল কথা হচ্ছে, আপনি যাঁকে স্ত্রী হিসাবে, সঙ্গিনী হিসাবে স্থান দিতে অক্ষম হয়েছেন, সেই অক্ষমতা ঢাকতে আপনার এখন তাঁর জন্যে মাতৃত্বের পতিতপাবনী ঢাল দরকার হয়েছে, আরো বড় আড়াল, আরো সক্ষম আরো মহিমময়ী ঢাল। শব্দান্তর করলে কি মনান্তর ঘটে? নাকি নারীর প্রতি মনোভাব বদলায়? আহা যদি তাই হতো! রমা চৌধুরীর ক্রন্দনবিকৃত মুখ দেখে আমাদের চোখে আজ পানি আসে, আমাদের বুক মুচড়ে ওঠে যখন দেখি তিয়াত্তর বছর বয়স্ক এই মহিলা পায়ে জুতা পরেন না, এই মাটিতে কত লাশ, তাঁর সন্তানদেরও লাশ, সে লাশ জুতায় মাড়াবেন কি করে! (আমাদের কি মনে পড়ে শহীদ আজাদের মাকে, ছেলে ভাত খেতে চেয়ে মরে গেছে বলে আর কোনোদিন ভাত খেতে পারলেন না যিনি?)…

চেনা মানুষ অচেনা হয়ে উঠলে যে দুঃসহ কষ্ট আমরা পাই, চেনা মানুষের মুখোশ চিরে আরেক মানুষ বেরিয়ে পড়লে আমরা যেমন যন্ত্রণায় ছটফট করি — সেইরকম একটা অনুভূতি নিয়ে আমি নিশ্চিত পৃথিবীর সকল প্রান্তের বাঙালীরা আজকে রাতে এবং এরপর আরো অনেক রাতে ঘুমোতে যাবে। [...]

হা হন্ত তথাপি জন্ম-বিটপী ক্রোড়ে মনো ধাবতি... ১. চেনা মানুষ অচেনা হয়ে উঠলে যে দুঃসহ কষ্ট আমরা পাই, চেনা মানুষের মুখোশ চিরে আরেক মানুষ বেরিয়ে পড়লে আমরা যেমন যন্ত্রণায় ছটফট করি -- সেইরকম একটা অনুভূতি নিয়ে আমি নিশ্চিত পৃথিবীর সকল প্রান্তের বাঙালীরা আজকে রাতে এবং এরপর আরো অনেক রাতে ঘুমোতে যাবে। আমরা বাংলাদেশকে আর চিনতে পারছি না। অথচ, এই মৃতমানুষের কনভয়, এই জীবিতমানুষের শোকমিছিল এই মৃ্ত্যু উপত্যকাই আমার দেশ। দীর্ঘদিন তাই ছিল -- কেন ভুলে ছিলাম? কেন ভ্রমে ছিলাম? আমাদের চোখের সামনেই কি আমাদের ভাগ্যান্বেষণরত পরিচিত মানুষরা পত্রিকায় মৃতমানুষের সংখ্যা বাড়ায়নি? লঞ্চডুবি হয়ে, গুলি খেয়ে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মরে ফুলে পড়ে থেকেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসার অভাবে সাহায্যের অভাবে কাতরে কাতরে মরে গেছে। আর একদল বোকা মানুষ একদল পাগল তাদের খালিহাতে এই মানুষগুলিকে বাঁচাবার চেষ্টায় নিজেদের প্রাণ দিয়েছে। কখনো আমরা তাদের নাম ভুলে গেছি। কখনো তাদের বীরশ্রেষ্ঠ ডেকেছি। দেয়ালে টাঙানো বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি প্রণিধানযোগে দেখলেই আপনি বাংলাদেশের স্বরূপ দেখতে পাবেন -- এই মানুষগুলির কারো চেহারা/প্রফাইল ‘সিগনিফিক্যান্ট’ না, ঝাপসা মুখ, ভিড়ের একজনের মতো অভিব্যক্তি -- আমাদের ছোট্ট দেশটার ইনসিগনিফিক্যান্ট মানুষগুলিই আমাদের বীর। আমাদের নেতারা কোনোদিন বীর ছিল না, যোদ্ধা ছিল না, স্বার্থত্যাগী ছিল না। মানুষের মৃত্যু তাদের বিচলিত করেনি, মৃত্যু মানে হয় জয়ের তুরুপের তাস, অথবা পরাজয়ের ধ্বনি। আমাদের নেতারা কোনোদিন সামাজিক মানুষ যেমন করে কাছের মানুষের মৃত্যুকে গ্রহণ করে, যে বেদনায়, তা ধারণ করেনি। ফলে বাংলাদেশের শ্রমজীবি মানুষ অকাতরে মরবার খবরে কেবল সাধারণ মানুষই ছুটে যাবে -- নেতারা নানাভাবে নিজের পাপক্ষালনের চেষ্টা করবে (আগের দল ক্ষমতায় থাকতেও এমন ঘটেছে, যারা করেছে তারা আমাদের কেউ না) এবং রাষ্ট্রনায়ক/নায়িকা ভান করবেন তাঁরা এখনো তাঁদের দলের নেতা, দেশের দায় তাঁদের নেই -- এতে অবাক হবার কিছু নেই। তাহলে এমন যাতনা কেন? সাভারের গার্মেন্টসে যে মানুষগুলি এমন করে মরে গেল, তাদের নিরন্তর সংগ্রাম ছিল বেঁচে থাকার, জীবনের দিনগুলিকে অল্প দামে বেচে দিয়ে জীবনযাপনের জন্যে অসামান্য সেই সংগ্রাম।আমি জেনেছি, অনেক শ্রমিক উদ্ধার পেয়ে বিকলাঙ্গ-জীবন যাপনের চেয়ে সেই জগদ্দলের তলায় সমাধিস্থ হতে চেয়েছেন -- যেন কোনোভাবে তাঁদের মৃত্যু অন্ততঃ একটা আর্থিক মূল্য পায়। এই তো বাংলাদেশ। নেতানেত্রীরা…

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.