প্রচুর টাকা থাকলেই এখন যে কেউ লেখক হয়ে যেতে পারেন। এমন কী লিখতে না জানলেও ক্ষতি নেই। টাকা নিয়ে যে কোনো প্রফেশনাল রাইটার (এমন কী সাংবাদিকও) লেখকের নামে বই লিখে দেবেন[...]


আমার বাবা আজিজ মেহের, সাতের দশকের সাবেক নকশালাইট, প্রান্ত বয়সে এসে রাজনীতি ছেড়ে আটের দশকে প্রকাশনার ব্যবসা করেছিলেন।

সে সময় সিন্দাবাদের বুড়োর মতো লিটল ম্যাগাজিনের ভূত ঘাড়ে চেপে বসায় সদ্য কৈশর পেরিয়ে আমি অকালপক্ক বয়সেই জেনে গিয়েছিলাম, ছাপাখানার কল-কব্জা। সীসার হরফ, কাঠের ব্লক, তেল-কালি মাখা গ্যালি-বয়, মেশিন ম্যান, ল্যান্ড মাইনের মতো ছাপার কালির টিন, এমনকি আলো-আঁধারিতে ঘোলা বাল্বের নীচে ভাড়ি চশমা আঁটা প্রুফ-রিডার — সবই আমাকে খুব টানতো। ‘পথের পাঁচালি’ ছাড়া তখনো ‌’অপুর সংসার’ বই পড়া বা সিনেমা দেখা কোনটাই তখনো হয়নি।… তবু একটু একটু করে লেটার-প্রেস আমাকে দখল করে ফেলে। আমি তারপিন তেলের গন্ধ, প্রেসের ‘ছপ ছপ’ ছাপার শব্দসহ তাবৎ কিছু আমায় মুগ্ধ করে। দৈবক্রমে খানিকটা অপুও কী আমার ভেতরে ঢুকে যায়?

আরো পরে এলো কম্পিউটার, ডিমাই ও ডাবল ডিমাই আকৃতির অফসেট প্রেস। সংবাদ পত্র, বই-পত্র, পোস্টার-লিফলেট, এমন কি লিটল ম্যাগাজিনও ছাপা হতে লাগলো কম্পিউটারে। প্রথমে অ্যাপেল ম্যাকিনটস-এর ছোট্ট সাদা-কালো মনিটর, পরে আইবিএম-এর ঢাউশ-আকৃতির সাদাকালো মনিটর ওয়ালা কম্পিউটারই ভরসা।…

আমার বাবা অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কয়েকটি কম্পিউটার না হোক, অন্তত একটি ডিমাই আকৃতির অফসেট প্রেস কেনার। তাতে হয়তো তার প্রকাশনার ব্যবসার সুবিধা হতো। নিজস্ব বই প্রকাশ ছাড়াও বাইরের অন্যান্য ছাপার কাজও তিনি হয়তো পেতেন। কিন্তু মা’র রেডিও অফিসের কেরানীর চাকরি, আমরা ভাই-বোনগুলো তখন মাত্র একে একে পাস করে বেরিয়েছি, কোনো পারিবারিক সঞ্চয় নেই –সংসার চালানোই দায়, এ অবস্থায় কিছুতেই বাবা কোনো প্রেস কিনতে পারলেন না। উনি বই প্রকাশ করতে শুরু করলেন রশিদ মিয়ার প্রেস, আল-আমিন প্রিন্টার্স, ৭২ নম্বর, নারিন্দা থেকে।

‘বস্তু প্রকাশন’এর বইগুলো সবই ছিলো চিন্তাশীল এবং যথারীতি ব্যবসা-বিফল। বাবা প্রকাশ করেছিলেন — ড. আহমদ শরীফ, বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক আহসাব উদ্দীন আহমেদ, আহমদ ছফা, আনু মুহাম্মদ, আরজ আলী মাতুব্বর, এমন কি মাওসেতুং, লু-সুন’ও। মাতুব্বরের ‌‌’সত্যের সন্ধান’ ও ‘সৃষ্টি রহস্য’র দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ হয়েছিলো আদি প্রচ্ছদে ‘বস্তু প্রকাশন’ থেকেই।

পারিবারিক উত্তপ্ত আলোচনা থেকে ওই বয়সেই আমি জেনেছিলাম, বাবা বই প্রকাশ করতেন দাদুর আমলের আম-কাঁঠালের বিশাল বাগানের পুরনো সব গাছ উজাড় করার টাকায়। আর তার ব্যাক্তি পরিচিতির কারণে তিনি লেখক সন্মানী দিতে পারতেন সামান্যই। এই করে তিনি রশিদ মিয়ার বাকী টাকা শোধ করতে পেরেছিলেন ঠিকই, কিন্তু যথারীতি ব্যবসাটি খুব শিগগিরই লাটে উঠে যায়।…

এখনো মনে আছে, পুরনো পল্টনে বাসস অফিসের নীচে, বাবার অফিস ঘরের পেছনে স্তুপ করে রাখা হতো অবিক্রিত বই। খাগড়াছড়িতে আমার পাহাড়ি বন্ধুরা পাঠাগার খুলতে চাইলে বাবার কাছ থেকে আমরা বিনা পয়সায় এক ট্রাক নিউজ প্রিন্টে ছাপা (সুলভ সংস্করণ) বই পেয়েছিলাম। …

আরো বছর দশেক পর বাবা চলে যান দাদু বাড়িতে। প্রায় ৮০ বছর বয়সী বাবার শেষ দিনগুলো কাটছে বই পড়ে আর পুরনো কমরেডদের সঙ্গে স্মৃতিচারণে।

তো প্রকাশনা ব্যবসা সম্পর্কে আমার ধারণা ছিলো ওইটুকুই। আন্দাজ করেছিলাম, হুমায়ুন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, তসলিমা নাসরিন বা আনিসুল হক না ছাপলে প্রকাশকরা কেউই সফল হতে পারেন না।…বাদবাকী অধিকাংশের পরিনতি হয়, প্রায়-প্রকাশক আমার বাবার মতোই।

গত বইমেলায় নিজে বই প্রকাশ করতে গিয়ে এই সব ধারণা ও আন্দাজসমূহ ঘুচেছে। বন্ধু ও ‘পাঠসূত্র’র প্রকাশক রাজিব নূর বই ছাপতে টাকা নেন না, তার এটুকু আদর্শ বা গোঁ — যাই বলি না কেনো, সেটা আছে। তার উদ্যোগেই গত বই মেলায় বের হয় আমার লেখা ছোট্ট একটি বই ‌’রিপোর্টারের ডায়েরি: পাহাড়ের পথে পথে’। বইটি এক হাজার কপির মধ্যে বই মেলাতেই শদুয়েক বিক্রি হয়েছে, তেমন বিজ্ঞাপন ছাড়াই। পরে অবশ্য পাহাড়ি বন্ধুরা নিজ উদ্যোগে বইটি প্রকাশকের কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ে বিক্রি করে কুরিয়ারে তাকে বিক্রির টাকা পৌঁছে দিয়েছে, শুধু আমাকে ভালবাসে বলেই।…এ পর্যায়ে আর শদেড়েক কপি এখনো প্রকাশকের ভান্ডারে আছে, আশা করি, এই বই মেলায় সেটুকুও বিক্রি হয়ে যাবে। ‘শুদ্ধস্বর’এর প্রকাশক বন্ধুবরেষু আহমেদুর রশিদ টুটুল একই কায়দায় এবার বই মেলায় ছেপে দেন ‘প্রেস জোকস’, এই আকালেও।… এসবই অবশ্য বাড়তি পাওনা।

কিন্তু এই যে এতো এতো বাঙের ছাতার মতো প্রকাশনী, তারা টিকে আছে কিসের জোরে? বাজার অর্থনীতি কেনো ‘বড় মাছ, ছোট মাছকে গিলে খায়’ না?

এ পর্যায়ে আমি প্রকাশক মহল, এমন কি লেখক মহলে খোঁজ-খবর করে যা জেনেছি, তাতে নিজের কান নিজেকেই মলে দিতে ইচ্ছে হয়েছে।

প্রচুর টাকা থাকলেই এখন যে কেউ লেখক হয়ে যেতে পারেন। এমন কী লিখতে না জানলেও ক্ষতি নেই। টাকা নিয়ে যে কোনো প্রফেশনাল রাইটার (এমন কী সাংবাদিকও) লেখকের নামে বই লিখে দেবেন। ঝকঝকে মলাটে নামী প্রচ্ছদ শিল্পীর আঁকা প্রচ্ছদে নামী প্রকাশনী থেকে বের হবে তার বই। প্রকাশকও টু পাইস কামাবেন বৈকি ওই লেখকের (?) ছড়ানো টাকায়। তারপর সেই বই বিক্রির চিন্তা? টাকা থাকলে সেটাও কোনো বিষয় নয়। বিজ্ঞাপনে বাজার ছয়লাব করে দিলেই হবে। আর খুব বেশী বেচা-বিক্রিরই বা দরকার কী? কিছু মিডিয়া কাভারেজ পেলেই তো হলো, নাকি? সে জন্যও ছড়াতে হবে টাকা। বাছাই করা কয়েকজন সাংবাদিক ডেকে শেরাটন, সোনারগাঁ বা ঢাকা ক্লাবে ককটেল পার্টি দিলেই চলবে।… পর পর গত দুটি বই মেলায় নিজের বইকে নিয়ে এমনটিই নির্লজ্জ আয়োজন করেছিলেন জেনারেল মইন । এর আগে একই কাজ করেছেন ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু, এরশাদের সাবেক পত্নী বিদিশা। আর এখন একই কাজ করলেন ফেনীর গড ফাদার জয়নাল হাজারী।…

পাঠক টানতে সে কি বিজ্ঞাপনের ছিরি, নির্ঘাত ডেল কার্নেগি সাহেবও এখানে ফেল:

আপনি কী প্রেমে পড়েছেন? চুটিয়ে প্রেম করছেন? অথবা প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়ে ভাবছেন, আর ও মুখো হবেন না? নাকি এখনো প্রেমেরই দেখা পাননি? পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেনো, অমুক বইটি আপনার জন্য অবশ্য পাঠ্য! এটি আপনার জন্যই লেখা!!

আবার কোনো লেখক তার ফটো ছেপে দিচ্ছেন বিজ্ঞাপনে, নিজেই জানান দিচ্ছেন, তিনিই দেশের একমাত্র মনোদৈহিক প্রেমের লেখক! কবিতার বইয়ের বিজ্ঞাপনে সুন্দরী কবি নিজের মুখটিকেই পণ্য করে তুলছেন বিজ্ঞাপনে, আর তার কবিতাকে তো বটেই।…

সব মিলিয়ে কিম্ভুদ এক করপোরেট অরাজকতা চলছে বইয়ের ব্যবসাকে ঘিরে। বানানরীতি, তথ্য, লেখার মান, পুস্তক সম্পাদনা এবং প্রচ্ছদ প্রসঙ্গ তথৈবচ।

শুনতে পাই, এই সব ঝুট-ঝামেলা এড়িয়ে বোধ করি চেয়ে ভালো আছেন নোট বইয়ের আধুনিক সংস্করণ টেস্ট পেপার ব্যবসায়ী প্রকাশকরা। পাঠ-পুস্তক ব্যবসাকে ঘিরে তারা গত এক দশকে গড়ে তুলেছেন মাফিয়া চক্র। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন নিম্নমানের পাঠ্য বই ছেপে। এসব খবর এখন অনেকটাই ওপেন-সিক্রেট। …

ছবি: গোলাপ খেকো কচ্ছপ, রয়টার্স।

বিপ্লব রহমান

পাহাড়, ঘাস, ফুল, নদী খুব পছন্দ। লিখতে ও পড়তে ভালবাসি। পেশায় সাংবাদিক। টোটেম-গৌতম বুদ্ধ। *কপিরাইট © : লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত।।

১১ comments

  1. অভিজিৎ - ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (২:২০ পূর্বাহ্ণ)

    একেবারে খাঁটি কিছু কথা বলেছেন বিপ্লব। নোট বইয়ের আধুনিক সংস্করণ টেস্ট পেপার ব্যবসায়ী প্রকাশকরা যে ভাল আছেন তা দেশে গিয়ে বুঝেছি। পাঠ-পুস্তক ব্যবসাকে ঘিরে তারা আসলেই গড়ে তুলেছেন মাফিয়া চক্র। এমনকি বনেদী প্রকাশকদেরও আছে পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কারবার – এবং তারা সেটা ছাপান বেনামে কিংবা ‘দ্বিতীয় নামে’। শুনি পয়সাকড়ি কামানোর সেটাই একমাত্র পথ তাদের আর আপনার মত লেখকদের বই তারা যদিও গড়িমসি করে বের করেন – সেটা তাদের স্ট্যাটাস সম্বল বজায় রাখতে। বনেদী প্রকাশক ভাল বই ছাপান – এই ধারণা বাজারে বজায় রাখতে। অনেকটা কোটি টাকার কালোবাজারি যে কারণে পাড়ায় মসজিদ করে দেয় কিংবা লোকদেখানো দান খয়রাত করে – অনেকটা সেরকম। 🙂

    কিন্তু এতো কিছুর পরেও শুদ্ধস্বর কিংবা পাঠসূত্র-এর মত প্রকাশকদের দেখে আশার আলো পাই। না – আমাদের বই ছাপাচ্ছেন বলে নয়, বরং বই এবং লেখকদের যে অসম্মান করছেন না এইটুকু বুঝি। এই দুর্মূল্যের বাজারে এটাও কম পাওয়া নয়।

    আপনার বইগুলোর জন্য অভিনন্দন। আপনার ‌’রিপোর্টারের ডায়েরি: পাহাড়ের পথে পথে’ তো অসামান্য কীর্তি। আপনার বইয়ের বহুল প্রচার কামনা করি।

    • বিপ্লব রহমান - ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৩:০৯ অপরাহ্ণ)

      অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

      এ পর্যায়ে আমার জানতে ইচ্ছে করে, ব্যবসা সফল বড় প্রকাশনীগুলো বাজারী বই না ছেপেও টিকে আছে কী ভাবে? যেমন, ইউপিএল। শুনেছি, তারা লেখকদের ভাল সন্মানীও দেয়।…

      • অভিজিৎ - ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৭:৩৬ অপরাহ্ণ)

        হ্যা, এটা আমার জন্যও বড় বিস্ময়। 🙂 পেছনে বড় সড় ফান্ডিং না থাকলে বাজারী বই না ছেপে টিকে থাকা দুস্কর বলেই তো জানি।

        যাকগে, আপনাকে গতকাল একটা ইমেল করেছি …আপনার জিমেইলে।

        ভাল থাকবেন।

      • কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১২:২১ পূর্বাহ্ণ)

        আপনার মূল পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। শুদ্ধস্বর, পাঠসূত্র, ইউপিএল– তিনটি কিন্তু তিনধরনের প্রকাশনা সংস্থা। ইউপিএল-এর সংযোগপনা অনেক বেশি। এরা ইংরেজি বইয়ের আলাদা একটা মার্কেট কব্জা করতে পেরেছে। মহিউদ্দীন সাহেবের জানাশোনা বা যোগাযোগের পরিধি অনেক বেশি। শু্দ্ধস্বর লিটল ম্যাগ.-এর মাধ্যমে ভালোকিছু হয়ত করতে চায়। পাঠসূত্র বেশ ভালো গ্রন্থ বের করেছে। রাজিব নূর নিজেও ভালো গল্পকার। তবে পাঠসূত্র প্রকাশিত গ্রন্থের পিঠে বিজ্ঞাপন সেটে দেয়া ঠিক হয়নি। এতে একটা গ্রন্থের সার্বভৌমত্ব দারুণভাবে ক্ষুণ্ন হয়।

        • বিপ্লব রহমান - ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৩:২৭ অপরাহ্ণ)

          মতামত পেয়ে ভালো লাগলো।

          তবে আমি আপনার মতামতের সঙ্গে আংশিক একমত। ইউপিএল – চরিত্র অবশ্যই ‌’শুদ্ধস্বর’ বা ‘পাঠসূত্র’ থেকে আলাদা। আপনি ইউপিএল-এর যে বাণিজ্যিক দিকের কথাটি বললেন, সম্ভবত সে কারণেই হয়তো তারা বেশ ভালোভাবেই টিকে আছে।

          বিনীতভাবে জানাই, ‘শুদ্ধস্বর’ সিলেটের ও পরে ঢাকার একটি পুরনো লিটল ম্যাগাজিন হলেও একই নামে তারা গত বছর চারেক ধরে বেশ কিছু মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করে চলেছে। এটি এখন রীতিমত একটি প্রকাশনা সংস্থা। তবে অনিয়মিতভাবে ‘শুদ্ধস্বর’ লিটল ম্যাগাজিনটিও বের হচ্ছে।

          ‘পাঠসূত্র’ বইয়ের পিঠে বিজ্ঞাপন ছেপে দেয়, বিষয়টি প্রথমে আমারও খানিকটা চোখে লেগেছে। এতে হয়তো বইটির খানিকটা ‘সার্বভৌমত্ব’ও ক্ষুন্ন হয়। কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এসব বিজ্ঞাপন তারা টাকার বিনিময়ে ছাপেন না। এর বদলে বিজ্ঞাপন বিনিময় হয় মাত্র। যেমন, ‘দি নিউ এজ’ নামক ইংরেজী দৈনিকের বিজ্ঞাপন বইয়ে ছেপে দেওয়ার বিনিময়ে পত্রিকাটিও পাল্টা ‘পাঠসূত্র’র বিজ্ঞাপন প্রচার করে।

          একটি ছোট্ট প্রকাশনী মান সম্মত বই ছেপে টিকে থাকার চেষ্টা করছে, এ দিকটি চিন্তা করে আমরা মনে হয় তাদের খানিকটা ছাড় দিতেই পারি, তাই না?

          ভালো থাকুন।

          • কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (১১:৩৯ অপরাহ্ণ)

            আপনার প্রকাশভঙ্গি আমাকে মুগ্ধ করেছে। তবে এই যে বললেন, বিজ্ঞাপনের বিপরীতে বিজ্ঞাপন, কথাটার ভিতর কিন্তু অর্থনীতির ভাষায় দামের বদলে মূল্য-এর কথা মনে পড়ল। আপনি খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই শুদ্ধস্বরের প্রকাশনার বিষয়ে বলতে গিয়ে হয়ত শব্দটি আমি ব্যবহার করেছি।
            আপনার বাবা আজিজ মেহের, জানতাম না। তিনি তো সিনেমাও বানাতেন?
            আপনার পছন্দের ধরন থেকে মনে হচ্ছে, আপনার সাথে আমার রাজনৈতিক নৈকট্য অতি প্রবল। ভালো থাকবেন।

  2. বিপ্লব রহমান - ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৪:৪৩ অপরাহ্ণ)

    মতামতের জন্য আবার ধন্যবাদ।
    ঠিক বলেছেন, আমার বাবা পাকিস্তান আমলে ‘জাগো হুয়া সাবেরা’ নামক বিখ্যাত ছবিটির খুব সম্ভব সহকারী পরিচালক ছিলেন। পরে উনি জহির রায়হান ও আলমগীর হোসেনের সঙ্গেও দু-একটি ছবিতে কাজ করেছেন। আটের দশকে উনি ড. আহমদ শরীফের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র ‘উজান স্রোতের যাত্রী’ নির্মাণ করেছিলেন। ছায়াছবির জগত নিয়ে তিনি একটি বইও লিখেছিলেন। কিছুদিন যুক্ত ছিলেন সেন্সর বোর্ড-এর সঙ্গে। তবে চলচ্চিত্রকার হিসেবে তিনি কখনোই তেমন কিছু করতে পারেননি। …আলোকচিত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন খুব ভালো। …

    • কামরুজ্জমান জাহাঙ্গীর - ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৯:২০ অপরাহ্ণ)

      সামহাউ উনার সম্পর্কে আমার জানা আছে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার জন্যই তার নামটি আমার স্মরণে আছে। ভালো থাকুন।

      • বিপ্লব রহমান - ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ (৭:১৬ অপরাহ্ণ)

        জেনে ভালো লাগলো। আবারো অনেক ধন্যবাদ। 😀

  3. রায়হান রশিদ - ৫ জুন ২০১০ (৯:০১ অপরাহ্ণ)

    একটু আধটু সন্দেহ হতো, কিন্তু আসলেই কোন স্পষ্ট ধারণা ছিল না এই জগতটা সম্বন্ধে, বিপ্লবদা। ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য। ‘টাকা কথা বলে’, ভবিষ্যতেও হয়তো কথা বলবে, আমরা চাই বা না চাই। তাই মাঝে মাঝে মনে হয় – বইয়ের বাজারের প্রাণ ভোমরা আসলে শিশু কিশোর পাঠকদেরই হাতে। কারণ, পাঠাভ্যাসে অভ্যস্ত শিশু পাঠকই একদিন হয়ে ওঠে পরিণত পাঠক। হয়তো আমারই বোঝার ভুল, কিন্তু আজকাল পরিচিত কোন শিশু কিংবা কিশোরকে পাঠ্য বইয়ের বাইরে কিছু পড়তে দেখি না, কল্পনার ফানুস ওড়াতে দেখি না। একেবারেই কোন ধারণা নেই ওরা ওদের নিভৃত একান্ত কল্পনায় নিবিষ্ট হয়ে থাকার সময়গুলো কিভাবে কাটায়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বয়ে চলা সহজ অভ্যাসগুলোতে কোথায় যেন ছেদ পড়েছে। পশ্চিমের শিশুরা তাও কালেভদ্রে রলিংস, টলকিন, ডাহল, পুলম্যান পড়তে গিয়ে হলেও বইয়ের দোকানের সামনে ভোর রাত থেকে লাইনে দাঁড়ায়। আমাদের তেমন বই-ই আর লেখা হয় না, কিংবা লেখা হলেও হয়তো ছাপা হয় না, আর ছাপা হলেও তার বিপণন হয় না ঠিক মতো। মনে হয় – বড়োরা বড়ো বেশী ব্যস্ত বড়োদের বড় বড় ব্যাপার নিয়ে! সেবা, রাদুগা, প্রগতি, মির, মুক্তধারাসহ কিছু কিছু প্রকাশকদের প্রতি তাই আমাদের প্রজন্মের বিশাল ঋণ।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.