সুপারিশকৃত লিন্ক: মে ২০১০

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিংকের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিংক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

৩০ comments

  1. মাসুদ করিম - ১ মে ২০১০ (১০:০৭ পূর্বাহ্ণ)

    আজ পহেলা মে, বিশ্ব শ্রমিক দিবস। ব্রিটিশ পত্রিকা ‘মর্নিং স্টার’-এ রব গ্রিফিথস এর ফিচার, Capitalism — We cannot afford it, ফিচারের তিনি সংক্ষেপে আলোচনা করেছেন বর্তমান পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও মে দিবসের অবস্থান।

    In Greece, the militant movement against the socialist government’s austerity programme, dictated by the European Union Commission and Central Bank, will fly the red flag in defence of public services, jobs and wages.

    The Greek Communist Party along with its trade union front PAME and the Young Communists provide the most consistent, militant and imaginative opposition to the cuts – whatever the pretensions of ultra-left adventurists and opportunists.

    Spain and Portugal will also see colourful, working-class May Day marches and rallies led by communists and other forces on the left. They know that if the bankers and speculators succeed in smashing public services, working-class living standards and trade union resistance in Greece they will be next in the firing line.

    But nowhere else in Europe can teach us more about the perils of social democracy and communist liquidationism than that country(Italy), in which the most powerful communist party in the western world capitulated to parliamentarianism, reformism and bourgeois respectability.

    It changed its name to the Party of the Democratic Left and split the communist movement shortly before the Christian Democrats dissolved in a sewer of corruption and their leader sat in the dock alongside anti-communist and fanatically pro-EU “socialist” prime minister Bettino Craxi.

    The latter fled to Tunisia to escape imprisonment. But the divided left failed to fill the political vacuum and the result was the rise of media monopolist Berlusconi and his neo-fascist allies.

    The French Communist Party will use its deep roots in the trade union movement and local communities to lead many May Day events. Its activists will be buoyed up by good results in the recent regional elections, where the Union of the Left made substantial advances.

    But some of the biggest, most joyous celebrations of International Workers Day will be taking place in Latin America.

    Scores of thousands will fill the Plaza de la Revolucion in Havana in a riot of colour, chanting their defiance of the US trade blockade and demanding freedom for the Miami Five.

    Workers around the world will share those sentiments.

    But we must keep up the pressure on our own governments and US President Obama to close Guantanamo Bay concentration camp and respect Cuba’s national sovereignty instead of constantly trying to subvert it.

    In Venezuela the revolutionary process continues to unfold as socialists and communists look beyond May Day in their efforts to mobilise the masses of people against the wealthy oligarchy and its US backers.

    The international capitalist crisis has barely dented that country’s phenomenal growth, based as it is on large-scale public ownership and central planning, as well as the utilisation of foreign capital and technology.

    As the World Development Report of 2008 confirmed, China’s reduction of poverty has been “massive and unprecedented” in human history.

    Between 1981 and 2001 around 500 million people – almost half the population – were pulled out of poverty.

    International Workers Day is likely to be a stormier affair in Russia. Communist protesters have clashed with security forces recently in demonstrations over prices and incomes.

    The struggle for independent and militant trade unionism is taking place in very difficult conditions there against the manoeuvring of the Putin regime and its client monopoly capitalists.

    Russian workers and their unions need our support and solidarity, but so too do the communists of Latvia and Lithuania – where their parties are banned – and the socialists and Communists of Poland and Hungary, who are banned by law from displaying the red star or the hammer and sickle.

    This should remind us of how much the world has changed in just one generation.

    The SACP has confounded those who hoped to turn the ANC into a neoliberal party led by a new black bourgeoisie with the communists and trade unions marginalised. Instead, the ANC has been renewed and its communist component strengthened.

    The government of Jacob Zuma now has to show the growing number of unemployed and disaffected youth that its new economic and social strategy will fight poverty, thereby undermining the appeal of black nationalist demagogues.

    South Africa has abolished its nuclear weapons, but the rest of the world has yet to receive the “peace dividend” promised by US President Bush at the end of the cold war.

    The need to rid the world of weapons of mass murder, to use precious resources to combat poverty and global warming instead, will be a theme of May Day throughout the world today.

    But two others should be added.

    First, the state terrorism inflicted on the Palestinian people – particularly those in Gaza – is a stain on Israel and humanity that can be tolerated no longer.

    National and international sanctions must be imposed on Israel until real progress is made towards the two-state settlement demanded by countless United Nations resolutions. Free Marwan Barghouti and all the other political prisoners in Israeli jails!

    Secondly, we have to renew our determination to defend jobs, wages, pensions, benefits and public services against the ruling class offensive now underway in Britain and across western Europe.

    After the biggest bail-out of an economic system in history, the slogan for International Workers Day in 2010 could be: “Capitalism – we can’t afford it!”

    পুরো ফিচার পড়ুন এখানে

  2. মাসুদ করিম - ১ মে ২০১০ (১২:১৪ অপরাহ্ণ)

    ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র পঞ্চাশ বছর।

    উপন্যাসের বদলে বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে বুর্জোয়া শ্রেণী চলচ্চিত্রকে সুবিধাজনক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল, যার প্রামাণ্য অস্তিত্ব হল হলিউড। আর এই ষড়যন্ত্রকে যারা খারিজ করার চেষ্টা করেছেন তাদের জন্য চলচ্চিত্র নেহাতই বিনোদনের মাত্রা পার হয়ে শিল্পের আভিজাত্য পেয়েছে। ঋত্বিক এমন একজন। নীতা আমাদের সকলের হয়ে যন্ত্রণা ভোগ করে, প্রতিবাদ জানায়।

    বিস্তারিত পড়ুন

  3. মাসুদ করিম - ২ মে ২০১০ (৭:০৫ অপরাহ্ণ)

    কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল(মাওবাদী)-এর ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে সারা নেপাল অচল হয়ে গেছে। নেপালের সংবিধান প্রণয়নের কাজ অনেক দিন ধরে বাধাগ্রস্ত। প্রথমে প্রচন্ডের পদত্যাগ পরে কৈরালার মৃত্যু, সব মিলে সিদ্ধান্তহীনতা নেপালের মানুষের ভবিষ্যতকে বিরাট প্রশ্নের সম্মুখীন করে রেখেছে। ২৮ মে ২০১০, সংবিধান পাসের শেষ সময়, কিন্তু এর মধ্যে আর সংবিধান সংসদে পাস হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। এখানে পড়ুন সংবিধান কমিটির চেয়ারম্যান নীলাম্বর আচার্য্যের সাক্ষাৎকার। মাধব কুমার নেপালের পদত্যাগের দাবী জোরালো হলেও, তিনি এই ক্রান্তিলগ্নে পদত্যাগ করতে নারাজ। অন্যদিকে মাওবাদী ভাইস চেয়ারম্যান বাবুরাম ভট্টরাই বলছেন, পুতুল সরকার (মাধব কুমার নেপালের সরকার) পদত্যাগ করতে বাধ্য। এ সপ্তাহের মধ্যে কোনো সমাধান হয়তো আসবে। আমাদের আশা নেপাল যেন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পায়। এবং এর দায় চীন-ভারত দুই বৃহৎ প্রতিবেশীর ওপরই বর্তায়। নেপালের অশান্তি উপমহাদেশের জন্য মোটেই ভাল হবে না।

  4. মাসুদ করিম - ৩ মে ২০১০ (২:১৪ অপরাহ্ণ)

    ঐতিহ্য ভাগ হলো এ জন্য দুঃখবোধের কথা আগেই বলেছি। তবে এই ভেবে আমরা আশ্বস্ত হব যে, এই ভাগাভাগির মধ্য থেকে ইত্তেফাক বেঁচে গেল। অন্যথায় এর পরিণতি খুব একটা মঙ্গলজনক নাও হতে পারত। আগের কথা বাদই দিলাম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন উপদেষ্টা হওয়ার পর একক কর্তৃত্বের কারণে ইত্তেফাকে নানা সংকট ঘনীভূত হয়েছিল। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সপরিবারে দেশত্যাগ, নতুন সম্পাদক নিয়োগ এবং মইনুল পরিবারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার রন্ধ্রপথে ইত্তেফাকে নানা সমস্যার সূত্রপাত হয়। সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা তখন অকারণে ও অপ্রয়োজনে ইত্তেফাকের গৌরবের সিঁড়ি তৈরিতে যারা মেধা ও শ্রম দিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই চাকরিচ্যুত হয়েছেন। যারা রয়েছেন, তাদের আর্থিক সুবিধা সংকুচিত হয়েছে। ইত্তেফাক কর্মীরা অনশন করেছেন, রাজপথে মিছিল করেছেন। চাকরিচ্যুত কিংবা দুঃসহ গ্গ্নানি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের, আমার সেইসব পুরনো বল্পুব্দর চোখে আমি অশ্রু দেখেছি। তাদের দীর্ঘশ্বাস ইত্তেফাকের বর্তমান বিচলিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অবসান ও গণতান্ত্রিক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের প্রেক্ষাপটে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর প্রত্যাবর্তনের পর চাকরিচ্যুতরা চাকরি ফিরে পেলেন, কর্তিত আর্থিক সুবিধা প্রত্যর্পণ করা হলো। বৈরী বাস্তবতার কারণে মইনুল হোসেন পরিবারের সদস্যরা ১ নম্বর রামকৃষ্ণ মিশন রোডে আসা থেকে বিরত থাকলেন। মামলা-মোকদ্দমা ও আইনি জটিলতার ফলে ইত্তেফাকের প্রিন্টার্স লাইনে সম্পাদক হিসেবে রাহাত খান রয়ে গেছেন। অবশ্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর প্রত্যাবর্তনের পর থেকে রাহাত খান ইত্তেফাক ভবনে আর যাচ্ছেন না। খুব শিগগিরই ইত্তেফাকের প্রিন্টার্স লাইন থেকে এই নামগুলো মুছে যাবে।
    সংকটে যারা ইত্তেফাককে বাঁচিয়ে রেখেছেন, তাদের অনেকেই আমার অন্তরঙ্গ সুহৃদ। তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে যে, দুর্ভাবনার একটি গুরুভার তাদের বুক থেকে নেমে যাচ্ছে। নতুন যুগের সংবাদপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ইত্তেফাকের ক্রমশ পিছিয়ে পড়ার যে হতাশা তাদের গ্রাস করছিল তা কেটে যেতে শুরু করেছে। তাদের বিশ্বাস ইত্তেফাক নতুন ধারার সংবাদপত্রের মিছিলে নিজেকে যুক্ত করে হারানো ঐতিহ্য আবার পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হবে।
    বদমেজাজি বলব না। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন একটু রাগী তো বটেই, যুক্তির চেয়ে আবেগেই তার অধিক আস্থা। একটি প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কোনো সংবাদপত্রের অগ্রযাত্রা শুধু মালিকের আদেশ-নির্দেশেই নিশ্চিত হয় না_ এ সত্য বুঝতে চান না তিনি। ইত্তেফাকের বিশাল সাফল্যের পেছনে রয়েছে এর মালিকদের পরিকল্পনা-ব্যবস্থাপনা ও কর্মীদের নিরলস শ্রম এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি একাত্মবোধ। এই সত্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বোঝেন। আর বোঝেন বলেই তিনি ইত্তেফাকের সৌভাগ্যের একটি বড় অংশ কর্মীদের দিতে কখনোই আপত্তি তোলেন না। এ কারণেই ইত্তেফাক কর্মীদের সঙ্গে তার আস্থার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন অবশ্য মনে করেন, মঞ্জু নিজের দলে ভেড়ানোর জন্যই কর্মীদের ‘ঘুষ’ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছেন।

    গোলাম সারওয়ার, নিঃসন্দেহে ইত্তেফাক নিয়ে — ইত্তেফাকের ভেতরকার বিষয়আশয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি জানেন, পড়ুন সমকালে তার লেখা ‘ ইত্তেফাক মঞ্জুর : মইনুলের ১০ কোটি টাকা ও ভবন’

  5. মাসুদ করিম - ৫ মে ২০১০ (১০:০৪ পূর্বাহ্ণ)

    আগামীকাল ইংল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচন নিয়ে বৃটিশ অবৃটিশ কিছু পত্রিকার কিছু লেখা :

    ভারতীয় পত্রিকা ‘দি হিন্দু’তে লিখছেন হাসান সুরুর : U.K. poll headed for the unknown

    Barely hours before polling opens in Britain’s general election on Thursday there is still no clear winner in sight and new opinion polls every few hours are adding to the confusion and tension. Although the smart money is still on a hung Parliament with millions of people apparently still undecided, in the past 24 hours the polls have started to tilt in favour of the Tories giving them a wafer-thin outright majority. Moreover, anecdotal evidence suggests that historically potential Tory supporters are reluctant to show their hands. Jemima Khan, former wife of Pakistan cricketer Imran Khan, believes that people are still “embarrassed” to declare open support for Tories.

    “Maybe reading horoscopes is a bit like voting Tory. People clearly do it but no one likes to admit it,” she wrote on Twitter.

    But whatever the outcome, the election is already being talked about as a seminal event which could change British politics for ever — the way the rise of Thatcherism did in the 1970s and the birth of New Labour in 1990s.

    ব্রিটিশ পত্রিকা ‘মর্নিং স্টার’এ লিখছেন রিচার্ড বাগলে : What would a Tory Britain look like?

    Inside Cameron’s blue book…
    Public sector
    • Freeze public sector pay affecting 5 million people and their families

    • Drag pensions down to the level of people employed in the private sector

    • “Increase diversity of provision” to “raise public-sector productivity” – ie hand control of services to private business and the City

    • Enable corporations to make a profit running public services under the guise of “co-operatives” and “mutualisation”

    • Social enterprises, charities and voluntary groups to be handed a “leading role” in delivering public services

    Tax
    • Reward business corporation tax cuts

    • Freeze council tax for two years. While by no means a progressive tax, a freeze forces savings to come from council services, leading to privatisation and cuts.

    • No revaluation of council tax values. A revaluation would place a fairer share of the tax burden onto wealthier people in areas which have become more valuable since properties were last assessed in 1991.

    • Axe planned National Insurance rise in 2011 – a relatively progressive tax that divides the burden between individual taxpayers earning over £20,000 and businesses

    • Reward the rich by raising inheritance tax threshold to £1million.

    • Reward the City by returning, “when resources allow,” the tax credit on share dividends paid into pension funds – inflating the stock market

    • Tamper with “controlled foreign companies” rules which crack down on tax avoidance by businesses with a British interest

    Trade unions
    • Proud of “industrial relations laws” introduced by last Conservative government. Threat to “build on them if necessary.”

    • Seek cross-party consensus to cap donations to political parties from unions

    Welfare state
    • All current claimants for incapacity benefit reassessed. Those found “fit” to be transferred to lower jobseeker’s allowance.

    • Jobseeker’s allowance stripped from people who refuse to enter new cheap labour scheme Work Programme.

    Families
    • Punish single parents and unmarried partners by raising benefits for married couples

    • Hand corporations a bigger role in running the nursery sector

    • Cut access to Sure Start scheme that helps parents to care for their children. Focus service on “disadvantaged and dysfunctional” families.

    Youth
    • National Citizen Service for 16-year-olds

    • Retain ASBOs.

    • Allow police to hand out grounding orders and other instant sanctions

    • Slash rules governing on-the-spot police stop and search

    • Privateers to run youth justice on a payment by results basis

    Unemployment
    • All unemployed people entered into cheap labour Work Programme scheme run by the private and “voluntary” sector on a “payment by results” basis.

    • People who refuse “reasonable” job offers face losing benefits for three years

    Prisons
    • Private sector to be handed control of rehabilitation on a payment by results basis

    • Expand private sector control of prisons as part of its crusade against democratic accountability

    Banking
    • Sell off the publicly owned stakes in banks cheaply, mimicking the cut-price flogging off of public assets such as electricity, gas and water under the last Tory government which handed literally instant profits to the City at a huge loss to taxpayers

    Health
    • Offer management at every level of the NHS to profit-making private businesses

    • Hand the private sector a growing share of income from NHS medical work

    • Encourage patients to exercise the “choice” to choose any provider, draining funding from the NHS and passing it to private health firms

    • Personal health records as in the US designed to be accessed by a range of providers

    • GPs (increasingly run by private health firms) to be given greater power over commissioning and budgets

    • All NHS “providers” to become foundation trusts

    Education
    • Invite profit-making private sector to take over schools system along the US model

    • Remove colleges from democratic control

    • Keep SATs (currently opposed by most education professionals) and make league tables “more rigorous”

    Pensions
    • Increase in retirement age to 66 by 2016 for men, 2020 for women

    • “Address growing disparity” between public sector and private pensions – meaning cut the public sector ones

    International
    • Renew Trident nuclear WMD system

    • Commitment to Nato alliance as “the ultimate guarantor” of Europe

    • Political alliance with unionists in Northern Ireland, threatening peace there

    • “Stand for open markets” and strong relationship with US

    ব্রিটিশ পত্রিকা ‘গার্ডিয়ান’এ লিখছেন মাইকেল হোয়াইট : A history of hung parliaments

    The party leaders are reluctant to talk about what they might do if none of them wins a clear majority on Thursday. But, as keen students of political history, they know the half-forgotten secrets of coalitions, minority governments, pacts and haggling over electoral reform that may come into play on Friday.

    Such dilemmas were common in the 19th century, but 20th-century Britain faced them at least once a generation. After the 1923 general election the party with the most seats did not form the new government. In 1930, parliament came close to introducing the very voting reform which Gordon Brown has just offered for a referendum 80 years later.

    The best-remembered decade of hung parliaments and backroom deals is the 70s. In February 1974, the defeated Conservative PM, Edward Heath, tried to lure the then-Liberals into a coalition. He failed, but three years later, Labour’s prime minister, Jim Callaghan, negotiated an informal understanding, known as the Lib-Lab pact, with David Steel. It helped keep his minority party in power for two years.

    Whatever they say before polling day, both David Cameron and Gordon Brown may try such tactics again this time. On both occasions before, Liberal third-party demands for electoral reform proved crucial to the haggling.

    ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দি ইনডিপেন্ডেন্ট’এর লিড : This historic opportunity must not be missed

    Let us be clear. We do not argue that Labour deserves public support on the basis of its record in power. Gordon Brown is due immense credit for the manner in which he handled the 2008 financial crisis. And Labour can point to some worthy and lasting achievements, from political accord in Northern Ireland, to the introductions of civil partnerships and the minimum wage. But the blind support for the disastrous US-led invasion of Iraq in 2003 and the dishonest way in which the case for that intervention was made drained the party of moral authority. And while Labour’s efforts to reform our public services and cut our national carbon emissions have been a disappointment, its record on civil liberties has been a disgrace. This feels like an exhausted administration.

    We also recognise that Labour’s decision to pick up the banner of electoral reform has all the moral conviction of a sinner recanting on his deathbed. And the electoral reform it has floated – the alternative vote – is a non-proportional sham. And yet Labour’s position on this key matter, its commitment to hold a referendum on moving to a new voting system, is a thousand times better than the Conservatives’ flat rejection of the case for any change. For this reason alone, Labour, not the Conservative Party, would make a better coalition partner for the Liberal Democrats in the event of a hung parliament.

    Electoral reform is a valuable end in itself. A party’s representation in Parliament should represent its level of support in the country. The way to convince the public that their vote truly counts is to make it a reality. There is also reason to believe that electoral reform would open the door to a new era of self-confident, progressive politics in a range of areas – from Europe, to the economy, to wider constitutional reform. That is why this newspaper suggests that, if voters do not want this inspiring movement for radical political change to fizzle out once this election campaign is over, they should mark their ballot tomorrow with a larger picture in mind than simply the merits of the respective parties.

    The Liberal Democrats are certainly not without their faults. But they are longstanding and convincing champions of civil liberties, sound economics, international co-operation on the great global challenges and, of course, fundamental electoral reform. These are all principles that this newspaper has long held dear. That is why we argue that there is a strong case for progressively minded voters to lend their support to the Liberal Democrats wherever there is a clear opportunity for that party to win.

    Yet in those constituencies where there is likely to be a close fight between Labour and the Conservatives, there is an equally strong case for voters to cast their ballot to keep out a Tory party which incarnates this discredited “business as usual” approach to politics.

    A great prize could await Britain this week: a change that could reinvigorate and re-legitimise our politics in the same manner as the great Reform Acts of previous centuries. It is that prize, above all, that we would urge all our readers to keep at the forefront of their minds when they go to the polls tomorrow. It is time to use our rotten voting system (for what we fervently hope will be the last occasion) to change the system – and deliver a new politics.

  6. মাসুদ করিম - ৫ মে ২০১০ (১০:১৪ পূর্বাহ্ণ)

    ধলঘাটের দক্ষিণ সমুরা এলাকায় ১৯১১ সালের ৫ মে জন্মগ্রহণ করেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। প্রীতিলতার বাবা জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার, মা প্রতিভাময়ী দেবী। বাবা মিউনিসিপ্যাল অফিসের প্রধান কেরানি ছিলেন। পাঁচ পুত্র-কন্যা নিয়ে থাকতেন চট্টগ্রাম শহরের আসকার দীঘি এলাকায়। প্রীতিলতা লেখাপড়া করেছেন ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ঢাকার ইডেন কলেজ ও কলকাতার বেথুন কলেজে। বিপ্লবী পূর্ণেন্দু দস্তিদারের সহায়তায় ১৯২৮ সালে মাস্টারদার বিপ্লবী দলের সদস্য হন প্রীতিলতা। দলে ঢোকার শর্ত হলো, ‘প্রয়োজন হইলে দেশের মুক্তিসংগ্রামে আমার সর্বস্ব, আমার জীবন পর্যন্ত আমি ত্যাগ করিতে প্রস্তুত।’
    চট্টগ্রামের নন্দনকাননে অপর্ণাচরণ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষিকা প্রীতিলতা মাস্টারদার সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন ধলঘাটের সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে। সেখানে ব্রিটিশ পুলিশ ও বিপ্লবীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেটি পরে ধলঘাট যুদ্ধ হিসেবে খ্যাত হয়। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতার নেতৃত্বে পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন বিপ্লবীরা, যে ক্লাবের বাইরে লেখা থাকত ‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ’। ওই অভিযানে শত্রুর গুলিতে আহত হন প্রীতিলতা। পরে বিষপান করে তিনি আত্মাহুতি দেন।
    দক্ষিণ সমুরায় প্রীতিলতার ভিটেবাড়িতে এখন বাস করেন শোভারানী দাশের পরিবার। তাঁরা সরকারের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়েছেন। বসতভিটার পশ্চিম দিকে প্রীতিলতা ও অর্ধেন্দু দস্তিদার স্মরণে ১৯৭০ সালে একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করেন বিপ্লবী পূর্ণেন্দু দস্তিদার।
    ধলঘাটের আরেক মহীয়সী নারীর নাম সাবিত্রী দেবী। যে দুজনকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ব্রিটিশ সরকার, সেই বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন ও নির্মল সেন এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ কয়েকজন বিপ্লবীকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি। পাশের কুখ্যাত ধলঘাট ক্যাম্প থেকে সাবিত্রীর বাড়িতে হানা দিয়েছিল ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন ক্যামেরন ও তাঁর সিপাহিরা। ব্রিটিশ পুলিশ আর বিপ্লবীদের সেই যুদ্ধে শহীদ হন বিপ্লবী নির্মল সেন আর অপূর্ব সেন। নির্মলের গুলিতে প্রাণ যায় ক্যামেরনের। ধলঘাট যুদ্ধ হয়েছিল ১৯৩২ সালের ১৩ জুন।
    ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের মামলায় বন্দীদের মুক্তি দেন। বিপ্লবী নেতা অম্বিকা চক্রবর্তী, গণেশ ঘোষ ও অনন্ত সিংহ চট্টগ্রামে ফিরে আসার পর ছুটে এসেছিলেন ধলঘাটের সেই সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে। শ্রদ্ধা জানান শহীদ নির্মল সেন ও অপূর্ব সেনের স্মৃতির প্রতি।
    ফিরে আসা বিপ্লবীদের উদ্দেশে সাবিত্রী তখন সজল নয়নে ধলঘাট সংঘর্ষের কথা সবিস্তারে বলেন, ‘আমি জানি, তোমরা যখন ফিরে এসেছ, এর প্রতিশোধ তোমরা নেবে।’

    বিস্তারিত পড়ুন

  7. মাসুদ করিম - ৫ মে ২০১০ (১০:৩০ অপরাহ্ণ)

    কয়েক দিন আগে পটিয়ার বড়উঠানে উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটছিলাম। এখানেই কোরিয়ান ইপিজেড নামে ইয়ংওয়ানের প্রায় ৫০০ একর জমি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জন্য নেয়া আছে। কিন্তু ১৪/১৫ বছর ধরে শুনলেও এখনো বাস্তবে এর কিছুই আমরা দেখতে পাইনি। কেন কিছু হচ্ছে না তাও আমরা জানি না। আর এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন এখন আর ততো কাজের কিছুও নয়। ভাবছিলাম এরকম জায়গায় সরকারি, বেসরকারি বা হালের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিতে ‘সৌরবিদ্যুৎ’ প্রকল্পও তো হতে পারে। এমন একটি প্রকল্পের কথা শুনেছিলাম কয়েক বছর আগে কলকাতায়, পুরুলিয়ায় সৌরশক্তির পার্ক হবে, যদিও এর সম্বন্ধে এখনো বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি, কিন্তু আজকে গণশক্তিতে এ ব্যাপারে একটা খবর পেলাম। পশ্চিমবাংলায় সৌরশক্তিকে ঘিরে অনেক কাজ হচ্ছে, একই ভাষার কারণে আমরা কিন্তু খুব সহজেই এখানে প্রযুক্তির আদানপ্রদান করে দক্ষিণ-পূর্ব উপমহাদেশে বেশ শক্তিশালী সৌরশক্তি বলয় গড়ে তুলতে পারি।

  8. মোহাম্মদ মুনিম - ৬ মে ২০১০ (১০:২৭ পূর্বাহ্ণ)

    নরওয়ের সর্বাধুনিক কারাগার নিয়ে একটি লিঙ্ক

  9. মাসুদ করিম - ৯ মে ২০১০ (১০:২৪ পূর্বাহ্ণ)

    রেকর্ড মুছে ফেলার জন্যই হয়তো, আমরা সত্যিই এসব শুনতে শুনতে অভ্যস্ত

    A senior army source told TOI, “We were looking for the details of Mukti Bahini camps. We wanted to know where all were the camps, who were in charge etc. When those files were not available, the eastern army command launched a hunt for the records of the war. That is when we realized that the entire records are missing.’’

    Lt Gen (retd) JFR Jacob, who was chief of staff of the eastern command during the war and later its head, admitted the records were missing, when asked if this were true. ‘‘When I took over as Eastern Army commander in August 1974 I asked to see the records. I was told that they have been shredded,’’ he told TOI. He refused to discuss who ordered the destruction of the records.

    পড়ুন এখানে Truth lost? Most military records of Bangladesh war missing

    • মাসুদ করিম - ১১ মে ২০১০ (৯:২২ পূর্বাহ্ণ)

      রেকর্ড মুছে ফেলার ওই খবরের আপডেট আজকের টাইমস অফ ইন্ডিয়ায়, ভারতের প্রধান তথ্য কমিশনার বলছেন ১৯৭১-এর ফাইল ধ্বংস করা অপরাধমূলক কাজ।

      Reacting to the TOI report that the entire records of the 1971 war with Eastern Army Command were destroyed, Habibullah said the “law is quite clear” that all records “older than 20 years must be disclosed, except under specific circumstances”. The destruction of records, unless it was permitted under law, was a criminal act, he pointed out. “There are rules allowing for destruction,” but then details of those destructions must be available with the government, he said.

      Kuldip Nayar, veteran journalist who is fighting an ongoing battle for disclosure of the Henderson Brooks report on India’s debacle in the 1962 war with China, said a probe must be held into the entire episode. “We must know why were they destroyed, and for what purpose,” he said.

      Nayar also suggested that the government must immediately seek Dhaka’s assistance to reconstruct the entire story, and also draw on the records of veterans of the 1971 war. “It is a very important story,” Nayar said.

      He said the government must also proactively disclose whatever records are available of the battles fought by India since 1947. “The government is unnecessarily sitting over papers, be it 1948, 1962, 1965 or the 1971 war,” Nayar said. “Even the transfer of power (in 1947) papers are not available with the National Archives,” he pointed out.

      লিন্ক এখানে : Destruction of 1971 files criminal act, says CIC

      ওই খবরে এক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তার বক্তব্য

      “I am not aware that the records have been destroyed, I was just a captain then. But if it has been done, it must have been under instruction from the government,’’ says a retired lieutenant-general who has held a senior staff position in the Eastern Command headquarters. ‘‘It is an open secret that the Indian Army had gone inside Bangladesh much before the war had started officially. There is no reason for the army to preserve such records.”

      লিন্ক এখানে : ‘Files would have revealed Army’s role’

      • মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১০ (৮:৫১ পূর্বাহ্ণ)

        আরো আপডেট টাইমস অফ ইন্ডিয়ায়। এবার দেখা গেল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সাবমেরিন পিএনএস গাজি ডুবিয়ে দেয়ার ভারতীয় নৌবাহিনীর কীর্তির রেকর্ডও মুছে ফেলা হয়েছে।

        As a debate rages over a TOI report on the destruction of all records of the 1971 Bangladesh war at the Eastern Army Command headquarters in Kolkata, it transpires that naval authorities also destroyed records of the sinking of Ghazi.

        The troubling finding has been thrown up by a trail of communications among the naval brass. Pakistani submarine PNS Ghazi, regarded as a major threat to India’s plans to use its naval superiority, sank around midnight of December 3, 1971 off Visakhapatnam, killing all 92 on board in the initial days of the war between India and Pakistan. Indian Navy claims the submarine was destroyed by depth charges fired by its ship INS Rajput. Pakistani authorities say the submarine sank because of either an internal explosion or accidental blast of mines that the submarine itself was laying around Vizag harbour.

        Over the years, in the 1990s, as Vice Admiral Hiranandani sat down to write the official history of Navy, he made several efforts to get the Ghazi documents, records show. In one of his letters to the then chief of eastern naval command, Vice Admiral P S Das, he sought the track chart of the Ghazi, the official report of the diving operations on the Ghazi from December 1971 onwards and any other papers related to Ghazi. But none of it was available for the official historian of the Navy.

        A retired Navy officer who saw action in 1971 said the destruction of the Ghazi papers and those of Army in Kolkata are all fitting into a larger trend, many of them suspected about Indian war history, of deliberate falsification in many instances. It is high time the real history of those past actions were revealed. “We have enough heroes,” he said. “In the fog of war, many myths and false heroes may have been created and many honest ones left unsung,” he admitted.

        লিন্ক এখানে : Now, no record of sinking Pakistani submarine in 1971

    • মাসুদ করিম - ২৩ মে ২০১০ (৪:০৩ অপরাহ্ণ)

      এখবর নিয়ে হারুন হাবীব আজকের সমকালে লিখছেন

      হতবাক, বিস্মিত হওয়ার মতোই খবর! বহুলালোচিত সংবাদটির শিরোনাম : ‘ট্রুথ লস্ট? মোস্ট মিলিটারি রেকর্ডস অব বাংলাদেশ ওয়ার মিসিং’।
      ভারতের অন্যতম শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া ঘটনাটি জানিয়েছে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। আমাদের শীর্ষ দৈনিকগুলোও খবরটি ছেপেছে গুরুত্বের সঙ্গে। এ ধরনের খবরে বাংলাদেশের আগ্রহ স্বভাবতই বেশি হওয়ার কথা। কারণ খবরটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের দলিল সংক্রান্ত। খবরটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এ কারণে যে, এতে বলা হয়েছে : ভারতে রক্ষিত দলিলগুলো ‘সুপরিকল্পিতভাবে’ ধ্বংস করা হয়েছে এবং খবরটি কয়েক যুগ ধরে গোপন রাখা হয়েছে।
      আমি ইন্টারনেট এডিশনে গিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরটি পড়েছি। এ সংক্রান্ত কিছু মন্তব্যও পড়েছি ভারত ও বাংলাদেশের নানা মহলের। তখন থেকেই ভাবছিলাম কিছু একটা লিখব। কিন্তু লেখাটা আগে হয়ে ওঠেনি।
      বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ ও ভারত_ দু’দেশেরই ইতিহাস বিজড়িত ঘটনা। এ যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, যদিও এ যুদ্ধ ছিল আমাদের, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতার, তবু আমাদের পড়শি দেশ ভারত এ যুদ্ধে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হতে বাধ্য হয়েছিল, এমনকি এ পর্যায়ে যৌথ সামরিক কমান্ড গঠন করে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামনাসামনি লড়েছিল। এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে; কিন্তু এর দাহন ছড়িয়েছে রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে। শুধু তা-ই নয়, আমাদের সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলোতে একদিকে যেমন গড়ে উঠেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প, একই সঙ্গে ভারতভূমি হয়ে উঠেছিল এক কোটি বাংলাভাষী শরণার্থীর নয় মাসের আশ্রয়স্থল। ২৫ মার্চের গণহত্যা শুরুর পর এই শরণার্থীরা হানাদার পাকিস্তান বাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের নির্বিচার আক্রমণ থেকে জীবন বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ভারত সরকার বিপন্ন মানবতা রক্ষায় সীমান্ত পর্যন্ত খুলে দিয়েছিল।
      কাজেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ভারতের নাম অবিচ্ছেদ্য। শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতীয় সরকার, দলমত নির্বিশেষে ভারতীয় গণমানুষ এবং একইসঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনী, সরকারি ও বেসরকারি মহল এমনভাবেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন যে, সে ইতিহাস থেকে ভারতকে দূরে রাখা সম্ভব নয়। কাজেই ভারতের মাটিতে রক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের দলিল ধ্বংসের খবরটি প্রায় সব মহলেই আলোচিত হয়েছে, কেউ উদ্বিগ্ন বা ব্যথিত হয়েছেন, কেউ আবার এর সত্যতা যাচাইয়ের দাবি তুলেছেন।

      ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এক নয়। একে এক করে দেখারও সুযোগ নেই। রণকৌশল নিতান্তই সামরিক ব্যাপার। এসবের গোপনীয়তা কার পক্ষে কতটা প্রয়োজন, তা নির্ধারণের ভার সংশ্লিষ্টদের। আমরা উদ্বিগ্ন কেবল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দলিল নিয়ে এবং এমন সব দলিল যার সঙ্গে বাংলাদেশ জড়িত। সে দলিল যদি খোয়া গিয়ে থাকে বা ধ্বংস করা হয়ে থাকে তা হবে দুঃখজনক। কাজেই ব্যাপারটি শুধু সংবাদপত্রের খবরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।
      বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের হলেও ভারতের সঙ্গে সামরিক দিক থেকে ঐতিহাসিক কারণেই তা যৌথভাবে রচিত। একাত্তর দুই পড়শির সম্পর্কের অমোচনীয় অধ্যায়। কাজেই শুধু বাংলাদেশের স্বার্থে নয়, ভারতের প্রয়োজনেও ১৯৭১-এর যাবতীয় প্রয়োজনীয় দলিলপত্র রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত। তবে দলিলগুলো সত্যি সত্যি খোয়া গেছে কি-না তা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত হওয়া জরুরি আগে।

      পুরো লেখাটি পড়ুন এখানে

    • মাসুদ করিম - ২৩ মে ২০১০ (৪:১৬ অপরাহ্ণ)

      এবিষয়ে ‘দি এশিয়ান এজ’-এ শ্রীনাথ রাঘবন লিখছেন

      Recent revelations about the destruction of the Indian Army’s records pertaining to the 1971 war are deeply disconcerting. The Army’s Eastern Command — the key operational formation involved in those momentous events — had apparently shredded the documentation pertaining to various aspects of the conflict. More troubling is the fact that the Army itself has remained somnolent for over 35 years, and has unearthed this decision quite recently. It is not yet clear who ordered this act of vandalism, and why. But the episode points to the Army’s anaemic attitude towards its own history.

      As a consequence, the Indian military is turning increasingly ahistorical. To be sure, books on military history by retired or serving officers routinely pour of the presses. But the quality of the bulk of these is a good index of the deplorable state of historical studies in the military. It is perhaps unsurprising that such an institution permitted large-scale destruction of records. But it should certainly be unacceptable. The MoD should look into the matter and make public all the facts. More importantly, the military should undertake a critical examination of its attitude towards history. This will be an essential prelude to any meaningful engagement with its own past.

      বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  10. মাসুদ করিম - ১০ মে ২০১০ (৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ)

    টিপু সুলতান ও মতিউর রহমান বাংলাদেশের সংবাদ জগতের এক অসম জুটি এবং এক বিশেষ ক্ষমতাচক্রের ঘনিষ্ঠ সহচর। কিন্তু সেটা কি এতদূর পর্যন্ত? যা আজ শিরোনাম হয়েছে ‘কালের কণ্ঠে’ বিএনপি নেতা পিন্টুর জবানবন্দি থেকে। পড়ুন:

    ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা : পিন্টুর জবানবন্দি
    হোতা তাজউদ্দিনকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন মতিউর রহমান!
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    বর্বরোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম হোতা বলে চিহ্নিত জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিনকে যে র‌্যাব খুঁজছে, তা তাকে আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও একই পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতান। তাজউদ্দিনকে তাঁরা ওই তথ্য জানান দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, বিএনপিকে সহায়তা করার জন্য তাজউদ্দিনকে দিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক দল করার ব্যাপারেও মতিউর রহমান তার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন।
    নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা তাজউদ্দিনের সঙ্গে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের এই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর জবানবন্দি থেকে। গত ২৯ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য কার্যবিধির ১৬১ ধারায় জবানবন্দি হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।
    আব্দুস সালাম পিন্টু জঙ্গি নেতা তাজউদ্দিনের বড় ভাই। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে পিন্টু আরো বলেছেন, মতিউর রহমান ও সাংবাদিক টিপুর সঙ্গে তাঁর ও তাঁর ভাই তাজউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁরা প্রায়ই মতিউর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতেন।
    ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিগত চারদলীয় জোট সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু এখন কারাগারে আছেন। তাই এ জবানবন্দির ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মামলার অন্যতম আসামি মাওলানা তাজউদ্দিন পলাতক। এ মামলার বর্তমান তদারকি কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ সুপার আব্দুল কাহ্হার আকন্দও পিন্টুর জবানবন্দি সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে চাননি।
    অভিযোগ সম্পর্কে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বক্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। গত শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তাঁর মোবাইল ফোনে সাতবার ফোন করা হলেও অপর প্রান্ত থেকে কেউ রিসিভ করেননি। গতকাল রবিবার মোবাইল, অফিস ও বাসায় ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল দুপুর থেকে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিকেলে প্রথম আলো অফিসে ফোন করলে সম্পাদক অফিসে আসেননি বলে টেলিফোন অপারেটর জানান। এ পর্যায়ে প্রথম আলোর ইভেন্ট ম্যানেজার সাইফুল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তাঁকে কখন পাওয়া যাবে তা ঠিক বলা যাচ্ছে না। অফিসে আসবেন কি না তা নিশ্চিত নয়। সন্ধ্যার পর চেষ্টা করেন।’
    সন্ধ্যায় মতিউর রহমানের বাসায় ফোন করা হলে একজন ফোন ধরে নিজেকে গৃহকর্মী জাহিদ পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘বাসায় কেউ নেই। স্যারসহ সবাই দুপুরে ঢাকার বাইরে গেছেন। কবে ফিরবেন তা বলে যাননি।’
    এর পর প্রথম আলোয় মতিউর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পিউস রোজারিওর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সম্পাদক সাহেব দেশের বাইরে গেছেন। কবে ফিরবেন ঠিক নেই।’ সংবাদের বিষয়বস্তু এবং প্রশ্ন সম্পর্কে পিউস জানতে চান। তাকে সেটা জানানো হলে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নগুলো উনার সম্পর্কিত বিধায় তার সঙ্গেই কথা বলতে হবে। দেখি, আপনাকে কেনো সহযোগিতা করতে পারি কি না।’ একটু পরেই পিউস এ প্রতিবেদককে ফোন ব্যাক করে আবার জানতে চান_ কার জবানবন্দিতে মতিউর রহমানের নাম এসেছে। সেটা তাকে আবার জানানো হলেও তিনি আর কোনো যোগাযোগ করেননি। মতিউর রহমানের ফোনও যথারীতি বন্ধ পাওয়া যায়।
    প্রথম আলোর রিপোর্টার টিপু সুলতানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। বরং আব্দুস সালাম পিন্টু আদৌ কোনো জবানবন্দি দিয়েছেন কি না, সেটাই সন্দেহজনক। তিনি পেশাগত প্রয়োজনে উপমন্ত্রী পিন্টুর সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। তবে পিন্টু বলেছিলেন, তাঁর ভাই তাজউদ্দিনের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই।
    টিপু সুলতান আরো বলেন, র‌্যাব বা গোয়েন্দা সংস্থা পিন্টু বা তার ভাই তাজউদ্দিনকে খুঁজছে, এ রকম কোনো তথ্য তিনি পিন্টুকে দেননি। পিন্টুর সঙ্গে তাঁর একাধিকার কথা হয়েছে এবং সবই পেশার প্রয়োজনে।
    আব্দুস সালাম পিন্টুর জবানবন্দি থেকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নেপথ্যের আরো অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই জবানবন্দি ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের খোঁজার সময় তাজউদ্দিনকে প্রথম আলোর মতিউর রহমান ও টিপ সুলতান সতর্ক করে দেওয়ার পর প্রভাবশালী একটি মহল তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। বিদেশে যাওয়ার আগে মতিউর রহমানের সঙ্গে তাজউদ্দিন একাধিকবার বৈঠক করেছে। ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে মধ্যস্থতা করেন টিপু সুলতান।
    তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অনেকের ধারণা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা ছিল সুদূরপ্রসারী। শেখ হাসিনাকে হত্যা ছাড়াও দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে ব্যাহত করে জঙ্গি মৌলবাদীদের উত্থান ঘটাতেই এই হামলা চালানো হয়। কর্মকর্তারা মনে করেন, নেপথ্য নায়কদের গ্রেপ্তার করে ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক অজানা কাহিনী বের হতে পারে।
    ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পান। কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী হামলায় প্রাণ হারান এবং কয়েক শ নেতা পঙ্গু হয়ে এখন অসহায় জীবন যাপন করছেন।
    বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বর্বরোচিত এই হামলার সঠিক তদন্ত না করে উল্টো ‘জজ মিয়া নাটক’ সাজানো হয়। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলাটির নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। জোট সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, তাঁর ভাই তাজউদ্দিন ও জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ_সিআইডি। আদালতে বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন জানান। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে মামলার অধিকতর তদন্ত করছে সিআইডি।
    গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম হোতা তাজউদ্দিন ও মুফতি হান্নান। পেছন থেকে অনেকেই মদদ দিয়েছে তাদের। ইতিমধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রভাবশালী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিএনপির আরেক প্রভাবশালী নেতা হারিছ চৌধুরী পলাতক। ২১ আগস্ট ঘটনায় তাঁরও যোগসূত্র আছে বলে সংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা। এ ছাড়া এ হামলার মাধ্যমে দেশে জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপট তৈরির একটি মহড়াও করা হয় বলে অনেকে মনে করেন।
    তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরো মনে করেন, ২১ আগস্টের মাধ্যমে তাজউদ্দিন-হান্নানদের দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করা হয়। কারণ শেখ হাসিনাকে মৌলবাদীরা তাদের চলার পথে একমাত্র হুমকি মনে করেছিল। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অপর গোষ্ঠীটির টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা ও গণতন্ত্র। ফলে উদ্দেশ্যে ভিন্নতা থাকলেও দুই পক্ষেরই টার্গেট ছিল এক। প্রথম আলো পত্রিকা ও এর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পেছনে হাত থাকার অভিযোগও আছে বিভিন্ন মহলের। জরুরি অবস্থা জারির পর দেশের শীর্ষ দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরানোর চেষ্টাও করেছিলেন তিনি।
    গোয়েন্দা পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে আব্দুস সালাম পিন্টু আরো বলেন, ‘আমার ভাইকে যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে র‌্যাব খুঁজছে, তা আমাকে প্রথমে মতিউর রহমান সাহেবের বরাত দিয়ে সাংবাদিক টিপুই জানায়। সে বলে যে, তারা তাজউদ্দিনকে সতর্ক করেছে। আমিও যেন তাকে সাবধানে থাকতে বলি।’
    গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতাকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) বিরুদ্ধে। হুজি নেতা তাজউদ্দিন পাকিস্তানে পড়ালেখা করার সময় ওই গোয়েন্দা সংস্থার সংস্পর্শে আসে। অন্যদিকে প্রথম আলোর মালিক ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। এই উলফা অনেকটা আইএসআইয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে।
    এ ছাড়া এক-এগারোর ঘটনাপ্রবাহের সময় মতিউর রহমানের নিজের লেখা কলাম এবং প্রথম আলোয় প্রকাশ হওয়া বিভিন্ন সংবাদের ভিত্তিতে সমালোচনা ওঠে যে, এক-এগারো সৃষ্টির পিছে মতিউর রহমানের ভূমিকা স্পষ্ট এবং তিনিই ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র প্রবক্তা। এসব নানা হিসাবে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগের ভিত্তি আছে বলে অনেক কর্মকর্তা মনে করেন।
    ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় অভিযুক্ত ২২ জন আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া ১৪ জন হলেন সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, তার ভাই মফজুর রহমান ওরফে অভি, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল (ঝিনাইদহ), শরিফ শহীদুল ইসলাম ওরফে বিপুল (সিলেট), মাওলানা আবু সাইদ ওরফে ডা. আবু জাফর (গফরগাঁও), জাহাঙ্গীর আলম (কুষ্টিয়া), মাওলানা আবু তাহের (ঢাকা), হোসাইন আহমেদ ওরফে তামীম (ঝিনাইদহ), মুফতি মইনউদ্দিন শেখ ওরফে জান্দাল (নড়াইল), আরিফ হাসান ওরফে সুমন (ঢাকা), রফিকুল ইসলাম গাজী ওরফে সবুজ (মাগুরা), উজ্জ্বল ওরফে রতন (ঝিনাইদহ) এবং শাহাদত উল্লাহ জুয়েল (নারায়ণগঞ্জ)।
    অভিযুক্ত পলাতক আট আসামি_মাওলানা তাজউদ্দিন, আনিসুল মুরসালিন ওরফে সুজয় (ফরিদপুর), তার ভাই মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে শাহীন, খলিলুর রহমান খলিল (মাগুরা), জাহাঙ্গীর আলম ওরফে জাহাঙ্গীর বদর (ঢাকার দোহার), মো. ইকবাল (ঝিনাইদহ), মাওলানা আবু বকর (বরিশাল) এবং মাওলানা লিটন ওরফে জোবায়ের ওরফে দেলোয়ার (গোপালগঞ্জ)।
    এদের মধ্যে যমজ ভাই মুরসালিন ও মুত্তাকীন ২০০৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়। এরা ভারতের তিহার কারাগারে আটক আছে।

  11. মোহাম্মদ মুনিম - ১১ মে ২০১০ (৪:০০ পূর্বাহ্ণ)

    এই ব্যাপারে প্রথম আলোর জবাব

    বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন গতকাল (১০ মে, ২০১০) যথাক্রমে ‘হোতা তাজউদ্দিনকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন মতিউর রহমান!’ এবং ‘প্রথম আলো সম্পাদক ও মাওলানা তাজের সম্পর্ক স্বীকার করলেন সালাম পিন্টু’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই দুই প্রতিবেদনে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও বিশেষ প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে জড়িয়ে যা কিছু ছাপা হয়েছে, তা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রথম আলো ওই মিথ্যা খবর প্রত্যাখ্যান করছে এবং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
    কালের কণ্ঠ তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ‘গত ২৯ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে (আবদুস সালাম পিন্টু) জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য কার্যবিধির ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করে।’ গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি নামে সমধিক পরিচিত। কিন্তু ২১ আগস্ট মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ)। এই মামলার সঙ্গে ডিবির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ফলে কালের কণ্ঠ-এর প্রতিবেদনের ভিত্তিই অসত্য। একই দিনে, একই বিষয়ে একই মালিকের পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর খবরে দাবি করা হয়, পিন্টু সিআইডির কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। দাবি করা তথ্যের মূল সূত্র নিয়ে তাদের এই দুই ধরনের তথ্যই প্রমাণ করে প্রতিবেদন দুটি সাজানো ও মিথ্যা।
    তবে বসুন্ধরা গ্রুপের এ দুটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরটি নিছক প্রথম আলোর বিরুদ্ধে হিংসাত্মক তৎপরতা নয়। এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
    ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার পর থেকেই এ ঘটনার তদন্তের বিষয়ে প্রথম আলো ধারাবাহিকভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ‘জজ মিয়া গল্পের’ অবতারণা করে এ মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হলে প্রথম আলোতেই প্রথম জজ মিয়ার জবানবন্দিকে আষাঢ়ে গল্প বলে আখ্যায়িত করে প্রতিবেদন এবং এ নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করা হয়। ছয় বছর ধরেই নৃশংস এই গ্রেনেড হামলার তদন্তের প্রতিটি দিক প্রথম আলো সংবাদপত্রের দায়িত্ব হিসেবে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। প্রথম আলোই অনুসন্ধান করে প্রথম প্রকাশ করেছে, এ হামলার সঙ্গে উগ্র জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ জড়িত। সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন যে এ হামলার জন্য গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল, সেটাও তদন্তের সূত্র উল্লেখ করে প্রথম প্রকাশ করে প্রথম আলো। এমনকি আবদুস সালাম পিন্টুর সরকারি বাসায় হামলার পরিকল্পনায় জঙ্গিরা বৈঠক করেছিল, সে খবরও প্রথম আলো সবার আগে প্রকাশ করে।
    গত ছয় বছরে বিভিন্ন সময়ে ২১ আগস্ট মামলাটির তদন্ত নিয়ে অনেক টানাহেঁচড়া হয়েছে। যতবারই তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, প্রতিবারই দায়িত্বশীল সংবাদপত্র হিসেবে প্রথম আলো তা ফাঁস করেছে। প্রথম আলো সম্পাদক মন্তব্য প্রতিবেদন লিখে প্রকৃত আসামিদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন এবং তদন্তের নামে জোট সরকারের প্রহসনের নিন্দা করেছেন।
    গতকাল বসুন্ধরা গ্রুপের দুটি পত্রিকায় যে বানোয়াট খবর প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করার আরেকটি অপচেষ্টা, চক্রান্ত। কারণ এ মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত লাভবান হবে উগ্রপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী ও তাদের পৃষ্ঠপোষক মহলগুলো। এই গোষ্ঠীটি এ পর্যন্ত তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম আলোকে বড় বাধা মনে করে আসছে। প্রথম আলোকে আঘাত করে মূলত ওই অপশক্তিকে লাভবান করার জন্য বসুন্ধরার মালিকানাধীন পত্রিকা দুটি একযোগে বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যে অপশক্তি গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণ নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল, এটা তাদের রক্ষার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
    বানোয়াট ওই প্রতিবেদনের দাবি মতে, মাওলানা তাজউদ্দিনের সঙ্গে প্রথম আলো কার্যালয়ে কখনো কারও বৈঠক হয়নি। আবদুস সালাম পিন্টু ও তাজউদ্দিনের সঙ্গে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বা সাংবাদিক টিপু সুলতানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দাবিও মনগড়া, কল্পনাপ্রসূত। ‘তাজউদ্দিন টিপুর মাধ্যমে প্রায় মতিউর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করতো’—তথাকথিত জবানবন্দির বরাতে দেওয়া ওই বিবরণ নির্জলা মিথ্যা ও বানোয়াট। পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে টিপু সুলতান বিভিন্ন সময়ে একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় অভিযুক্ত আবদুস সালাম পিন্টু ও তাজউদ্দিনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরির সময় সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী তাঁদের বক্তব্য নিয়েছেন। যা প্রথম আলোতে যথারীতি ছাপাও হয়েছে। আবদুস সালাম পিন্টু কিংবা তাজউদ্দিনের প্রথম আলো কার্যালয়ে আসার প্রশ্নই আসে না। প্রথম আলো কার্যালয় কিংবা বাইরে অন্য কোথাও কখনোই মতিউর রহমানের সঙ্গে তাঁদের কোনো সাক্ষাৎ হয়নি, কিংবা কোনো মাধ্যমে কখনো কোনো কথাও হয়নি।
    দুই পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিএনপিকে সহায়তা দিতে একটি রাজনৈতিক দল গঠন, ডিজিএফআইয়ের মদদ এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় বিষয়ে তাজউদ্দিনকে সতর্ক করে দেওয়ার কথাও সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন।
    প্রথম আলোর ওপর বসুন্ধরা গ্রুপের আঘাত এই প্রথম নয়। তাদের মালিকানায় প্রকাশিত পত্রিকা দুটি শুরু থেকেই প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও এর স্বত্বাধিকারী কোম্পানি মিডিয়া স্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও কুৎসাপূর্ণ নানা খবর প্রকাশ করে আসছে। পত্রিকা প্রকাশের আগে এই গোষ্ঠী মতিউর রহমান ও লতিফুর রহমানের ফাঁসি চেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছিল।
    শুধু তা-ই নয়, এর আগে বসুন্ধরা সিটিতে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ছয় মাসেরও বেশি সময় পর বসুন্ধরা গ্রুপ প্রথম আলো ও সমকাল-এর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ দিয়ে তেজগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিল।
    কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর গতকালের প্রতিবেদনও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অপতৎপরতারই অংশ। বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের মালিকানাধীন সংবাদপত্রকে ব্যবহার করে আরেকটি সাজানো গল্প প্রকাশ করল মাত্র। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার এমন অপব্যবহার বিষ্ময়কর।

    • মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১০ (১০:০২ পূর্বাহ্ণ)

      আজ কালের কণ্ঠে পাওয়া গেল প্রথম আলোর প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে কালের কণ্ঠের বক্তব্য।

      ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা
      জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে মতিউর রহমানকে
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাংবাদিক টিপু সুলতানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর দেওয়া জবানবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সিআইডি সূত্র এ কথা জানায়।
      নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে জানান, কালের কণ্ঠে গত সোমবার আবদুস সালাম পিন্টুর জবানবন্দি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় প্রথম আলো ক্ষুব্ধ। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কয়েকজন সাংবাদিক তাঁদের দোষারোপ পর্যন্ত করছেন। ফলে তাঁরাও এখন বিব্রত অবস্থায় আছেন।
      গত ২৭ এপ্রিল আবদুস সালাম পিন্টুকে হাজির করা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুর রহমানের আদালতে। ২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বোমা হামলা মামলায় (মামলা নম্বর ১০ (০৬) ২০০১) রিমান্ডের জন্য ওই দিন শুনানি হয়। এই মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আনিসুর রহমান দীপু কালের কণ্ঠকে জানান, সিআইডি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পিন্টুর চার দিনের (গত ২৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিনই সিআইডি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিন্টুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেয়।
      সিআইডি সূত্র মতে, পিন্টুকে রিমান্ডে এনে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করাকালে প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়টি। এ সময়ই আবদুস সালাম পিন্টু প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সম্পৃক্ততার কথা বলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ২৯ এপ্রিল তাঁর এই জবানবন্দি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় পুলিশ লিপিবদ্ধ করে। গত মঙ্গলবার কালের কণ্ঠে যে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে, পিন্টুর জবানবন্দিতে সে সবই উল্লেখ আছে বলে সূত্র জানায়।
      সূত্র আরো জানায়, মামলাটির অধিকতর তদন্ত অনেকটাই চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছিল। তবে এ ধরনের কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য চলে আসায় মোড় অনেকটা ঘুরে গেছে। আর এ কারণেই আরো বেশ কিছু সময় প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাই আদালত থেকে তিন মাসের সময় নেওয়া হয়েছে।
      সূত্র জানায়, তদন্তে জানা যাচ্ছে যেসব ব্যক্তি আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার পাশাপাশি অরাজনৈতিক ‘তৃতীয় শক্তি’র হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা এ হামলার ঘটনায় সহায়তা করেছেন। এসব তথ্য বের হয়ে আসায় তাঁরা এখন অধিকতর তদন্তের দীর্ঘসূত্রতার অজুহাত তুলে নতুন রহস্য উন্মোচনে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছেন। গতকাল দৈনিক প্রথম আলোতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তবিষয়ক একটি রহস্যজনক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় নানা প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। ‘বদলে দেওয়া’র স্লোগানে মুখর পত্রিকাটি কৌশলে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।
      ওই পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকতর তদন্তে মাওলানা তাজউদ্দিনসহ হামলায় জড়িত জঙ্গিদের সহযোগী হিসেবে তৎকালীন প্রভাবশালী অনেকের নাম বেরিয়ে আসছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়। কিন্তু এ প্রভাবশালীদের মধ্যে কারা সন্দেহভাজন, তা প্রকাশ করা হয়নি।
      দৈনিক কালের কণ্ঠে ছাপা হওয়া এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের পাল্টা প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর জবানবন্দির ব্যাপারে গতকাল প্রকাশিত প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘খোঁজ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কোনো কিছুই জানাতে পারেননি। জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন, এমন কোনো জবানবন্দির কথা তাঁরা জানেন না। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হকও একই রকম মন্তব্য করেন।’ প্রথম আলোর মতো পত্রিকায় এ ধরনের প্রতিবেদন হাস্যকর। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের ভালো করেই জানা থাকার কথা, কোনো মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আসামিদের দেওয়া প্রাথমিক জবানবন্দির তথ্য সাধারণত অবগত থাকেন না। তদন্ত কর্মকর্তারা বিষয়গুলো সংরক্ষণ ও যাচাই করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে দৈনিক প্রথম আলো তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি কর্মকর্তাদের বক্তব্য প্রকাশ না করে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, র‌্যাব ও ডিবি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি ছেপে ধোঁয়াশা তৈরি করে পাঠকদের বিভ্রান্তিতে ফেলেছে। কারণ তাঁরা কেউই সরাসরি তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তার বাইরে খুব বেশি কারো অবগত থাকার কথা নয়।
      সিআইডি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিআইডি ২৯ এপ্রিল এ ধরনের কোনো জবানবন্দি নেয়নি। তা ছাড়া ওই দিন পিন্টু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রিমান্ডেও ছিলেন না। আংশিক সত্য এ তথ্যের আড়ালে পত্রিকাটির অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে বলেই সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। আগের দিন দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে কোথাও বলা হয়নি আবদুস সালাম পিন্টু ২১ আগস্ট মামলায় রিমান্ডে ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন সিআইডি দপ্তরে। সেখানে তিনি অন্য বোমা হামলা মামলায় রিমান্ডে ছিলেন।
      প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তদন্তে বেরিয়ে আসে, সমাবেশে হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে জঙ্গিদের আর্জেস গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন মাওলানা তাজউদ্দিন। তাজউদ্দিন পিন্টুর ছোট ভাই। তাঁরা দুই ভাই এ মামলার অভিযুক্ত আসামি। পিন্টু এ মামলায় কারাগারে থাকলেও তাজউদ্দিন পলাতক।’ এ দুজনের সঙ্গে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রতিবেদক টিপু সুলতানের সম্পর্কের কথা প্রকাশ পেয়েছে জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে।
      এদিকে কালের কণ্ঠে আলোচিত জবানবন্দি প্রকাশের পর প্রথম আলোর সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের অনেকে জানিয়েছেন, জঙ্গিনেতা তাজউদ্দিন একাধিকবার প্রথম আলো কার্যালয়ে মতিউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা দীর্ঘ সময় আলাপও করেছেন।

      বক্তব্য প্রতিবক্তব্য চলুক। কিন্তু ২০০১-২০০৮ ‘প্রথম আলো’র ভূমিকা বিশেষ করে মতিউর রহমানের ভূমিকা এবং বাংলাদেশের জঙ্গি তৎপরতায় মতিউর রহমান-টিপু সুলতান জুটির কার্যকলাপ নিয়ে আরো অনুসন্ধান চালানো দরকার। যখন জনকণ্ঠ ভোরের কাগজ সংবাদে প্রতিনিয়ত বাংলা ভাইদের ও বাংলাদেশ জুড়ে আরো আরো জঙ্গি তৎপরতার খবর আসছিল এবং একুশে আগস্ট ও দশ ট্রাক অস্ত্রের বিভিন্ন খবর আমরা ওই তিন পত্রিকায় পাচ্ছিলাম তখন প্রথম আলো ছিল ‘মডারেট মুসলিম’ নামক আমেরিকান প্রচার যন্ত্রের তকমাধারী পত্রিকা হয়ে ওঠার লক্ষ্যে সদাব্যস্ত। ২০০৭-২০০৮-এ আমরা দেখতে পেলাম টিপু সুলতান একে একে ২০০১-২০০৬-এর জঙ্গি সপৃক্ত নানা প্রতিবেদন লিখতে শুরু করলেন এবং বাংলাদেশের সেরা জঙ্গি প্রতিবেদক হয়ে উঠলেন, হাস্যকর এক সাংবাদিক এই টিপু সুলতান! স্মৃতি ভুল না করলে এই তো সেই ২০০১-এর নির্বাচন পূর্ববর্তী ফেনীর হাজারীকাণ্ডের টিপু সুলতান, সেই থেকে টিপু সুলতান মতিউরস্নেহধন্য। আর যারা সত্যিই বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে সাহসী সাংবাদিক ছিলেন জনকণ্ঠ ভোরের কাগজ সংবাদেই তাদের বেশির ভাগ ছিলেন, আমরা তাদেরকে কেউ চিনি না, আমার চিনি টিপু সুলতানকে! ব্যাপারটাকে ট্রান্সকম-বসুন্ধরার কুটিল জালে আটকে ফেলার প্রথম চেষ্টা কিন্তু প্রথম আলোই করল, এবং আমরা যদি এটাকে সত্য ভাবি তবে আমরা সত্য থেকেই দূরে চলে যাব এবং কালের কণ্ঠের কাছেও যদি এই মালিকদ্বন্দ্বের হিসাবকিতাবই হয় এমন গুরুত্বপূর্ণ সংবাদসূত্র ব্যবহারের প্রধান কারণ তাহলে সত্য প্রথম আলো-কালের কণ্ঠের আয়ত্তের বাইরেই চলে যাবে।

  12. মাসুদ করিম - ১১ মে ২০১০ (৯:৫২ পূর্বাহ্ণ)

    আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে আবুল কালাম আজাদের এক বিরল সাক্ষাৎকার ছাপাচ্ছে কালের কণ্ঠ।
    সাক্ষাৎকারের পটভূমি

    আবুল কালাম আজাদের বিরল সাক্ষাৎকার
    ফলে যাচ্ছে সব ভবিষ্যৎ বাণী
    কালের কণ্ঠ ডেস্ক
    ভারত, পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার আগে ১৯৪৬ সালের এপ্রিল মাসে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিক সোরিশ কাশ্মীরিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। লাহোরের ‘চাতান’ নামে এক উর্দু পত্রিকায় তা প্রকাশ হয়েছিল। পরে সোরিশ কাশ্মীরির লেখা বই ‘আবুল কালাম আজাদ’-এ এই সাক্ষাৎকারের বিবরণ রয়েছে। দুঃখের বিষয়, বহুকাল আগে লুপ্ত ‘চাতান’ পত্রিকা ও ‘আবুল কালাম আজাদ’-বইয়ের এই সাক্ষাৎকারের কথা কেউ জানত না। বইটিও এখন বিলুপ্ত।
    পাকিস্তানের এক সাবেক মন্ত্রী আরিফ মোহাম্মদ খান বহু পরিশ্রম করে বইয়ের একটি কপি উদ্ধার করেছেন ও সম্প্রতি ‘কভার্ট’ নামে একটি ইংরেজি ম্যাগাজিনে সেই সাক্ষাৎকারের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছেন।
    মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের এক বিরাট সম্পদ। স্বাধীনতার পর তিনি কংগ্রেস সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। নিজের বিবেক বা চিন্তাধারার সঙ্গে তিনি কখনোই বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। যখন ভারতের মুসলমানরা মি. জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য প্রবলভাবে সোচ্চার, তখনও তিনি পাকিস্তানের পক্ষে সায় দেননি। কারণ, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা যে মুসলমানদের জন্য আত্দহত্যা_এটা তিনি তাঁর দূরদৃষ্টিতে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। পক্ষান্তরে পাকিস্তান সমর্থক বিরাট মুসলমান জনগোষ্ঠীর কাছে তিনি ছিলেন কংগ্রেসের ‘শো বয়’। এ ছাড়া বহু ঘৃণাসূচক শব্দ তারা তাঁর নামের আগে ব্যবহার করত।
    পাকিস্তান সৃষ্টি হলে এই উপমহাদেশ কী কী সমস্যায় পড়বে, তার জীবন্ত বিবরণ এ সাক্ষাৎকারে রয়েছে। আজ থেকে ৬৪ বছর আগে করা তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পরমুহূর্ত থেকেই ফলতে শুরু করেছে। কোনো ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে মেলে না, কিন্তু এই প্রজ্ঞাশালী ব্যক্তি ৬৪ বছর আগে যা বলে গেছেন, তা অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে। এ সাক্ষাৎকারের বিবরণ পড়লেই বোঝা যাবে ভারতের মুসলমানরা পাকিস্তান দাবির মাধ্যমে কী বিরাট ভুল করেছিল।

    সাক্ষাৎকারের প্রথম কিস্তি

    মাওলানা আবুল কালাম আজাদ
    ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা মুসলমানদের জন্য আত্মহত্যা’
    প্রশ্ন : হিন্দু-মুসলমানের এই বিভেদ ও ঝগড়া এখন এমন তুঙ্গে উঠেছে, তাতে কি মনে হয় না একটা সমঝোতায় পেঁৗছানো একেবারে অসম্ভব! আপনি কি মনে করেন না, অবস্থা এখন এরকম যে পাকিস্তানের জন্ম একেবারে অবশ্যম্ভাবী?
    উত্তর: যদি পাকিস্তান সৃষ্টি হিন্দু-মুসলমানের সমস্যার সমাধান হতো তবে আমি তা নিশ্চয়ই সমর্থন করতাম। হিন্দুদেরও একটা অংশ এটা এখন সমর্থন করছে। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও অর্ধেক পাঞ্জাব একদিকে, অন্যদিকে অর্ধেক বাংলা যদি চলে যায় তবুও যে বিরাট ভারতভূমি থাকবে তার ওপর আর সাম্প্রদায়িক দাবিদাওয়া থাকবে না। আমরা যদি মুসলিম লীগের কথায় আসি, তাহলে তাদের ভাষায় এই নতুন ভারতবর্ষ হবে প্রকৃতপক্ষে একটি হিন্দু রাষ্ট্র। এটা অবশ্য কোনো স্থিরমনস্ক সিদ্ধান্ত নয়। এটা হবে একটা সামাজিক বাস্তবতার তার্কিক সিদ্ধান্ত। যে দেশে শতকরা ৯০ ভাগ লোক হিন্দু ও যারা আবহমানকাল থেকে নিজেদের নীতি ও আত্দিক বৈশিষ্ট্যে লালিত পালিত, তারা নতুন কোনো পরিবেশ স্বীকার করবে না। যেসব কারণ ভারতের মাটিতে ইসলামের ভিত্তিমূল স্থাপন করেছিল, তা এখন দেশভাগের এই রাজনীতিতে একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে। সাম্প্রদায়িক ঘৃণা এমন আকার ধারণ করেছে যে ইসলাম ধর্ম প্রচার একেবারেই অসম্ভব। এই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ধর্মকে এক বিরাট আঘাত করেছে। মুসলমানরা কোরআন থেকে বিচ্যুত হয় গেছে। মুসলমানরা যদি কোরআন ও হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী থেকে শিক্ষা নিত ও ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি তার সঙ্গে সংমিশ্রণ না করত, তবে ইসলাম প্রচারের গতি ব্যাহত হতো না। মোগল সাম্রাজ্যের শেষের দিকে মুসলমান জনসংখ্যা ছিল ২২ দশমিক ৫ মিলিয়ন বা সোয়া দুই কোটি, যা কিনা এখনকার সংখ্যার অনুপাতে প্রায় ৬৫ শতাংশ। তার পর থেকে মুসলমান জনসংখ্যা বেড়েই চলেছিল। যদি মুসলমান রাজনীতিবিদরা অভদ্র ভাষায় গালাগাল না করতেন (হিন্দুদের প্রতি) ও একশ্রেণীর মানুষ, যারা ব্রিটিশদের তাঁবেদার ছিল, তারা যদি এ দুই ধর্মের বিভেদকে আরো বড় করে না দিত তবে আজ ইসলামের শক্তি আরো বৃদ্ধি পেত।
    ইসলামকে আমরা রাজনৈতিক বিভেদ ও ঝগড়ায় প্রাধান্য দিয়েছি অথচ ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নীতিবোধ জাগ্রত করে মানব আত্দার পরিবর্তন। ব্রিটিশ আমলে আমরা ইসলামকে এক নির্দিষ্ট পরিধিতে আবদ্ধ করে রেখেছিলাম ও অন্যান্য ধর্ম যথা_ইহুদি, পার্সি ও হিন্দুদের মতোই আচরণ করতাম। ভারতীয় মুসলমানরা ইসলামকে এক জায়গাতেই থামিয়ে রেখে বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে গেল। কতগুলো শাখা অবশ্য ব্রিটিশদেরই সৃষ্টি। ফলে এসব শাখার কোনো গতি বা ইসলামিক মূল্যবোধ রইল না। ইসলামের মূলমন্ত্র ক্রমাগত কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের সমুন্নত রাখা। এটা এখন তাদের কাছে এক অপরিচিত বিষয়। অবশ্যই তারা মুসলমান তবে নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো। রাজনৈতিক শক্তির কাছেই ওরা মাথানত করেছে, ইসলামের মূল্যবোধের কাছে নয়। ওরা রাজনীতির ধর্মকে কোরআনের ধর্মের চেয়ে বেশি মূল্য দেয়। পাকিস্তান হচ্ছে একটা মতাদর্শ। এটা ভারতীয় মুসলমানদের সমস্যা উত্তরণের উপায় কি না সেটা তর্কসাপেক্ষ, তবে পাকিস্তান দাবি করা হচ্ছে ইসলামের নামে। ইসলামে কোথাও লেখা নেই, ইসলামবিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মধ্যে দেশ ভাগ করে ফেলতে হবে। কোরআন বা হাদিসে এ ধরনের নির্দেশ আছে কি? এমন কোনো ইসলামী পণ্ডিত আছেন কি, যিনি স্রষ্টার এই বিরাট পৃথিবী উপরোক্ত কারণে ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন? এই মতাদর্শে আমরা যদি দেশ ভাগ করি তবে ইসলাম যে একটি সার্বজনীন ধর্ম তার ভিত্তি কোথায় রইল? ভারতসহ অমুসলমান দেশে এই ক্রমবর্ধমান মুসলমান জনগোষ্ঠী সম্পর্কে আমরা কী ব্যাখ্যা দেব?
    ধর্মের পরিপ্রেক্ষিতে দেশভাগ মুসলিম লীগের এক অদ্ভুত চিন্তা। ওরা এটাকে এক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্গত করতে পারে, তবে কোরাআন বা ইসলামে এর কোনো বিধান বা নির্দেশ নেই। একজন ধার্মিক মুসলমানের আসল লক্ষ্য কী হওয়া উচিত? ইসলামের আলোকে ছড়িয়ে দেওয়া, না নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে দেশ বিভক্ত করা? এই পাকিস্তান দাবি মুসলমানদের কোনো উপকারেই আসবে না। পাকিস্তান সৃষ্টি হলে মুসলমানদের কী উপকার হবে_এ প্রশ্ন এখনো তর্কসাপেক্ষ; তবে এটা নির্ভর করবে কী ধরনের নেতৃত্ব দেশ শাসন করবে তার ওপর। পশ্চিমা চিন্তাধারা ও দর্শন এই সংকটকালকে আরো সংকটময় করে তুলবে। মুসলিম লীগ এখন যে পথে চলছে তাতে আমার স্থির বিশ্বাস যে একদিন পাকিস্তান ও ভারতীয় মুসলমানদের কাছে ইসলাম একটি দুষ্প্রাপ্য বস্তু হয়ে দাঁড়াবে। এটা সংক্ষেপে বললাম, তবে স্রষ্টাই জানেন ভবিষ্যতের গর্ভে কী নিহিত আছে। পাকিস্তান যখনই সৃষ্টি হবে, তখন থেকে শুরু হবে ধর্মীয় সংঘাত। যতদূর আমি দেখতে পাচ্ছি, যাদের হাতে ক্ষমতার লাগামটা থাকবে, তারাই ইসলামের সমূহ ক্ষতি করবে। তাদের যথেচ্ছাচারের জন্য পাকিস্তানের যুব সম্প্রদায় ওদের থেকে একেবারে আলাদা হয়ে যেকোনো আন্দোলনে নেমে পড়তে পারে, যা মোটেই ধর্মভিত্তিক হবে না। আজকাল দেখা যাচ্ছে, কোনো কোনো প্রদেশে যেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু, সেখানকার মুসলিম যুবসম্প্রদায় তুলনামুলকভাবে মুসলিম সংখ্যাগুরু প্রদেশের যুবসম্প্রদায় থেকে অধিকতর ধর্মভাবাপন্ন। আপনি দেখবেন, আলেমদের বর্ধিত প্রভাবেও পাকিস্তান ধর্মের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলবে।
    প্রশ্ন: কিন্তু আলেমরা কায়েদে আজমের (এমএ জিন্নাহ) সঙ্গে ছিলেন।
    উত্তর: সম্রাট আকবরের সঙ্গেও অনেক আলেম ছিল। ওরা একটা নতুন ধর্মও আবিষ্কার করল। ব্যক্তিগত কারো সম্পর্কে আলোচনা না-ই বা করলাম। আমাদের ইতিহাসে আলেমদের কর্মকাণ্ডের খতিয়ান ভরা। সর্বযুগে তারা ইসলামের অপমান ও মর্যাদাহানি করেছে। তবে তাদের মধ্যে দু-চারজন অবশ্য ব্যতিক্রম। এই এক হাজার বছরের মুসলমানের ইতিহাসে কতজন সম্মানিত ব্যক্তির নাম ওরা উচ্চারণ করেছে? ইমাম হাম্বল ও ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে কোনো উচ্চবাচ্য ওরা করেনি। ভারতবর্ষেও আমরা শাহ ওয়ালিউল্লাহ ও তাঁর পরিবার ছাড়া আর কারো কথা মনে করতে পারি না। উলেমা সানির সৎসাহস সম্পর্কে আমরা অবগত এবং সেই উলেমাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল রাজদরবারের সঙ্গে যুক্ত অন্য উলেমাদের নালিশ ও উসকানির পরিপ্রেক্ষিতে। সে উলেমারা এখন কোথায়? ওদের এখন কি কেউ সম্মান দেখায়?
    প্রশ্ন: মাওলানা, বলুন তো যদি পাকিস্তান সৃষ্টি হয় তবে তাতে দোষের কী আছে? ইসলামকে তো ব্যবহার করা হচ্ছে সম্প্রদায়ের ঐক্য রক্ষার কাজে।
    উত্তর: যে কাজের বা কারণের জন্য ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে তা ইসলামের মানদণ্ডে মোটেই সঠিক নয়। জামালের যুদ্ধে (হজরত আলী ও হজরত আয়েশার যুদ্ধ) তলোয়ারের আগায় কোরআন ঝুলিয়ে যুদ্ধ করা হয়েছিল। এটা কি ঠিক হয়েছিল? কারবালা যুদ্ধে যারা আমাদের নবীর পরিবারবর্গকে হত্যা করল, সেসব মুসলমানও আমাদের নবীর সঙ্গী বা সাহাবা বলে দাবি করে। এটা কি উচিত বলে মনে হয়? হাজ্জাজ নামে সেনানায়ক ছিলেন, তিনি তো মক্কার পবিত্র মসজিদ আক্রমণ করেছিলেন। এটা কি উচিত বলে গণ্য করা হবে? কোনো পবিত্র বাণী অসৎ চিন্তা বা কর্মকে সঠিকতার নীতির আওতায় আনতে পারে না। যদি পাকিস্তান সৃষ্টি মুসলমানদের জন্য সঠিক হতো তবে আমি অবশ্যই তা সমর্থন করতাম। কিন্তু এই দাবির মধ্যে আমি অন্তর্নিহিত বিপদ দেখতে পাচ্ছি। আমি আশা করি না মানুষ আমাকে সমর্থন করবে, কিন্তু আমিও আমার বিবেকের বিরুদ্ধে যেতে পারি না। মানুষ সাধারণত জোরজবরদস্তি বা অভিজ্ঞতালব্ধ শিক্ষার কাছে নতিস্বীকার করে। মুসলমানরা এখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি কথাও শোনার পক্ষপাতী নয়, যতক্ষণ না পর্যন্ত এরা এটা হাতে পায় ও ভোগ করতে পারে। আজকের মুসলমানরা সাদাকে কালো বলতে রাজি আছে, কিন্তু পাকিস্তান দাবি ছাড়বে না। এই দাবি বন্ধ করার উপায় হচ্ছে_হয় ব্রিটিশ সরকারের তা মেনে না নেওয়া অথবা মি. জিন্নাহকে অন্য প্রস্তাবে রাজি করানো। (কংগ্রেস) ওয়ার্কিং কমিটির অন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে জানলাম, ভারত বিভাগ মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু আমি সাবধান করে দিচ্ছি, এই দেশভাগ অশুভ ও অমঙ্গল শুধু ভারতের জন্য নয়, পাকিস্তানও সমভাবে এর ভাগীদার হবে। বিভাগটা হচ্ছে ধর্মের জনসংখ্যার সংখ্যাগুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে, কোনো প্রাকৃতিক সীমারেখা যথা_পাহাড়, মরুভূমি, নদী এদের ওপর ভিত্তি করে নয়। সীমারেখা একটা টানতেই হবে তবে ওটা কতদিন স্থায়ী হবে বলা কঠিন।
    পাকিস্তান সৃষ্টির কল্পনা একটা ঘৃণা থেকে জন্ম নিয়েছে এবং যতদিন ঘৃণা বেঁচে থাকবে, ততদিনই এর অস্তিত্ব। এই ঘৃণা ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ককে গ্রাস করে ফেলবে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্ব হওয়া বা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব নয়, যদি না এ দুটি দেশ আকস্মিক কোনো বিপদের মধ্যে পড়ে। দেশভাগের এই রাজনীতি এ দুটি দেশের মধ্যে এক বিরাট প্রাচীর তৈরি করবে। পাকিস্তানের পক্ষে ভারতের সব মুসলমানকে সেখানে স্থান দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তার ভূমিস্বল্পতা। পক্ষান্তরে হিন্দুদেরও পশ্চিম পাকিস্তানে বাস করা সম্ভব নয়। ওদের ওখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। এর প্রতিক্রিয়া ভারতেও দেখা যাবে এবং ভারতীয় মুসলমানদের জন্য তিনটি পথ খোলা থাকবে_
    (১) তারা তখন লুট ও নারকীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে পাকিস্তানে চলে যাবে, কিন্তু পাকিস্তান কতজনকে জায়গা দিতে পারবে?
    ২) তারা হত্যা বা অন্যান্য অত্যাচারের কবলে পড়বে। মুসলমানদের এক বিরাট অংশকে এই অগি্নপরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে, যতদিন না দেশভাগের এই তিক্ত স্মৃতি মুছে যায়।
    ৩) দারিদ্র্য, লুণ্ঠন ও রাজনৈতিক হতাশার শিকার হয়ে বহু মুসলমান ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতে পারে।
    মুসলিম লীগের বিশিষ্ট মুসলমানরা পাকিস্তানে চলে যাবে। ধনী মুসলমানরা পাকিস্তানের শিল্প-কলকারখানা ও ব্যবসা দখল করে পাকিস্তানের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ কব্জা করে ফেলবে। কিন্তু তিন কোটি মুসলমান ভারতে পড়ে থাকবে। তাদের জন্য পাকিস্তান কী রেখেছে? হিন্দু ও শিখদের পাকিস্তান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর ওদের অবস্থা আরো সাংঘাতিক আকার ধারণ করবে। পাকিস্তান তখন নিজেও বহু সমস্যায় জর্জরিত হবে। সবচেয়ে বড় ভয়, বাইরের শক্তি পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে। এবং কালক্রমে এই নিয়ন্ত্রণ কঠিন রজ্জু হয়ে পাকিস্তানকে বাঁধবে। ভারতের অবশ্য এ সমস্যা নেই। তার ভয় শুধু পাকিস্তানের শত্রুতা। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মি. জিন্নাহর দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি জানেন না, বাংলাদেশ বাইরের কোনো নেতৃত্ব মেনে নেয় না। আজ কিংবা কাল তারা সে নেতৃত্ব অস্বীকার করবে।
    দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ফজলুল হক জিন্নাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। তাঁকে মুসলিম লীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো। সোহরাওয়ার্দীও যে জিন্নাহকে খুব সম্মানের চোখে দেখতেন, সেটাও বলা যায় না। মুসলিম লীগ কেন, কংগ্রেসের ইতিহাসই দেখা যাক। সুভাষ চন্দ্র বসুর বিদ্রোহের কথা সবাই জানেন। গান্ধিজি সুভাষ বসুর কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হওয়ায় অত্যন্ত নাখোশ ছিলেন ও তাঁকে সরানোর জন্য রাজকোটে আমরণ অনশন শুরু করলেন। সুভাষ বসু গাঁধির বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন এবং নিজেকে কংগ্রেস থেকে সরিয়ে নিলেন। বাংলাদেশের পরিবেশ এমনই যে বাঙালিরা বাইরের নেতৃত্ব অপছন্দ করে এবং তখনই বিদ্রোহ করে, যখন দেখে যে তাদের অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা বিশেষভাবে ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে।
    যত দিন জিন্নাহ ও লিয়াকত আলী জীবিত আছেন তত দিন পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রতি তাদের বিশ্বাস থাকবে। কিন্তু ওঁরা যখন থাকবেন না তখন যেকোনো ছোট ছোট ঘটনায় ওদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠবে। আমি মনে করি, পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে বহু দিন একসঙ্গে থাকা মোটেই সম্ভব নয়। এই দুই ভূখণ্ডে ধর্ম ছাড়া আর কোনো বাঁধন নেই। আমরা মুসলমান_এই মর্মে কোথাও স্থায়ী রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে ওঠেনি। আরব দেশগুলো আমাদের সামনে এক ধর্ম, সভ্যতা-সংস্কৃতি ও ভাষা_সবই এক। কিন্তু তাদের সরকার ভিন্ন ভিন্নভাবে গঠিত এবং প্রায়ই এরা ঝগড়া-কলহ ও শত্রুতার মধ্যেই আছে। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা, নিয়ম-কানুন, আচার-ব্যবহার ও জীবনপ্রবাহ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে একেবারে আলাদা। পাকিস্তান সৃষ্টির প্রাক্কালে এখন ওদের মনে যে উষ্ণতা আছে, তা পরে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে এবং বিরোধ ও প্রতিবাদ দানা বেঁধে উঠবে। তখন বাইরের শক্তিগুলো এতে ইন্ধন জোগাবে ও একসঙ্গে এই দুই খণ্ড আলাদা হয়ে যাবে। পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে যাওয়ার পর যাই ঘটুক না কেন, অন্য প্রদেশগুলো পারস্পরিক বিরোধ ও ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে পুরো পশ্চিম পাকিস্তানকে রণক্ষেত্রে পরিণত করবে। পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ নিজেদের আলাদা আলাদা জাতি বলে ঘোষণা করবে। এই যখন অবস্থা হবে, তখন পুরো ব্যাপারটা বাইরের শক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। তখন পাকিস্তান বলকান বা আরব রাজ্যের মতো খণ্ড খণ্ড হয়ে যাবে। এ সময় হয়তো আমরা নিজেদের প্রশ্ন করব_কী পেলাম আর কী হারিয়েছি।
    আসল বিষয় হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নতি, ধর্ম নয়। মুসলমান ব্যবসায়ীদের মধ্যে সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতার মনোভাব সম্বন্ধে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। পৃষ্ঠপোষকতা ও বিশেষ বিশেষ সরকারি সুবিধায়ই ওরা অভ্যস্ত। এখন ভারতের এই নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্তিকে তারা ভয়ের দৃষ্টিতে দেখছে। নিজেদের ভয়টাকে ঢেকে রাখার জন্য তারা দ্বিজাতিতত্ত্বের ব্যাপারে সোচ্চার এবং একটা মুসলিম রাষ্ট্র চায়, যেখানে তারা সম্পূর্ণ অর্থনীতিটাকে কব্জা করতে পারে ও সেখানে অন্যান্য প্রতিযোগীর প্রবেশ নিষিদ্ধ। দেখা যাক, কত দিন এই বঞ্চনাকে ওরা বাঁচিয়ে রাখতে পারে। আমি মনে করি, দেশ ভাগ হওয়ার পর পাকিস্তান কী কী সমস্যায় জর্জরিত হবে:
    ১) অযোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব সামরিক শাসন ডেকে আনবে, যা নাকি অনেক মুসলমান রাষ্ট্রে ঘটেছে।
    ২) প্রচুর বৈদেশিক ঋণের বোঝা।
    ৩) প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না থাকায় সংঘর্ষ অনিবার্য।
    ৪) অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ এবং বিভিন্ন এলাকা বা প্রদেশের মধ্যে অন্তর্বিরোধ।
    ৫) নতুন ধনী এবং শিল্পপতিদের দ্বারা জাতীয় সম্পত্তি লুট ও আত্দসাত।
    ৬। অসন্তোষের উৎপত্তি, ধর্ম থেকে যুব সম্প্রদায়ের বিচ্যুতি এবং পাকিস্তান মূলমন্ত্রে ধস নামা।
    ৭) নব্য ধনীদের শোষণ থেকে একটা শ্রেণীসংগ্রামের আশঙ্কা।
    ৮) পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।
    এ অবস্থায় পাকিস্তানের স্থায়িত্ব খুবই একটা চাপের মুখে পড়বে ও কোনো মুসলিম রাষ্ট্র থেকে কার্যকরী সাহায্য পাওয়া যাবে না। অন্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষ সাহায্য পাওয়া যেতে পারে, তবে পাকিস্তানের মূলমন্ত্র ও রাষ্ট্রকে এর জন্য প্রচুর মূল্য দিতে হবে।
    (চলবে)
    ভাষান্তর: শফিক আহমেদ

    • মাসুদ করিম - ১২ মে ২০১০ (৯:১১ পূর্বাহ্ণ)

      সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি

      (গতকালের পর)
      প্রশ্ন : প্রশ্ন হচ্ছে, মুসলমানরা এখন কেমন করে নিজেদের পরিচয় ও স্বকীয়তা বজায় রাখবে এবং কেমন করে মুসলিম রাষ্ট্রে নাগরিকদের উপরোক্ত গুণগুলো বিস্তারলাভ করবে?

      উত্তর : ফাঁকা বুলি দিয়ে মূল বাস্তবতাকে অস্বীকার করা যায় না_এটা শুধু যেকোনো আলোচনাকে বিকৃত পর্যায়ে আনতে পারে। মুসলমান সম্প্রদায়ের পরিচয় বা স্বকীয়তা বলতে আমরা কী বুঝি? ব্রিটিশ দাসত্বেও যদি আমরা আমাদের স্বকীয়তা না হারিয়ে থাকি, তবে স্বাধীন ভারতে তা হারাব কেন_যেখানে রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সমানভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। মুসলিম রাষ্ট্রের বিশেষ গুণাবলি কি বলতে পারেন? আসল বিতর্কের বিষয় ধর্মরক্ষা ও উপাসনার পূর্ণ স্বাধীনতা। এর বাধা কোথায়? এই স্বাধীনতা কি ৯০ মিলিয়ন মুসলমানকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ব্যাপারে একেবারে অসহায় করে দেবে? বিশ্বের এক বিরাট শক্তি হচ্ছে ব্রিটিশ, তারাই যখন তা পারেনি তাহলে হিন্দুদের এমনকি শক্তি আছে, যাতে ওরা এই ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে? এই প্রশ্ন তারাই তুলেছে যারা পশ্চিমা কায়দায় শিক্ষিত, নিজেদের ঐতিহ্য সম্বন্ধে বিস্মৃত ও রাজনৈতিক ফাঁকা বুলিতে অভ্যস্ত। ভারতের ইতিহাসে মুসলমানদের ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি মনে করেন, মুসলমান রাজারা ইসলামের সেবা করত? ইসলামের সঙ্গে ওদের নামমাত্র সম্পর্ক ছিল। তাঁরা ইসলাম প্রচারক ছিলেন না। ভারতের মুসলমানরা সুফি-ফকিরদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞতাবদ্ধ। অথচ এই সুফিদের অনেককে রাজাদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। অধিকাংশ মুসলমান রাজা নিজেরাই নিজেদের উলেমা সংসদ তৈরি করে নিয়েছিলেন, আর তাঁরাই ছিলেন ইসলামের মূল্যবোধ ও আত্দিক বৈশিষ্ট্য প্রচারে সবচেয়ে বড় বাধা। ইসলাম তার আদি বৈশিষ্ট্যের আবেদনে প্রথম ১০০ বছরের মধ্যে হেজাজের চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছিল, কিন্তু যে ইসলাম ভারতে প্রবেশ করেছিল তা একেবারে অন্য ধরনের এবং যাঁরা এই ইসলাম নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা কেউই আরব ছিলেন না। এবং এই ইসলাম তার আসল মূলমন্ত্র থেকে অনেকাংশে বিচ্যুত।
      তবুও সংস্কৃতি, সংগীত, শিল্প, স্থাপত্য এবং ভাষার ওপর মুসলমান শাসনকালের এক বিরাট ছাপ ও স্বাক্ষর রয়ে গেছে। ভারতের সাংস্কৃতিককেন্দ্র যথা দিলি্ল, লক্ষ্নৌ কী বার্তা বহন করছে? সেখানে অন্তর্নিহিত মুসলিম বৈশিষ্ট্যই প্রকাশ পাচ্ছে।
      যদি মুসলমানরা মনে এই শঙ্কা পোষণ করে এবং বিশ্বাস করে, স্বাধীন ভারতে তাদের দাসত্ব করতে হবে, তবে আমি তাদের ধর্ম ও হৃদয়ের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় দেখছি না। যে মানুষ জীবন সম্পর্কে বীতরাগ বা অনাসক্ত, তাকে সাহায্যের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যায়; কিন্তু যে সাহসহীন, ভীতু তাকে সাহসী ও শক্তিমান করা সম্ভব নয়। সম্প্রদায় হিসেবে মুসলমানরা এখন কাপুরুষ। তাদের স্রষ্টাভীতি নেই_আছে মানুষকে ভয় করা। এতেই বোঝা যাবে, কেন মুসলমানরা তাদের অস্তিত্বে সন্দিহান। একেবারে মিথ্যা কল্পনার শিকার।
      ব্রিটিশরা যখন দেশ দখল করল, তখন তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভীষণ ব্যবস্থা নিল। কিন্তু তাতে মুসলমান সম্প্রদায় ধ্বংস হয়ে যায়নি। পক্ষান্তরে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা, তার থেকে বেশিই বৃদ্ধি পেল। মুসলমান সংস্কৃতির আত্দিক বৈশিষ্ট্য ও মূল্যবোধের একটা নিজস্ব মাধুর্য আছে। তা ছাড়া ভারতের তিন দিকে মুসলিম রাজ্য। তাহলে কেন সংখ্যাগুরুরা ভারতের ৯০ মিলিয়ন মুসলমানকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে? এতে তাদের কী লাভ হবে? ৯০ মিলিয়ন মুসলমান নিশ্চিহ্ন করা কি এতই সহজ?
      বস্তুত আমার মনে হয়, মুসলিম সংস্কৃতির আবেদনের প্রভাবে এমন একদিন আসতে পারে, যখন ইসলাম ধর্মের অনুসারীরাই হবে স্বাধীন ভারতের সর্ববৃহৎ সম্প্রদায়।
      পৃথিবীর জন্য প্রয়োজন স্থায়ী শান্তি ও দার্শনিক চিন্তাধারা। হিন্দুরা যদি কার্ল মার্কসের অনুসারী হতে পারে, পশ্চিমের দর্শন ও জ্ঞান অনুশীলন করতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে যদি ইসলামের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শন না করে, তবে এর নীতি থেকে অনেক উপকার পেতে পারে। বস্তুত ওরা বিশ্বাস করে, কোনো সংকীর্ণতা বা অনুদারতা ইসলামের মধ্যে নেই এবং স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থায়ও বিশ্বাসী নয়। ইসলাম হচ্ছে শান্তি ও প্রত্যেকের জন্য সমান অধিকার_এই মন্ত্রের এক বিশ্বব্যাপী আহ্বান। ওরা জানে ইসলাম হচ্ছে এক প্রেরিত পুরুষের ঘোষণা, যার মাধ্যমে কেবল স্রষ্টার উপাসনার কথাই বলা হয়েছে। ইসলাম হচ্ছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভেদাভেদ থেকে মুক্তি এবং সমাজকে পুনর্গঠনসহ তিনটি মূলনীতির ওপর দাঁড়ানো। যথা_স্রষ্টায় বিশ্বাস, ন্যায়বিচার ও জ্ঞান।
      আমাদের এই চরমপন্থী মনোভাব ও ব্যবহার অমুসলমানদের ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। যদি আমরা আমাদের স্বার্থপর উদ্দেশ্য দিয়ে ইসলামকে অপবিত্র না করতাম, তাহলে অনেক সত্যান্বেষী ইসলামের মধ্যে সান্ত্বনা পেত। পাকিস্তানের সঙ্গে ইসলামের কোনো যোগ নেই। এটা মুসলিম লীগের একটা রাজনৈতিক দাবি, যা দিয়ে বোঝানো হয়েছে যে ভারতীয় মুসলমানদের এটাই হবে জাতীয় লক্ষ্য। আমার মনে হয়, যে সমস্যায় মুসলমানরা ভুগছে এটা তার কোনো সমাধান নয়। এটা আরো সমস্যা ডেকে আনবে।
      আমাদের নবী বলেছেন, স্রষ্টা আমার জন্য গোটা পৃথিবীকে একটা মসজিদে রূপান্তরিত করেছেন। এখন আমাকে এই মসজিদ ভাগ করতে বলো না কিন্তু। যদি এই ৯ কোটি মুসলমান সারা ভারতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে এবং দু-একটা প্রদেশে ওরা সংখ্যাগুরু হয় এবং সেই প্রদেশগুলোর পুনর্গঠন চায়, তবে তার মধ্যে কিছু যৌক্তিকতা থাকতে পারে। কিন্তু এ ধরনের দাবি ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক নয়। তবে শাসনব্যবস্থার কারণে তা মেনে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বর্তমান অবস্থা একেবারে বিপরীত। যতগুলো প্রদেশ ভারতের শেষ সীমানায় আছে, তার প্রায় সবই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং ওদের সীমানা অন্য মুসলিম রাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত। এখন এই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীকে কি কেউ উৎখাত করতে পারে? পাকিস্তান দাবির মাধ্যমে আমরা এক হাজার বছরের ইতিহাস থেকে মুখ ফিরিয়ে আছি এবং মুসলিম লীগের পরিভাষা ব্যবহার করে বলতে পারি_৩০ মিলিয়ন মুসলমানকে হিন্দুরাজের কবলে থাকতে হবে। হিন্দু-মুসলমান সমস্যা, যা নাকি কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে, সেটা একসময় দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি করবে ও বহির্রাষ্ট্রের ইন্ধন জোগানোর ফলে এটা বিরাট যুদ্ধের আকার নেবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পাকিস্তান সৃষ্টির মধ্যে যদি এত ভয় ও আশঙ্কা নিহিত থাকে, তবে হিন্দুরা এটার বিরোধিতা করছে কেন? আমার মনে হয়, এই বিরোধিতা ওদের মধ্যে দুই মতাদর্শীর কাছ থেকে আসছে। একদল মনে করে, পাকিস্তান একটি সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের ঘাঁটি হবে। একটি স্বাধীন ও অখণ্ড ভারত হলে সে নিজেকে সব চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।
      আরেক দল যারা পাকিস্তান দাবির বিরোধিতা করছে তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের উসকে দেওয়া, যাতে তারা তাদের পাকিস্তান দাবি সম্পর্কে আরো কঠিন অবস্থান নিতে পারে, আর এভাবে ওরা মুসলমানমুক্ত একটা দেশ লাভ করবে। সংবিধান অনুযায়ী মুসলমানদের নিরাপত্তা পাওয়ার পূর্ণ অধিকার আছে। কিন্তু দেশভাগ হলে তাতে কোনো ফল লাভ হবে না। পাকিস্তান দাবি এই সাম্প্রদায়িক সমস্যার এক ভ্রান্ত সমাধান।
      ভবিষ্যতে ভারত সাম্প্রদায়িক সমস্যার সম্মুখীন হবে না, তবে শ্রেণী সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। মূলধন ও শ্রম বা মালিক-শ্রমিকের সংঘর্ষ চলবে। কমিউনিস্ট ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন বাড়ছে আর এটাকে মোটেই অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা উচিত হবে না। এই আন্দোলন নির্যাতিত বা শোষিত জনগণের জন্য সংগ্রাম করে যাবে। মুসলমান পুঁজিবাদী ও জমিদার শ্রেণীর মনে এই আশঙ্কা বলবৎ। এখন এরা সম্পূর্ণ ব্যাপারটায় একটা সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে অর্থনৈতিক সমস্যাটাকে একটা সাম্প্রদায়িক বিবাদে পরিণত করেছে। কিন্তু মুসলমানরা একা এটার জন্য দায়ী নয়। এই কৌশল প্রথমে ব্রিটিশরা তৈরি করে ও পরে আলীগড়ের রাজনীতিমনস্ক ব্যক্তিরা এটা গ্রহণ করে। পরে হিন্দুদের অদূরদর্শিতায় বিষয়টা আরো ঘোলাটে হয়ে যায়। এখন মনে হচ্ছে দেশভাগ ছাড়া স্বাধীনতা পাওয়া যাবে না।
      জিন্নাহ এককালে হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের প্রতীক ছিলেন। কংগ্রেসের এক অধিবেশনে সরোজিনী নাইডু তাঁকে এই উপাধি দিয়েছিলেন। উনি দাদাভাই নৌরাজির শিষ্য ছিলেন। উনি ১৯০৬ সালে মুসলমানদের এক ‘ডেপুটেশন’-এ অংশগ্রহণ করতে রাজি হননি। সেই সময় থেকেই ভারতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বীজ বপন শুরু হলো। ১৯১৯ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী হিসেবে জয়েন্ট সিলেক্ট কমিটিতে মুসলমানদের আলাদা দাবি উত্থাপনের প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন। ১৯২৫ সালের ৩ অক্টোবর ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ পত্রিকায় একটা চিঠি লিখেছিলেন, যাতে তিনি ‘কংগ্রেস একটি হিন্দু সংগঠন’ এই যুক্তি একেবারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ১৯২৫ ও ১৯২৮ সালে সর্বদলীয় অধিবেশনে তিনি যুক্তভোটের সপক্ষে তাঁর অভিমত রেখেছিলেন। ১৯২৫ সালে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বলেছিলেন, ‘প্রথমত ও শেষ পর্যন্ত আমি একজন জাতীয়তাবাদী’ এবং হিন্দু ও মুসলমান সহকর্মীদের বললেন, তারা যেন সাম্প্রদায়িক বিষয়গুলোকে পরিহার করে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে এক সত্যিকারের জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে।
      ১৯২৮ সালে যে সাইমন কমিশন ভারতে এসেছিল তা ‘বয়কট’ করার ডাক জিন্নাহ দিয়েছিলেন। ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত তিনি দেশভাগের সপক্ষে ছিলেন না। তিনি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনকে বলেছিলেন তারা যেন হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের ওপর কাজ করে যায়। কিন্তু তখনই ক্ষুব্ধ হলেন যখন কংগ্রেস মুসলিম লীগকে বাদ দিয়ে সাতটি প্রদেশে মন্ত্রিসভা গঠন করল। ১৯৪০ সালে মুসলমানদের রাজনৈতিক অবক্ষয় ঠেকাতে তিনি দেশভাগ সমর্থন করলেন। আমার সম্পর্কে মতামত দেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার মি. জিন্নাহর আছে। তাঁর বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে আমার কোনোই সন্দেহ নেই। রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি মুসলমান সাম্প্রদায়িকতা ও পাকিস্তান দাবির জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। এখন তিনি এই দাবি ছাড়তে পারেন না, কারণ এতে তাঁর সম্মানের লাঘব হবে।

      প্রশ্ন : এখন এটা পরিষ্কার যে মুসলমানরা পাকিস্তান দাবি ছাড়বে না। যুক্তি, তর্ক, বিচারবোধ এদের মাথায় কেন ঢুকছে না?
      উত্তর : কোনো নীতিবিচ্যুত জনতার উদ্দামতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বড় কঠিন কাজ। কিন্তু কারোর বিবেককে দাবিয়ে রাখা মৃত্যুর চেয়েও খারাপ। মুসলমানরা আজকাল আর হাঁটে না। ওরা আবেগতাড়িত হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে, মুসলমানরা স্থিরভাবে কখনো হাঁটতে শেখেনি। হয় তারা দৌড়াবে কিংবা স্রোতের টানে ভেসে যাবে। একশ্রেণীর মানুষ যখন আত্দবিশ্বাস ও আত্দসম্মান হারিয়ে ফেলে তখন তাদের ঘিরে রাখে কাল্পনিক সন্দেহ ও ভয়। তখন তারা কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল বিচার করতে অক্ষম। সংখ্যার শক্তি দিয়ে জীবনের মূল্যকে অনুভব করা যায় না। কেবলমাত্র দৃঢ় বিশ্বাস ও কল্যাণমুখী কাজেই তা লব্ধ হবে। এই ব্রিটিশ রাজনীতি মুসলমানদের মনে প্রচুর আশঙ্কা ও অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। এখন তারা এতই ভীত ও সন্ত্রস্ত যে তারা চায় ব্রিটিশরা ভারত ছাড়ার আগেই যেন দেশভাগ হয়ে যায়। ওরা কি মনে করে দেশভাগ হলেই সব আশঙ্কা থেকে মুক্ত হওয়া যাবে? এই শঙ্কা যদি সত্যিই থাকে তবে এগুলো তাদের সীমান্তে গিয়ে আঘাত হানবে এবং তা থেকে বেশ বড় রকম একটা যুদ্ধ বাধবে। জীবন ও ধনসম্পত্তির যে বিরাট ক্ষতি হবে তা হবে চিন্তার বাইরে।

      প্রশ্ন : হিন্দু ও মুসলমান দুটো ভিন্ন জাতি। তাদের মধ্যে সাদৃশ্যও নেই। এদের মধ্যে ঐকমত্য কেমন করে সৃষ্টি হবে?
      উত্তর : এই বিতর্ক বহু আগেই বাতিল হয়ে গিয়েছে। আল্লামা ইকবাল ও মাওলানা হোসেন আহমেদ মাদানীর মধ্যে এ বিষয়ে চিঠিপত্র লেখালেখি হয়েছিল, তা আমি পড়েছি। কোরআনে ‘কওম’ শব্দটা কেবলমাত্র মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্যই প্রযোজ্য নয়; অন্যান্য মানুষও এর শামিল। মিল্লাত (সম্প্রদায়), কওম (জাতি) এবং উম্মত (উপদল)_এসব শব্দের ব্যুৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক করে কোনো ফল লাভ হবে না। ধর্মের দিক থেকে দেখলে ভারত বহু মানুষ যথা হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, পারসি, শিখদের মাতৃভূমি। হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের পার্থক্য বিরাট। তবে এই পার্থক্য ভারতের স্বাধীনতা লাভের পথে অন্তরায় হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আবার এটাও মানা যায় না_দুটো ভিন্ন ভিন্ন ধর্মবিশ্বাস ভারতকে অখণ্ড রাখার অন্তরায়। আসল বিষয় হচ্ছে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা এবং কেমন করে আমরা তা লাভ করতে পারি। স্বাধীনতা হচ্ছে আশীর্বাদ এবং প্রত্যেকের এটা পাওয়ার অধিকার আছে। ধর্মের ভিত্তিতে এটা লাভ করা যায় না। মুসলমানদের মনে রাখা উচিত যে তারাই হচ্ছে বিশ্বব্যাপী জনগণের জন্য ঐসলামিক বার্তা বহনকারী। ওরা কোনো ক্ষুদ্র জাতি বা গোষ্ঠী নয় যে তাদের এলাকায় অন্য কেউ ঢুকতে পারবে না। সঠিকভাবে বলতে গেলে বলতে হবে ভারতের মুসলমানরা সবাই একই সম্প্রদায়ের নয়। বিভিন্ন গোষ্ঠীতে তারা বিভক্ত। হিন্দুদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়িয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ করা যাবে কিন্তু ইসলামের নামে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করা যাবে না। তাদের কাছে ইসলাম অর্থ নিজেদের গোষ্ঠীর প্রতি নির্ভেজাল আনুগত্য। ওহাবি, সুনি্ন, শিয়া ছাড়াও আরো অনেক গোষ্ঠী আছে, যাদের অনেক সাধু বা পীরের প্রতি আনুগত্য রয়েছে। ছোট ছোট বিষয় যেমন নামাজের সময় হাত তোলা বা সজোরে ‘আমিন’ শব্দ উচ্চারণ করা নিয়েও বহু বাদানুবাদ হয়েছে। কিন্তু সমাধানে পেঁৗছানো যায়নি। উলেমারা যখন তখন ‘তকফির’ (কাউকে নাস্তিক ঘোষণা করা) ব্যবহার করছে। আগে ওরা ইসলাম ধর্মকে অবিশ্বাসীদের কাছে পেঁৗছে দিত আর এখন ওরা বিশ্বাসীদের কাছ থেকেও ইসলামকে সরিয়ে দিয়েছে। ইসলামের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে_কত সৎ ও ধার্মিক মুসলমানকে ‘কাফের’ বলে ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। একমাত্র নবীরাই পারতেন এমন যন্ত্রণাদায়ক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে।
      তাদেরও এ ব্যাপারে বহু যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছিল ও বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। যখন যুক্তি ও বুদ্ধি বিদায় নিয়ে চলে যায় ও মানুষের মনোভাব প্রস্তরীভূত হয়ে যায়, তখন ধর্ম সংস্কারকের কাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু বর্তমান অবস্থা তার চেয়েও বহুগুণে খারাপ। মুসলমানরা এখন তাদের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে এক কঠিন অবস্থান নিয়েছে। ধর্মের চেয়ে রাজনীতিই ওদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য এবং পার্থিব জিনিসের মধ্যেই ওরা ধর্মের মূল খুঁজে পায়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে, যারা আমাদের ভালো করতে এসেছিল তাদের আমরা বিদ্রূপ করেছি ও বহু মানুষের ত্যাগ ও স্বার্থহীন কর্মকে অবজ্ঞার চোখে দেখেছি। আমরা কে? আমরা সাধারণ মরণশীল জীব। এমনকি বড় বড় প্রেরিত পুরুষ বা নবীকেও এসব পুরনো রীতিনীতি আঁকড়ে ধরা রক্ষণশীল মানুষদের শিকার হতে হয়েছিল।

      প্রশ্ন : আপনি আপনার ‘আল হিলাল’ পত্রিকার প্রকাশনা বহুদিন আগেই বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা কি আপনার মুসলমানদের বুদ্ধিমত্তার প্রতি হতাশা কিংবা মনে করেছেন নির্জন মরুভূমিতে আজান দিয়ে কোনো ফল লাভ হবে না?
      উত্তর : আমি ‘আল হিলাল’ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছি, তার অর্থ এই নয় যে এর সত্যতা ও সততার ওপর বিশ্বাস হারিয়েছি। এই পত্রিকা বহু মুসলমানের মনে এক বিরাট আলোড়ন এনেছিল। ওরা ইসলাম, মানুষের স্বাধীনতা ও ন্যায়পরায়ণতার লক্ষ্যকে নিজেদের মনে দৃঢ় করেছে। এই অভিজ্ঞতায় আমিও প্রচুর লাভবান হয়েছি। মনে হয়েছিল মোহাম্মদের সঙ্গে যাঁরা থাকতেন, সেই সাহাবিদের মতো আমিও অনেক কিছু শিখলাম। আমি নিজে মোহাবিষ্ট হয়ে সেই পৌরাণিক ‘ফিনিক্স’ পাখির মতো পুড়ে গিয়ে আবার নবজীবনে ফিরে এলাম। ‘আল হিলাল’ তার উদ্দেশ্য সাধন করেছে ও নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে নিজকে পুনঃমূল্যায়ন করে দেশের স্বাধীনতা লাভের জন্য সময় ও মন উৎসর্গ করে দিয়েছিল। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের স্বাধীনতা ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল এবং হিন্দু-মুসলমান ঐক্য ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির চাবিকাঠি; এমনকি প্রথম মহাযুদ্ধের আগেও আমি স্থির নিশ্চিত ছিলাম, ভারত অবশ্যই স্বাধীন হবে এবং পৃথিবীর কোনো শক্তিই এটা রোধ করতে পারবে না। মুসলমানদের তখন কী ভূমিকা থাকবে, সে ব্যাপারেও আমি পরিষ্কার চিন্তা করেছিলাম। আমি আশা করেছিলাম, মুসলমানরা যেন অন্যান্য দেশবাসীর সঙ্গে একত্রে হাঁটে এবং ইতিহাস যেন কখনো বলতে না পারে_ভারতীয়রা যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছিল তখন মুসলমানরা নীরব দর্শকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিল; কখনো যেন না বলতে পারে_ভারতবাসী যখন প্রবল ঢেউয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল এবং স্বাধীনতার সৈনিকদের নৌকা ডুবে যাচ্ছিল, তখন মুসলমানরা আনন্দে হাততালি দিচ্ছিল। (শেষ)
      ভাষান্তর: শফিক আহমেদ

      ‘কালের কণ্ঠ’ বলছে মূল ইংরেজি সাক্ষাৎকারটি ছাপা হয়েছিল এম.জে আকবর সম্পাদিত ভারতীয় সংবাদ ম্যাগাজিন ‘ covert’-এ। আমি ওই সংবাদ ম্যাগাজিনের নিয়মিত না হলেও অনিয়মিত ওয়েবপাঠক ছিলাম, এবং এই সুপারিশকৃত লিন্কে একবার ওখান খেকে কিছু ফিচারের লিন্কও দিয়েছিলাম। কিন্তু বেশ কিছু দিন হয় এই সংবাদ ম্যাগাজিনের ওয়েব সাইট কাজ করছে না, কেন বলতে পারব না, তবে কাজ করলে এই বিরল সাক্ষাৎকারের ইংরেজি সংস্করণটাও পাঠকরা পড়ে দেখতে পারতেন। ‘কালের কণ্ঠ’-এর সাথে জড়িত কেউ যদি মূল ইংরেজি সাক্ষাৎকারটি এখানে তুলে দিতে পারতেন তাহলে খুব ভাল হত।

  13. মাসুদ করিম - ১৭ মে ২০১০ (১০:০৭ পূর্বাহ্ণ)

    সমুদ্রগর্ভে তেলের অনুপ্রবেশ সামুদ্রিক জীবনচক্রের বড় ধরনের ক্ষতি করে। সমুদ্রে এক মেট্রিক টন তেল বারো বর্গ কিলোমিটার এলাকা দূষিত করে। এখানে দেখুন রিয়ানভস্তির ইনফোগ্রাফিক্স : How oil spills endanger sea life। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন তেল এর মধ্যে মেক্সিকো উপসাগরে অনুপ্রবেশ করেছে, তার মানে প্রায় ছত্রিশ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা এর মধ্যেই দূষিত হয়ে পড়েছে। আমেরিকান সার্ভে এর মধ্যেই জানাচ্ছে যে সাম্প্রতিক ‘ব্রিটিশ পেট্রোলিয়্ম’-এর মেক্সিকো উপসাগরের তলদেশের তেলের পাইপলাইনের ছিদ্রের কারণে সমুদ্র তলদেশের ক্ষতি এবিষয়ে করা বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক ধারণার চেয়ে অনেক অনেক বেশি হবে।

    The gulf of Mexico oil spill may be many times larger than realised, with vast amounts of oil spilling out in deep undersea “plumes” which cannot be seen from the surface, scientists suggested yesterday, in a development which put yet more pressure on Britain’s oil giant BP to cap the leaking well as soon as possible.

    But in a first glimmer of positive news since the accident, BP reported last night that it had began successfully to extract both oil and gas to a ship via a more than mile-long tube inserted into the mouth of the leak on the seabed. An earlier attempt on Saturday to bring oil to the surface had to be suspended after the pipe became snagged.

    Kent Wells, a BP vice president in Houston, refused to say exactly how much oil was being captured by the tube or put any kind of figure on the proportion of the leak that was being tamed. He said that measurements were being taken and enginners will know in the next day or two. But he added: “It will take a little time. We will look to capture as much oil as we can.”

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে

    তেলক্ষেত্রের এই দুর্ঘটনা নিয়ে প্রথম আলো গার্ডিয়ান অনলাইনের খবরের সূত্রে লিখছে

    মেক্সিকো উপসাগরে তেলক্ষেত্রে বিস্ফোরণে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণে নেওয়া পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে সাগরে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা। স্থানীয় জেলেরা সতর্ক করেছে, এতে উপসাগরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে।
    যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের কাছে উপসাগরে ওই তেলক্ষেত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোম্পানি ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম (বিপি) এই পরিবেশ বিপর্যয় সামাল দিতে সম্প্রতি নতুন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কোম্পানিটি গভীর সাগরে এক ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের কারণে সাগরের প্রাণিকুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

    পড়ুন এখানে

  14. মাসুদ করিম - ২২ মে ২০১০ (৯:৪৭ অপরাহ্ণ)

    এই প্রথম দেশের বাহিরে উত্তর কোরিয়ার চিত্রশিল্প ও স্থাপত্যশিল্পের প্রদর্শনী হচ্ছে। ভিয়েনায় ১৯ মে থেকে ০৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী, মিউজিয়াম অফ এপ্লাইড এন্ড কন্টেম্পোরারি আর্ট-এর এক্সিবিশন হলে। প্রদর্শনীর শিরোনাম FlOWERS FOR KIM IL SUNG

    The show contains around 100 oil and ink pictures, a representative selection of posters, and a model of the ”Chuch’e Tower,” the landmark of Pyongyang, and is rounded off by architectural drawings and photographs. For the first time, 16 portraits of the two most senior leaders of the country, Kim Il Sung and Kim Jong II , are exhibited. Generally they depict father and son together with representatives of the people, including factory workers,
    soldiers and peasants as well as children, and in a variety of settings. In the paintings, it is mainly the heroic acts of the revolution that are depicted, from the beginnings of the
    Democratic People’s Republic and the creation of the “Workers’ Paradise”. So-called bourgeois forms of art, such as for example abstract art, are the subject of critical opposition, comparable with the situation in the former Soviet Union. Socialist Realism was long considered the prevailing style.

    এই প্রদর্শনী নিয়ে দক্ষিন কোরিয়ার পত্রিকা ‘দি কোরিয়া টাইমস’-এর স্টাফ রিপোর্টার ইনেস মিন লিখছেন

    One hundred thirty works from North Korea are being shown for the first time outside the country in Vienna, in the world’s largest exhibition of its kind that opened Wednesday.

    The Austrian Museum of Applied Arts (MAK) is showcasing “Flowers for Kim Il Sung” in collaboration with the Korean Art Gallery in North Korea. Sixteen portraits of Kim Il-sung and his successor Kim Jong-il will be shown for the first time abroad, as well as 30 propaganda posters and other painted works. The architecture of the country will also be represented with a model of the Juche Tower ― the world’s highest stone tower that was built in honor of Kim Il-sung’s birthday ― including building blueprints, photographs and design sketches.

    Director Peter Noever was the mastermind behind the exhibition, which came about from his inspiration to collaborate with the isolated nation after a spontaneous trip there in 2003.

    “The impressions I gained of this country spawned the idea of exhibiting, in Vienna, the art production of this culture. I proposed the idea to the Korean Art Gallery,” Noever told The Korea Times in an email interview. “At first those responsible in the DPRK did not really know what such an intention involved, as it seemed so exotic; these works had never before been shown abroad. ”

    “In a long-term process, trust was gradually established and talks with the Minister of Culture of DPRK finally took place in 2009.”

    The works were selected in “close collaboration” with the Korean Art Gallery and a range from landscapes, urban scenes and brush paintings said Bettina Busse, the curator of the exhibition. The oldest artworks are from 1960, the newest from 2010.

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  15. মাসুদ করিম - ২২ মে ২০১০ (১০:১৩ অপরাহ্ণ)

    থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক সংকট এদেশটিকে কি এক নতুন বার্মায় পরিণত করবে? এই সম্পদশালী থাইল্যান্ড বার্মার অন্ধকারে নিপতিত হবে?

    Even two months ago, I would have said Thailand is a flawed but genuine democracy, and I would have pointed to the nonviolent behavior of the prodemocracy red shirts who took over central Bangkok in mid-March as evidence that the Thais would sort it out peacefully in the end. But a lot of people have been killed by the Thai army since then, and now I’m not so sure there will be a happy ending in Thailand.

    It’s quite possible that there will be a massacre in Bangkok, and that the military will end up back in control permanently, riding a tiger from which they cannot dismount. Then the whole country would start down the road that leads to Burmese-style tyranny, isolation and poverty.

    Thailand wouldn’t get there right away, of course. It took 40 years of repression to transform Burma from the richest country in Southeast Asia to the poorest, and Thai generals are not ill-educated thugs like their Burmese counterparts. But they would find themselves in essentially the same position: condemned to hold the whole country hostage at the point of a gun forever, lest they be punished by some later government for mass murder.

    আরো পড়ুন এখানে

  16. মাসুদ করিম - ২৪ মে ২০১০ (৪:০৯ অপরাহ্ণ)

    ১৯০৩ খ্রীস্টাব্দে চকরিয়া সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ওই সময় সুন্দরবনের আয়তন ছিল ৪৫ হাজার ৫শ বর্গমাইল**। পরবর্তীতে চকরিয়া সুন্দরবন এলাকার কিছু ভূমি কৃষি ভূমি হিসেবে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। ফলে চকরিয়া সুন্দরবনের আয়তন কমে যায়। এরপর থেকে চকরিয়া সুন্দরবনের সর্বনাশ শুরু হয়। ১৯৮০ খ্রীস্টাব্দে এ বনের আয়তন কমে ২১ হাজার একরে নেমে আসে। এরপরেও চকরিয়া থানার শাহারবিল ইউনিয়নের চরণদ্বীপ ও রিংভং মৌজার ২১ হাজার একর এলাকা নিয়ে বিতৃত ছিল এ সুন্দরবন। এ বনে মিলত কেউড়া, গেওয়া, বাইন, সুন্দরীসহ বিশ প্রজাতির গাছ। গড়ে ১০ থেকে ১৫ মিটার উচ্চতার এই গাছগুলো বনের উত্তর-পশ্চিমাংশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গড়ে উঠা ভাওয়ালী, মাওয়ালী, জেলে, মহিষ চাষী প্রভৃতি পেশাজীবি সম্প্রদায়সহ যেসব মানুষ বসবাস করত তাদের উপকূলীয় ঝড়ঝাপটা থেকে আগলে রাখত চকরিয়া সুন্দরবনের গাছগুলো। এক কথায় বলতে গেলে প্রাকৃতি সৌন্দর্যে আকড় এ সুন্দরবন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিরাপত্তা বেষ্টনী হিসেবে কাজ করত। এ জঙ্গলে অবাধ বিচরণ ছিল বাঘ, মায়া হরিণ, বনবিড়াল, হনুমান, কুমির, বন্য শুকর, বানর, শিয়াল, সরিসৃপসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও পশুপাখির আবাসস্থল। বিপুল সন্তান-সন্ততিসহ চকরিয়া সুন্দরবনকে চিরতরে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মতোই ধ্বংস করে ফেলেছে কিছু লোভী রাজনৈতিক দৃবৃর্ত্ত। এক সময় যেখানে ছিল বিতৃত ম্যানগ্রোভ অরণ্য, এখন সেখানে কেবল লোনা পানির চিংড়ি ঘের। চিংড়ি চাষের জমির নিয়ন্ত্রণহীন ও লাগামহীন বিস্তারই চিরতরে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেয় পরিবেশগতভাবে খুবই সমৃদ্ধ ও গুরুত্বর্পর্ণ এ সুন্দরবনকে।

    ** এখানে মনে হয় একর পড়তে হবে, ছাপার ভুল মনে হচ্ছে
    এখানেই এসেছেন ১৫জন জাপানী বৃক্ষপ্রেমী, তারা কাজ করছেন চকরিয়ার প্যারাবন সৃজনে।

    গত চারদিনে তারা বাইন ও নুনিয়া প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার গাছ রোপন করেছেন। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে তারা চকরিয়া ও কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকায় প্রায় এক হাজার একর প্যারাবন সৃজন করেছে। এতে এখন কয়েক লাখ গাছ রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী দলের নেতা হিরোনারী হারাদা আরো বলেন, ‘আমরা বিপন্ন পরিবেশ রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে গাছ রোপন করে যাচ্ছি। আমাদের সংগঠনে বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছে। বছরে একবার সময় বের করে ছুঁটে যায় গাছ রোপনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে।’

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে

  17. মাসুদ করিম - ২৪ মে ২০১০ (৮:৪৫ অপরাহ্ণ)

    আজকের সমকালে পাভেল পার্থ হাওরের পাহাড়ি ঢল নিয়ে লিখছেন

    দেশের মোট আয়তনের ছয় ভাগের একভাগজুড়ে বিস্তৃত হাওর এলাকার এক প্রধান দুর্ভোগ উজানের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল। হাওর-ভাটির জনগণ এই পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাতাসসহ তীব্র ঢেউকে আফাল বলেন। প্রতি বছর হাওর এলাকার একমাত্র ফসলি ঋতু বোরো মৌসুম তছনছ হয়ে যায় উজানের পাহাড়ি ঢলের তোড়ে। এ বছরও সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে (সূত্র : প্রথম আলো, ১১ এপ্রিল ২০১০)। উত্তর-পূর্ব হাইড্রোলজিক্যাল রিজিয়নের ভোগাই, সুমেশ্বরী, উমিয়াম, নয়াগাং (খাসিয়ামারা), জালুখালি (চলতি), নিতাই, চিতল, জাদুকাটা-রক্তি, সুরমা, কুশিয়ারা, ধলা, সারী-গোয়াইন, পিআইন, সোনাই-বরদল, মনু, ধলাই, জুড়ী, লংলা, খোয়াই, সুতাং, সোনাই, কোরাঙ্গী_ ভারতীয় এলাকা থেকে উৎপন্ন এই ২২টি নদী ও সীমান্তবর্তী পাহাড় থেকে নেমে আসা নানা পাহাড়িছড়ার জলধারাই আমাদের সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার এলাকার হাওর জলাভূমির জলের মূল উৎস। এককালে উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে বৃষ্টির পানি নেমে হাওর এলাকায় বর্ষাকালে তৈরি করত ঋতুভিত্তিক বন্যা, যার সঙ্গে মানুষের প্রতিবেশীয় সম্পর্ক ছিল। কখন কোন নদী দিয়ে কোন হাওরে কী মাসে এই পাহাড়ি ঢলের পানি নামবে, তার একটা নিয়মরীতি মানুষের চেনাজানা ছিল। কিন্তু চলতি সময়ে এই নিয়মরীতি সব ভেঙে গেছে, এখন যখন-তখন যে কোনো জায়গা দিয়েই যে কোনো হাওরেই নামে পাহাড়ি ঢলের পানি। পাহাড়ি ঢলের এই অকাল বন্যাই আজকের হাওরবাসীর জন্য ডেকে এনেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। মেঘালয় পাহাড়ের প্রশ্নহীন বাণিজ্যিক খনন এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোই এই নয়া দুর্ভোগের কারণ হিসেবে মনে করেন হাওরবাসী। পাহাড়ি ঢলের কবল থেকে হাওর বাঁচাতে ভাটির বাংলাদেশে একটির পর একটি বাঁধ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মসূচি নেওয়া হয়, যার একটিও হাওরে টিকে থাকতে পারছে না। উজান এলাকায় সমস্যার সমাধান না করে ভাটিতে সহস্র কোটি বাঁধ দিয়েও পাহাড়ি ঢলের এই সর্বনাশ ঠেকানো যাবে না। হাওর এলাকায় পাহাড়ি ঢলের কারণ, গতিপ্রকৃতি এবং ঐতিহাসিকতা বুঝতে হবে। একসময় হাওর সীমান্তের মেঘালয় পাহাড়, খাসিয়া পাহাড় ও জৈন্তিয়া পাহাড় ছিল প্রাকৃতিক জঙ্গলে ভরপুর এক বৈচিত্র্যময় অঞ্চল। পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিপ্রবণ এই এলাকা থেকে বর্ষার ঢল পাহাড়ি বনভূমির ওপর দিয়ে গাছের শিকড় ও তৃণগুল্মের ভেতর দিয়ে এক প্রতিবেশীয় স্বরলিপি মেনে গড়িয়ে নামত হাওর-ভাটিতে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতের এসব পাহাড় আজ বনশূন্য। করপোরেট পাথর, কয়লা ও ইউরেনিয়াম খনি কোম্পানিগুলো এসব পাহাড়কে রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। ফলে পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিপ্রবণ এ এলাকায় কিছুটা বৃষ্টি হলেও তা কোনো ধরনের ছড়া বা নালা দিয়ে গড়িয়ে না নেমে প্রবল তোড়ে নামছে হাওর-ভাটিতে।

    এ সমস্যা সমাধানে কী করতে হবে

    হাওর এলাকার পাহাড়ি ঢলের সমস্যার সমাধানে বিষয়টিকে আন্তঃরাষ্ট্রিক এক প্রতিবেশীয় রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করেই সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কারণ উজানের পাহাড়ে অন্যায় বাণিজ্যিক খননের ফলেই দিনে দিনে বালি পড়ে হাওর এলাকার সীমান্ত নদীগুলোর গভীরতা কমে গেছে। উজানের এই অন্যায্য উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে প্রশ্ন করা জরুরি, জরুরি হাওর জনপদের কৃষিজীবনের অর্থনৈতিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা। জরুরি এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের আইনগত পদক্ষেপ এবং সুস্পষ্ট হাওরকেন্দ্রিক নীতিমালা। বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এক অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে ‘হাওর উন্নয়ন বোর্ড’ গঠিত হয় এবং ১৯৮২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২০০০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে দেশের সব হাওর ও জলাভূমি সমন্বিতভাবে উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে পুনরায় ‘বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড’কে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংযুক্ত অফিস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে (নং পাসম-উঃ৫/বিবিধ-১৯/২০০০/৩৮৩, সূত্র : বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, ২৬/৯/২০০০)। পরে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হাওরের জন্য ১৪ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় হাওর উন্নয়ন কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু কোনোভাবেই হাওরের জন্য হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড সক্রিয় এবং হাওরবান্ধব হয়ে উঠছে না। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন হাওর এলাকার পাহাড়ি ঢলের বিষয়ে এখনও কোনো জোরদার আলোচনা তোলেনি। সার্ক-দক্ষিণ এশীয় ফোরামসহ নানা আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজেদের প্রতিবেশীয় ন্যায্যতা আদায়ে বাংলাদেশকে শিরদাঁড়া খাড়া করতে হবে।

    হাওর অঞ্চলে কী সুন্দর সুন্দর নামের ধান হতো, পাহাড়ি ঢলে ফসল বাঁচাতে আবার সে প্রজাতিগুলোকে কি ফিরিয়ে আনা যায়?

    পাহাড়ি ঢলের কবল থেকে ফসল বাঁচাতে হাওর এলাকার জন্য দেশীয় গভীর জলের ধানজাত এবং আগাম জাত ছাড়া কোনো উপায় নেই। এককালে হাওরে জন্মাত টেপী, বোরো, রাতাশাইল, লাখাই, মুরালি, চেংড়ি, সমুদ্রফেনা, হাসিকলমী, কাশিয়াবিনি্ন, দুধরাকি, দুধসাগর, লাটলি, মারতি, তুলসীমালা, আখনিশাইল, গাছমালা, খৈয়াবোরো, দেউড়ি, কন্যাশাইল, বিচিবোরো, লোলাটেপী, পশুশাইল, হাঁসের ডিম, গুয়ারশাইল, বেতী, ময়নাশাইল, গদালাকি, বিরঅইন, খিলই, ছিরমইন, আগুনী, গুলটিহি, ল্যাঠা, জাগলীবোরোর মতো অবিস্মরণীয় সব গভীর পানির ধানজাত। উপমহাদেশের প্রথম গভীর পানির ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৩৪ সালে হাওরের হবিগঞ্জ জেলার নাগুড়াতে। প্রশ্নহীনভাবে সেই প্রতিষ্ঠানটিকে বদলে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র। গবেষণা ও উন্নয়নের নাম করে গভীর পানির ধানজাতগুলো ডাকাতি করেছে ফিলিপাইনে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ইরি) ও বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক কৃষি পরামর্শক দলের (সিজিআইএআর) মতো প্রতিষ্ঠান। হাওরে হাওরে এখনও টিকে আছে গভীর জলের ধানজাতের কিছু সাহসী জাত। কৃষকদের নিয়ে এসব জাতের চাষ ও বিকাশে রাষ্ট্রকেই নিতে হবে প্রধান ভূমিকা। পাহাড়ি ঢল মোকাবেলাসহ হাওর এলাকায় যত ধরনের উন্নয়ন অবকাঠামো হয়, তার কোনোটিতেই প্রাথমিক পরিবেশগত প্রভাবগুলো মূল্যায়ন করা হয় না। ফলে অর্থ, শ্রম, সময় যেমন ব্যয় হয় তার চেয়ে ভোগান্তি হয় বেশি জনগণের এবং হাওর বাস্তুসংস্থান উল্টেপাল্টে যায়। হাওর এলাকায় যে কোনো ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন অবশ্যই হাওরবাসী জনগণের সম্পূর্ণ পূর্বানুমতি ও অংশগ্রহণে করতে হবে। তা না হলে পাহাড়ি ঢলজনিত সমস্যার স্থায়িত্বশীল সমাধান কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

    পুরো পড়ুন এখানে

  18. মাসুদ করিম - ২৫ মে ২০১০ (৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ)

    বাদক চলে গেছেন অনেক আগে, এবার গায়কও চলে গেলেন। সোমবার সকাল ৯টায় মারা গেছেন অভিনেতা তপেন চট্টোপাধ্যায়

  19. মাসুদ করিম - ২৫ মে ২০১০ (১০:৩১ পূর্বাহ্ণ)

    ২৩ মে ২০১০, রোববার, মুসা ইব্রাহীম এভারেস্ট জয় করলেন। বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম। কালের কণ্ঠে আবেদ খান আজকে বিশেষ মন্তব্য প্রতিবেদনে লিখছেন

    বিশেষ মন্তব্য প্রতিবেদন
    অভিবাদন, হে নতুন যৌবনের দূত!
    আবেদ খান
    মনে পড়ছে সেই তেপ্পান্ন সালের কথা। তখন আমি খুব ছোট। বয়স কেবল আট পেরিয়েছে (পাঠক, বয়স-বাণিজ্য করার অভ্যাস আমার নেই। কখনো কোনো কারণে ওটা বাড়ানো বা কমানোর প্রয়োজন বোধ করিনি এবং দরকারও পড়েনি)। আমাদের বাড়িতে সব দৈনিক পত্রিকা আসত। পিতা-ভ্রাতার কর্মসূত্রে দৈনিক আজাদ আসত একাধিক। আর দিন দু-তিন বিলম্বে হলেও কলকাতা থেকে আসত আনন্দবাজার, অমৃতবাজার, সত্যযুগ ও ইংরেজি দ্য স্টেটসম্যান। এখন আর মনে নেই কলকাতার, না ঢাকার_কোন কাগজের শিরোনাম ছিল ‘পদানত মহাশৃঙ্গ’। আট কলামজুড়েই হেডিং (তখন আট কলাম ছিল, না ছয় কলাম মনে নেই)। অর্থাৎ তেপ্পান্ন সালের ২৯ মে এভারেস্ট শৃঙ্গের শীর্ষে উঠেছিলেন সর্বপ্রথম দুই মানবসন্তান_এডমুন্ড হিলারি ও শেরপা তেনজিং নোরগে। বিশ্বজয়ীর সম্মান পেয়েছিলেন তাঁরা দুজন। পরে হিলারি ‘স্যার’ উপাধিতেও ভূষিত হয়েছিলেন।
    সাতান্ন বছর পর সেই মে মাসেই এভারেস্টশৃঙ্গের শীর্ষবিন্দুতে উঠে দাঁড়ালেন বাংলাদেশের এক যুবক, মুসা ইব্রাহীম, পেশায় সাংবাদিক, হাতে তাঁর বাংলাদেশের পতাকা। আমি কল্পনায় দেখতে পাচ্ছি, তাঁর বলিষ্ঠ হাতে পৃথিবীর শিখরে প্রোথিত হলো বাংলাদেশের পতাকা। প্রচণ্ড হিমেল বাতাসের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে উড়ছে পতাকা। মুসা বিশাল আকাশে দুহাত মেলে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ_নিশ্চয়ই ভাবলেন দেশের কথা, পরিবারের কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা। তারপর গৌরবোজ্জ্বল পতাকার দিকে চোখ রাখলেন। অসীম আকাশের দিকে মাথা তুলে অপার আনন্দে উড়ছে লাল বৃত্ত বক্ষে ধারণ করা সবুজ পতাকাটি। মুসার ওই মুহূর্তটি যদি এভাবে ঘটে নাও থাকে, ক্ষতি নেই; আমার কল্পনার চোখে বিজয় এভাবেই প্রতিভাত হয় সব সময়ই।
    মনে পড়ছে একাত্তরের কথা। ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্দসমর্পণের পর বাংলাদেশের যে পতাকাকে নতমস্তকে অভিবাদন জানাতে হয়েছিল নিয়াজিকে, সেই পতাকার গৌরব আর এভারেস্টের শীর্ষবিন্দুতে উড়তে থাকা পতাকার গৌরব কি একসূত্রে গ্রথিত হয়ে গেল না?
    হয়তো মুসার স্বপ্ন ছিল একদিন সে ওই মহাশৃঙ্গের শীর্ষদেশে উঠে চিৎকার করে বলবে, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। সেই স্বপ্ন এখন আর স্বপ্ন নয়। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় হয়। যে যত বড় স্বপ্ন দেখতে পারে এবং বড় স্বপ্নের পথে হাঁটতে পারে, সে নিজেকে নিয়ে যেতে পারে ঠিক ততখানি উচ্চতায়। হতাশার কৃষ্ণবক্ষ বিদীর্ণ করে আশার আলোকময় পথ সৃষ্টি করার দায়িত্ব আজ নতুন প্রজন্মের_মুসা ইব্রাহীম তারই প্রতিনিধি।
    তরুণ প্রজন্মকে কটাক্ষ করে যারা, যারা বলে এই প্রজন্ম সব কিছু লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে; আমি তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলি, ওদের ভেতরের সৃজনশীলতাই ওদের অস্থির করে তুলেছে। আমরা যারা তাদের পথ দেখাতে পারিনি কিংবা পারছি না, নিজেদের ক্ষুদ্র ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ওদের বারবার ব্যবহার করে চলেছি; সেই আমরাই তো দায়ী ওদের বিভ্রান্তির জন্য। এ সব কিছু তুচ্ছ করেই মুসা ইব্রাহীমরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। একদিন সব অন্ধকার অপসারণ করে বাংলার নতুন প্রজন্ম মাথা তুলে দাঁড়াবেই। তোমাকে অভিনন্দন, মুসা_অভিবাদন, হে নতুন যৌবনের দূত।

  20. মাসুদ করিম - ৩১ মে ২০১০ (১:২৩ পূর্বাহ্ণ)

    রোববার, ৩০ মে ২০১০, প্রথম আলোর বিশেষ আয়োজন : জিয়া-মঞ্জুর হত্যা ফিরে দেখা। চারটি লেখা স্থান পেয়েছে এই বিশেষ আয়োজনে তার মধ্যে তিনটি লেখাই জিয়া নিহত হওয়ার সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীর ইংরেজি বই Assassination of Ziaur Rahman and Aftermath থেকে নির্বাচিত অংশের ভাষান্তর। আর চতুর্থ লেখাটি সাংবাদিক সোহরাব হাসানের ‘জিয়া : সামরিক ও সিভিলিয়ান দ্বন্দ্ব’।

    প্রশিক্ষিত সেনাসদস্যরা ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করার মিশন নিয়েই এসেছিলেন। আমরা চারজন (বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি ও আমি) তখন যে বিষয়টি বুঝতে পারছিলাম না সেটি হলো, রাষ্ট্রপতি কি বিপথগামী সেনাদের হাতে নিহত হয়েছেন নাকি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত আমরা এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাইনি।
    অন্য তিনজনকে কম্পাউন্ডে রেখে এসপি ও একজন স্পেশাল ব্রাঞ্চ অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে আমি দোতলায় সিঁড়ির কাছেই দেখলাম, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গার্ডের লাশ পড়ে আছে।
    দোতলায় উঠেই দেখি রাষ্ট্রপতির সুইটের সামনেই তৃতীয় লাশটি পড়ে আছে। ফ্লোরে লাশটা সাদা একটা চাদর দিয়ে ঢাকা। রাষ্ট্রপতির গার্ডদের একজন লাশের পাশেই পড়ে ছিলেন।
    আমার সঙ্গে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাটি আস্তে করে বললেন, ‘স্যার, ইনিই প্রেসিডেন্ট জিয়া।’ কাপড় সরিয়ে দেখলাম পুরো দেহটা ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। মনে হচ্ছিল অনেকগুলো বন্দুক থেকে একযোগে তাঁর ওপর গুলি করা হয়েছে। মুখের যে পাশটাতে গুলি লাগেনি, সে পাশে গোঁফ দেখে কোনো রকমে তাঁকে চেনা যাচ্ছিল। মুখের অন্য দিকটা একেবারে উড়ে গিয়েছিল।
    সামনে যা দেখছি, তখনো তা বিশ্বাস হতে মন চাইছিল না। যে মানুষটি আমার সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন, তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি; তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা; তিনি তৎকালীন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস, তাঁর লাশের পাশে সেই বিশেষ বাহিনীর এক সদস্যকে দেখলাম। জীবন দিয়ে হলেও রাষ্ট্রপতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল যাঁদের, তাঁরা সবাই বেঁচে আছেন, আর তিনি শহীদ হয়েছেন। এ কারণেই প্রশ্ন জাগে, ভুলটা আসলে কোথায় ছিল?

    পড়ুন এখানে

    সেনানিবাসের দিকের সড়কটিতে যেন অঘোষিত কারফিউ চলছে। কোথাও কেউ নেই। কোনো সামরিক গাড়ি বা সেনাকে দেখা গেল না। এমনকি সেনানিবাসে ঢোকার প্রধান গেটটিতেও কেউ পাহারায় ছিল না। স্বাভাবিক সময়ে এদিক দিয়ে যেতে গেলে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। ব্রিগেডিয়ার আজিজের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারের দিকে যাওয়ার সময় আমি ব্যারাকের আশপাশে বেসামরিক পোশাকে কিছু সেনাকে ঘোরাফেরা করতে দেখলাম। ব্রিগেডিয়ার আজিজের সদর দপ্তরকে মনে হচ্ছিল ট্রেনস্টেশনের মতো, যেখানে লোকজন কয়েক দিন হলো একটি ট্রেন আসার জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করছে। সেখানে ইউনিফর্ম পরা ও ইউনিফর্ম ছাড়া এমন কয়েকজন অফিসারকে আমি দেখলাম, যাঁদের দুই দিন আগেই মঞ্জুরের কনফারেন্স রুমে দেখেছি। এঁদের অনেকেই দাড়ি কামাননি। দেখে মনে হয় ইউনিফর্ম পরেই তাঁরা রাতে ঘুমিয়েছেন। কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন কুমিল্লা ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সামাদ। তিনি আমাদের জানালেন, কুমিল্লা থেকে তিনি চট্টগ্রাম ডিভিশনের দায়িত্ব নিতে এসেছেন।
    ক্লান্ত-বিধ্বস্ত ব্রিগেডিয়ার আজিজ আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন এবং বসতে ইশারা করলেন। তাঁর কাছ থেকেই জানলাম যে জিয়ার লাশ নেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে একটি হেলিকপ্টার রওনা দিয়েছে। এর মধ্যে কাজ হলো জিয়ার লাশটিকে পাঠানোর উপযুক্ত করা। এই দায়িত্ব তিনি দিলেন সেনাবাহিনীর চিকিৎসক লে. কর্নেল তোফায়েলকে। এসব কাজ চলার সময় এবং সেই হেলিকপ্টারের জন্য অপেক্ষা করতে করতে আমি দেখলাম সেনানিবাসজুড়ে কেমন নৈরাজ্য বিরাজ করছে।
    একপর্যায়ে জিয়ার মরদেহ প্রস্তুত করা হলো। ব্রিগেডিয়ার আজিজের সঙ্গে আমি লাশ দেখতে সেনা হাসপাতালের দিকে রওনা হলাম। কফিন আটকে দেওয়ার আগেই লাশ দেখতে হবে। আবার সেই ভয়ংকর দৃশ্যের মুখোমুখি হলাম। লাশ সাদা কাফনে মোড়া, কেবল মুখ দেখা যাচ্ছে। তাঁর মুখের একপাশ উড়ে গেছে। কিন্তু অন্য পাশে প্রয়াত রাষ্ট্রপতির বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গোঁফ দেখে তাঁকে চেনা যাচ্ছিল।

    পড়ুন এখানে

    মঞ্জুরকে বের করে থানার উঠোনে রাখা সেনাবাহিনীর গাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হলো। থানা ভবন থেকে বের হওয়া মাত্র মঞ্জুরকে সেই ক্যাপ্টেন কারাতে-কায়দায় ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেন। মঞ্জুরের স্ত্রী ও দুই সন্তানের সামনে দুজন সেনার সহায়তায় তিনি দড়ি দিয়ে দ্রুত তাঁকে বেঁধে ফেলেন। সেনা কর্মকর্তাটি অকারণে এই ঘটনাটি ঘটান। মঞ্জুর এই দ্বিতীয় গ্রেপ্তার (প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পুলিশের হাতে) প্রতিহত করার কোনো চেষ্টাই করেননি। তা ছাড়া তিনি সশস্ত্রও ছিলেন না। কোনো সাধারণ অপরাধীর মতোই তাঁকে ঠেলে দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর পিকআপের পেছনের অংশে। সশস্ত্র সেনারা তাঁর পাহারায় বসে। ক্যাপ্টেন তখন মঞ্জুরের পরিবারের সদস্যদের গাড়ির সামনের ভাগে তুলে নিয়ে সেনানিবাসের দিকে যাত্রা করেন।
    সরকারি নির্দেশে মঞ্জুরকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা কিছুক্ষণের জন্য আমাদের বিবেককে দংশন করে। কিন্তু আইনত কারও কিছু করার ছিল না। মঞ্জুর সেনা কর্মকর্তা ছিলেন আর আপাতদৃষ্টিতে তাঁর নেতৃত্বে সংঘটিত সেনাবিদ্রোহে দেশের রাষ্ট্রপতি নিহত হন। সুতরাং তিনি আর সেনাসদস্য নন—তাঁর এ দাবি সত্ত্বেও সামরিক আইনে তাঁর বিচার করার অধিকার সেনাবাহিনীর ছিল। অধিকন্তু, সেনাবাহিনীর হাতে মঞ্জুরকে অর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। এই সিদ্ধান্ত আমাদের যতই ক্ষুব্ধ করুক না কেন, এটাই চূড়ান্ত। আমরা ভেবেছিলাম, বেসামরিক কর্তৃপক্ষের আগেই মঞ্জুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সেনাবাহিনী তাঁকে তাদের হেফাজতে নিতে চাইছিল। জিজ্ঞাসাবাদের বাইরে সেনা কর্তৃপক্ষের অন্য কোনো অভিসন্ধি থাকতে পারে, আমরা বুঝতে পারিনি।

    কিছুদিন পর মঞ্জুর হত্যার আগের পরিস্থিতি আমার কাছে আরও স্পষ্ট করেন সেনাবাহিনীর এক চিকিৎসক। মাত্র কয়েক দিন আগে তিনি জিয়ার মৃতদেহ প্রস্তুত করেছিলেন। এবারও মঞ্জুরকে সমাধিস্থ করার আগে তাঁকেই মৃতদেহ প্রস্তুত (আঘাতের জায়গাগুলোতে ব্যান্ডেজ বাঁধার কাজ) করতে হয়েছিল। (সমাধিস্থল চিকিৎসকের অজানা, অন্তত আমাকে তিনি বলেননি কোথায় মঞ্জুরকে কবর দেওয়া হয়।)
    মঞ্জুরকে সেনানিবাসে আনার পর একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা (একজন ব্রিগেডিয়ার) তাঁর কুঠুরিতে তাঁকে দেখতে যান (চিকিৎসক সেনা কর্মকর্তাটির নাম বলেননি)। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাটির উদ্দেশ্য ছিল একটাই—মঞ্জুরকে শেষ করে দেওয়া। বলা হয়, তিনি ঢাকা থেকে এসেছিলেন এবং সেখানকার সেনা কর্মকর্তাকে বলেছিলেন, তিনি মঞ্জুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেছেন। তিনি ভেতরে ঢোকেন, পিস্তল বের করে মঞ্জুরকে গুলি করেন এবং বেরিয়ে যান—পুরো ঘটনাটি ঘটে পরিকল্পনামাফিক। চিকিৎসককে যখন আঘাতের স্থানে ব্যান্ডেজ বাঁধতে বলা হয় ততক্ষণে মঞ্জুর মারা গেছেন, একটি মাত্র গুলি তাঁর মাথা ভেদ করে চলে গেছে, অনেক বুলেটের চিহ্ন তাঁর গায়ে ছিল না।

    পড়ুন এখানে
    এরশাদ তো এখনো বেঁচে আছে। এভাবে মঞ্জুরকে ঢাকা থেকে এসে কে গুলি করল, তাকে জিজ্ঞাসা করলে তো জানা যাবে — মনে হয় সেভাবে জিয়াকে কিভাবে মঞ্জুররা খুন করল, তাও জানা যাবে — এরশাদকে আর মনে হয় এজনমে কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না।

    জিয়াউর রহমানের ক্ষমতারোহণের আগেও যেমন হত্যার রাজনীতি ছিল, তেমনি তাঁর মৃত্যুর পরও সেই অপরাজনীতি বন্ধ হয়নি। কখনো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, কখনো দেশ ও জাতি উদ্ধারের নামে সশস্ত্র পন্থায় ক্ষমতার পালাবদল ঘটানো হয়েছে। ১৯৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভাবা গিয়েছিল, আমরা সেই অপরাজনীতিকে বিদায় দিতে পেরেছি। বাস্তবে তার কোনো লক্ষণ নেই।
    ক্ষমতা কাঠামোর যে সামরিক কেন্দ্র রাজনীতিক জিয়াউর রহমানকে তৈরি করেছিল, সেই সামরিক শক্তির হাতেই তাঁকে বিদায় নিতে হয়েছে। জিয়ার ক্ষমতারোহণ নিশ্চিতভাবে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু তাঁর মৃত্যু সেই সামরিক কর্তৃত্বের অবসান ঘটাতে পারেনি। নয় মাসের মাথায় সেনা প্রধান এরশাদের ক্ষমতারোহনের সঙ্গে ৩০ মের রক্তাক্ত ঘটনার কোনো যোগসূত্র ছিল কি না সে প্রশ্ন অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।

    পড়ুন এখানে

  21. মাসুদ করিম - ৩১ মে ২০১০ (১০:২০ পূর্বাহ্ণ)

    ২৫ বছর, ১৯৮৫ থেকে ২০১০, গরবাচেভের পেরেস্ত্রোইকা রাশিয়ার reconstruction চেয়েছিল। কিন্তু সেই reconstruction এখনো চ্যালেঞ্জের মধ্যেই আছে।

    The challenges facing Russia today in some ways resemble those Mr. Gorbachev dealt with 25 years ago. In his annual state-of-the-nation address in November 2009, President Dmitry Medvedev said the Russian economy needed to be urgently reformed to overcome its “primitive structure, a humiliating dependence on raw materials” and a “shamefully low competitiveness.” Mr. Medvedev called for the all-round modernisation of Russia and identified five thrust sectors that should act as locomotives for the rest of the economy: nuclear energy, space technology, IT industries, innovative pharmaceuticals and energy production and saving technologies.

    In pursuing his modernisation agenda, Mr. Medvedev faces the same dilemma as Mr. Gorbachev. Like Mr. Gorbachev, he is aware that economic modernisation can succeed only in a democratic environment that allows a “free competition of ideas” and enables people “to assume responsibility for the state of affairs in their home village or town, and realise that only an active position can set the heavy machine that is government bureaucracy in motion.”

    বিস্তারিত পড়ুন এখানে

    পেরেস্ত্রোইকা নিয়ে গরবাচেভ লিখছেন

    I am often asked whether my fellow leaders of perestroika and I knew the full scope of what we had to do. The answer is yes and no — not fully and not immediately. What we had to abandon was quite clear: the rigid ideological, political and economic system; the confrontation with much of the rest of the world; and the unbridled arms race. In rejecting all that, we had the full support of the people; those officials who later turned out to be die-hard Stalinists had to keep silent and even acquiesce.

    It is much more difficult to answer the follow-up question: What were our goals, what did we want to achieve? We came a long way in a short time — moving from trying to repair the existing system to recognizing the need to replace it. Yet I always adhered to my choice of evolutionary change — moving deliberately so that we would not break the backs of the people and the country and would avoid bloodshed.

    While the radicals pushed us to move faster, the conservatives stepped on our toes. Both groups must bear most of the blame for what happened afterward. I accept my share of responsibility as well. We, the reformers, made mistakes that cost us, and our country, dearly.

    We also acted too late in reforming the union of the republics, which had come a long way during their common existence. They had become real states, with their own economies and their own elites. We needed to find a way for them to exist as sovereign states within a decentralized democratic union. In a nationwide referendum of March 1991, more than 70 percent of voters supported the idea of a new union of sovereign republics. But the coup attempt that August, which weakened my position as president, made that prospect impossible. By the end of the year, the Soviet Union no longer existed.

    We made other mistakes, too. In the heat of political battles we lost sight of the economy, and people never forgave us for the shortages of everyday items and the lines for essential goods.

    Still, the achievements of perestroika are undeniable. It was the breakthrough to freedom and democracy. Opinion polls today confirm that even those who criticize perestroika and its leaders appreciate the gains it allowed: the rejection of the totalitarian system; freedom of speech, assembly, religion and movement; and political and economic pluralism.

    Nevertheless, stabilizing the country cannot be the only or the final goal. Russia needs development and modernization to become a leader in an interdependent world. Our country has not moved closer to that goal in the past few years, even though for a decade we have benefited from high prices for our main exports, oil and gas. The global crisis has hit Russia harder than many other countries, and we have no one but ourselves to blame.

    Russia will progress with confidence only if it follows a democratic path. Recently, there have been a number of setbacks in this regard.

    For instance, all major decisions are now taken by the executive branch, with the Parliament rubber-stamping formal approval. The independence of the courts has been thrown into question. We do not have a party system that would enable a real majority to win while also taking the minority opinion into account and allowing an active opposition. There is a growing feeling that the government is afraid of civil society and would like to control everything.

    We’ve been there, done that. Do we want to go back? I don’t think anyone does, including our leaders.

    I sense alarm in the words of President Dmitri Medvedev when he wondered, “Should a primitive economy based on raw materials and endemic corruption accompany us into the future?” He has also warned against complacency in a society where the government “is the biggest employer, the biggest publisher, the best producer, its own judiciary … and ultimately a nation unto itself.”

    I agree with the president. I agree with his goal of modernization. But it will not happen if people are sidelined, if they are just pawns. If the people are to feel and act like citizens, there is only one prescription: democracy, including the rule of law and an open and honest dialogue between the government and the people.

    What’s holding Russia back is fear. Among both the people and the authorities, there is concern that a new round of modernization might lead to instability and even chaos. In politics, fear is a bad guide; we must overcome it.

    Today, Russia has many free, independently minded people who are ready to assume responsibility and uphold democracy. But a great deal depends now on how the government acts.

    বিস্তারিত পড়ুন

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.