সুপারিশকৃত লিন্ক: আগস্ট ২০১৬

মুক্তাঙ্গন-এ উপরোক্ত শিরোনামের নিয়মিত এই সিরিজটিতে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। কী ধরণের বিষয়বস্তুর উপর লিন্ক সুপারিশ করা যাবে তার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম, মানদণ্ড বা সময়কাল নেই। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই তাঁরা মন্তব্য আকারে উল্লেখ করতে পারেন এখানে।
ধন্যবাদ।

আজকের লিন্ক

এখানে থাকছে দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকা, ব্লগ ও গবেষণাপত্র থেকে পাঠক সুপারিশকৃত ওয়েবলিন্কের তালিকা। পুরো ইন্টারনেট থেকে যা কিছু গুরত্বপূর্ণ, জরুরি, মজার বা আগ্রহোদ্দীপক মনে করবেন পাঠকরা, তা-ই সুপারিশ করুন এখানে। ধন্যবাদ।

১৩ comments

  1. মাসুদ করিম - ৩ আগস্ট ২০১৬ (৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ)

    পাঁচ বছর পর আবার ফিরে এলো বঙ্গ, বাংলা, পশ্চিমবঙ্গ, Bengal, West Bengal জল্পনা।

    পশ্চিমবঙ্গ এবার বঙ্গ বা বাংলা

    পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ বা ‘বঙ্গ’ হোক। মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমনই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ ব্যাপারে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। তিনদিন চলবে এই অধিবেশন। ২৬ আগস্ট শোক প্রস্তাব। ২৯, ৩০ আগস্ট নাম বদল নিয়ে আলোচনা। তার আগে ১৮ আগস্ট সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হবে বলে মঙ্গলবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জি জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সেখান থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাজ্যের নাম ইংরেজিতে হবে ‘বেঙ্গল’। পার্থবাবু বলেন, ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠনের পরই কেন্দ্রের কাছে এ রাজ্যের নাম পরিবর্তনের অনুমোদন চেয়েছিল। কিন্তু গত ৫ বছর তার সবুজ সঙ্কেত পাওয়া যায়নি। বাংলার মানুষের স্বার্থে, বাংলার ঐতিহ্য বজায় রাখতে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বৈঠকগুলিতে সামনের সারিতে থাকতে রাজ্যের এই উদ্যোগ। প্রথম দফায় সাফল্য আসেনি। তাই দ্বিতীয় দফায় নতুন করে এই প্রস্তাব নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আলোচনা করার জন্য ২৬ আগস্ট ফের বিধানসভা বসবে। অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জিকে এ বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০০০ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সময়ে বিধানসভায় এই মর্মে একটি সর্বদলীয় প্রস্তাব হয়। সেই সময় বিধানসভায় সরকারের প্রস্তাব ছিল, একদা অবিভক্ত বাংলা, দেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে বিভক্ত হয়েছে। পাকিস্তানের দিকে বাংলার যে অংশটা গিয়েছিল, সেই পূর্ববঙ্গ নাম পরিবর্তিত হয়ে পূর্ব পাকিস্তান হয়। পরে স্বাধীন হয় এবং ‘‌বাংলাদেশ’‌ নামে নতুন দেশ গঠিত হয়। অবিভক্ত বাংলার যে অংশটা ভারতে, তার আর পশ্চিমবঙ্গ নামটা রাখার মানে হয় না। সরকারি দলের প্রস্তাব ছিল নাম হোক ‘‌বঙ্গপ্রদেশ’‌ বা ‘‌বাংলা’‌। তখন তৃণমূলের শোভনদেব চ্যাটার্জি, কংগ্রেসের সৌগত রায় ‘‌বঙ্গপ্রদেশ’‌ না করে রাজ্যের নাম ‘‌বঙ্গ’‌ রাখার প্রস্তাব দেন। সেই সময় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি। বিধানচন্দ্র রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন একটা সময় পশ্চিমবঙ্গকে বিহারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। রাজ্যের মানুষের তীব্র বিরোধিতায় সেই উদ্যোগ ফিরিয়ে নেওয়া হয়। গত শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাংলা থেকে বিহার ও ওড়িশা কেটে নিয়ে আলাদা রাজ্যের চেহারা নেয়। মঙ্গলবার রাজ্যের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। পরে এ বিষয়ে পার্থ চ্যাটার্জি সাংবাদিকদের জানান, ২৬ আগস্ট বিধানসভার যে অধিবেশন বসবে, সেখানে শুধুমাত্র এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হবে। বি এ কমিটিকে এই অনুরোধই করা হবে। ওই দিন সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী–সহ অন্যদের স্মরণে শোক প্রস্তাব থাকবে। ২৯ এবং ৩০ আগস্ট রাজ্যের নাম বদলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্যের নাম ইংরেজিতেও ‘‌পশ্চিমবঙ্গ’‌ করতে চেয়ে কেন্দ্র সরকারের অনুমোদন চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট সরকার ২০১১ সালের ২ সেপ্টেম্বর এই মর্মে একটি প্রস্তাব আনে বিধানসভায়। প্রস্তাবটি ছিল ইংরেজি ওয়েস্ট বেঙ্গলের পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গ লেখা হবে। ইংরেজি বর্ণমালায় ডব্লুর অনেক আগে পি আসে বলে রাজ্যের প্রতিনিধি ফিনান্স কমিশন কিংবা আন্তঃরাজ্য মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় আলোচনাসভায় কিছুটা আগে কথা বলার সুযোগ মিলবে। রাজ্যের দাবিদাওয়া উত্থাপনের সুযোগ পাবে। কেন্দ্রীয় সরকারের বৈঠকগুলিতে ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে রাজ্যের সুযোগ হয় সবশেষে। অনেক সময় দেখা যায়, কারও আর ধৈর্য থাকে না। সময়ও না থাকার কারণে অনেক সময় বাদও পরে যেতে হয়। সম্প্রতি আন্তঃরাজ্য পরিষদীয় বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যা দূর করতে ইউ পি এ সরকারের আমলে এ ধরনের বৈঠকে অনেক সময় ইংরেজি বর্ণমালার শেষ দিকের অক্ষর অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে বলতে বলা হত। কিন্তু এন ডি এ সরকারের আমলে সেরকমটা ঘটেনি। এবার পশ্চিমবঙ্গ নামটাই বদল করতে চাইছে তৃণমূল সরকার। তারা আরও এগিয়ে আসতে চায়। মন্ত্রিসভার প্রস্তাবের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্যের সব মহলেই প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সকলেই সরকারের সঙ্গে একমত, নাম বদল করাই উচিত। তবে কেউ বলছেন ‘‌বাংলা’‌ হলে ভাল। কারও মত ‘‌বঙ্গ’‌র পক্ষে।

    দেশভাগের বেদনাতেই হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ

    ১৯৪৭–‌এ স্বাধীনতা ঘোষণার আগে সিরিল র‌্যাডক্লিফের ওপর দায়িত্ব পড়েছিল পাঞ্জাব ও বাংলা ভাগের। র‌্যাডক্লিফ যখন তা পেশ করলেন, ভারি গোলমাল হল, ভুলে ভর্তি র‌্যাডক্লিফের মানচিত্র। স্বাধীনতার দিনটিতে দেখা গেল মুর্শিদাবাদে উড়ছে পাকিস্তানের পতাকা, খুলনায় ভারতের নিশান। দ্রুতই অবশ্য ত্রুটি সংশোধন হল। যথাস্থান নিল খুলনা ও মুর্শিদাবাদ। দেশ ভাগের আগে, অর্থাৎ স্বাধীনতার আগে যখন যুক্ত বাংলা, এদিককার, কলকাতার লোকে ওদিকে বরিশাল, ঢাকা গেলে বলত পূর্ববঙ্গে যাচ্ছি। এদিকে এলে আমাদের বলা হত পূর্ববঙ্গের লোক। আমরা পূর্ববঙ্গের লোক, বাঙাল। স্বাধীনতার আগে থেকেই অবিভক্ত বঙ্গের পূর্ব দিকের অংশটিকে পূর্ববঙ্গই বলা হত। সেই হিসেবে পূর্ববঙ্গ ছিলই, স্বাধীনতার পর সেটা হয়ে গেল পূ্র্ব পাকিস্তান। দেশ ভাগে, স্বাধীনতার সময় ভারতের সঙ্গে জুড়ে গেল বাংলার যে অংশ, সেটা বাংলার পশ্চিমাঞ্চল। তাই নাম হয়ে গেল লোকমুখেই পশ্চিমবঙ্গ। দেশ ভাগের বেদনাতেই এ রাজ্যের নাম তখন লোকের মুখে মুখে হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, বিভক্ত বঙ্গের পশ্চিম অঞ্চল— এই সত্যে এই নামকরণ, এটা ঠিক রাজনৈতিক নেতাদের সিদ্ধান্তে হয়নি, লোকে এ রাজ্যকে পশ্চিমবঙ্গ বলেছে, সরকারি নথিপত্রে হয়ে গেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল। এতে সরকারি কাজকর্মে এত বছর ধরে বড় অসুবিধা হচ্ছিল। বর্ণানুসারে পশ্চিমবঙ্গের প, বা ইংরেজিতে ডব্লু অনেক নিচে। নিচে থাকার যে অসুবিধা। অসম, অন্ধ্র ওপরে। দশকের পর দশক পশ্চিমবঙ্গ, বা ওয়েস্ট বেঙ্গলের এই অসুবিধা হয়েছে। তাই বঙ্গ বা বাংলা নামকরণ সঠিক সিদ্ধান্ত। আমি বলব ‘‌বঙ্গ’‌ নামটিই ভাল, ঠিকঠাক। ‘‌বাংলা’‌ নাম হলে অনেক অসুবিধা হবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ হওয়ায়, সংক্ষেপে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাকেই ‘‌বাংলা’‌ বলেন বিদেশিরা। তাই এ রাজ্যের নাম ‘‌বঙ্গ’‌ হলে যথাযথ।

    সুপারিশকৃত লিন্ক: আগস্ট ২০১১ থেকে

    বাংলাদেশ কি সত্যিই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আপত্তি জানিয়েছিল গত বামফ্রন্ট সরকারের ‘পশ্চিমবঙ্গ’এর নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাবে? পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক পত্রিকা ‘প্রাত্যহিক খবর’এর আজকের সম্পাদকীয়তে সেরকমটাই লেখা হয়েছে। আমার অবশ্য এবিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বা শঙ্খ ঘোষের সাথে যাদের ব্যক্তিগত পরিচয় আছে তারা ব্যাপারটি জানার চেষ্টা করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ হবে এতে বাংলাদেশের আপত্তি কেন, এটা অবশ্য আমার বোধগম্য হচ্ছে না। আমাদের দেশের নাম ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলা’ নয় — তাহলে ভারতের এক প্রদেশের নাম ‘বাংলা’ হবে, এতে আমাদের সরকার কেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আপত্তি জানাবে?

    অবশ্য ভারতের প্রদেশ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের নাম যে কেন্দ্রীয়ভাবে WEST BENGAL থেকে পরিবর্তিত হয়ে PASCHIMBANGA হতে যাচ্ছে তাকে আমিও স্বাগত জানাই। গত কয়েকদিন ধরে ‘টুইটার’ ও ‘ইমেইল’এ পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে কথা হয়েছিল অনেকের সাথে। সেখানে নাম হিসেবে ‘বাংলা’র প্রতি কিছুটা দুর্বলতা থাকলেও আমি ‘পশ্চিমবঙ্গ’এর দিকে আমার ঝোঁকের কথা বলেছি। কারণটা আর কিছু নয় ‘পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমি’ ‘পশ্চিমবঙ্গ পুস্তক পরিষৎ’ এই নামগুলো অক্ষত থাক এই ছিল মনোগত বাসনা। ‘বাংলা’ ‘বঙ্গ’ বা ‘বঙ্গভুমি’ করলে এই নামগুলোর পরিবর্তনগুলো ঠিক শ্রুতিসুখকর হত না বলেই আমার বিশ্বাস।

  2. মাসুদ করিম - ৪ আগস্ট ২০১৬ (৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ)

    New Delhi-Agartala rail link through Bangladesh can become a game-changer

    Flagging off a train and laying the foundation stone for a rail link are routine for a railways minister. But when Indian railways minister Suresh Prabhu did this on Sunday in the company of his Bangladeshi counterpart Mohammed Mazibul Hoque, it meant killing two birds with one stone.

    Not only does the New Delhi-Agartala train service establish a direct link between New Delhi and the north-east it made Bangladesh—which provides the land bridge connecting the two parts of India—a direct stakeholder in India’s Look East strategy.

    The lack of connectivity between the north-east and mainland India has been one of the reasons for the region lagging behind. It is now of greater public policy focus with the National Democratic Alliance.

    There are other implications as well. For starters, it also melds well with India’s plans to open links between the states in the northeast and South East Asia. India is already looking at plans to complete a road link from its northeast through Myanmar to Thailand.

    Development to counter insurgency

    Ties between India and Bangladesh have seen a remarkable upswing in recent years especially since 2008 when the Awami League’s Sheikh Hasina took over as prime minister.

    Relations got another leg up after the Indian parliament ratified a long pending land boundary pact with Bangladesh last May. This opened the doors for improved cooperation between the two countries including the development of India’s northeast.

    Linking development of India’s north-east with that of Bangladesh has been something that has been on the Indian agenda for years. This is primarily because many of the insurgent groups active in the northeast have been using Bangladesh as a base.

    One of the first acts of the India friendly Sheikh Hasina government, soon after it was elected to office for the first time in 2008, was to hand over key leaders of the banned United Liberated Front of Assam (ULFA) militant group, together with other militants wanted in India for terrorist crimes. The ULFA was known to have bases in Bangladesh as are some other half a dozen anti-India groups operating in India’s northeast.

    Since prime minister Narendra Modi took office in May 2014, his government has made development of India’s northeastern region a priority. In the 2016-17 budget, an allocation of more than Rs.33,000crore has been made for the development of the northeast and gave a personal touch to it by undertaking several visits to the region.

    “Development of the northeastern states mean ensuring jobs for the youth which prevents them from taking up arms and joining militant groups,” said a government official who did not wish to be named. “The situation in the region is improving with India opening trade points with Bangladesh and Myanmar as well as various connectivity projects linking the northeast to Delhi, within the region itself as well as neighbouring countries,” said the official.

    “More trade, greater the prosperity and lesser the chance of youth getting involved in militant activities. And trade with Bangladesh is a key part of this strategy,” the official said.

    On Sunday, Prabhu said the railways will invest more than Rs.7,000crore in the current fiscal year to develop its network in the seven north-eastern states.

    A win-win situation

    The Agartala-Akhaura rail link will be a key railway connection between the two countries. Akhaura in south eastern Bangladesh is an important railway junction which connects Chittagong port, resource-rich Sylhet and Dhaka.

    According to a second Indian official, “The Agartala Akhaura [Bangladesh] link will give full rail connectivity from east to west of Bangladesh and will greatly facilitate India-Bangladesh trade and people to people ties.

    “It is also expected to facilitate transit from Chittagong and Mongla ports to Tripura and India’s northeast” the official said. In other words, Indian ships could dock in Chittagong port and use the rail link to access India’s north-east.

    “This is a win-win sitaution for both countries. It will help increased trade between India and the seven states of the northeast that will bring with it prosperity for the region. Bangladesh is also looking at development, jobs for its people. Their goals as similar to ours and that is why this will benefit both sides,” the second official said.

    India already has bus links connecting Dhaka and Kolkata and Agartala and Dhaka. There is also a train link between Dhaka and Kolkata. When the Agartala-Akhaura link becomes operational, it could potentially provide connectivity all the way to New Delhi.

  3. মাসুদ করিম - ৪ আগস্ট ২০১৬ (৪:০০ অপরাহ্ণ)

    Found: brain switches that wake flies up and send them to sleep

    Rise and shine! Neuronal switches have been discovered that can suddenly rouse flies from slumber – or send them into a doze.

    There are several parallels between sleep in flies and mammals, making fruit flies a good choice for investigating how we sleep. One way to do this is to use optogenetics to activate specific neurons to see what they do. This works by using light to turn on cells genetically modified to respond to certain wavelengths.

    Gero Miesenböck at the University of Oxford and his team have discovered how to wake flies up. Using light as the trigger the team stimulated neurons that release a molecule called dopamine. The dopamine then switched off sleep-promoting neurons in what’s called the dorsal fan-shaped body, waking the flies. Meanwhile, Fang Guo at Brandeis University in Waltham, Massachusetts, and his team have found that activating neurons that form part of a fly’s internal clock will send it to sleep. When stimulated, these neurons released glutamate, which turned off activity-promoting neurons in the master pacemaker area of the brain.

    While human and fly brains are obviously very different in structure, being asleep or awake are similar states regardless of the kind of brain an animal has, says Bruno van Swinderen at the University of Queensland, Australia.

    The parallels between fly and human sleep hint that we have a similar sleep-wake switch, says Miesenböck. Our brains have areas that are equivalent to the dorsal-shaped fan body and master pacemaker areas of the fly brain that seem to be responsible for kick-starting sleep or waking up.

    We don’t know if activating dopamine or glutamate-releasing neurons in mammals would have the same effect. But we do know that dopamine promotes wakefulness in people – it is boosted by cocaine use, for example – while glutamate is known to effect the suprachiasmatic nucleus, our equivalent of the fly’s master pacemaker.

    The fact we don’t drift back and forth between sleep and wake modes suggests that, like flies, we do have a hard switch for turning on the processes of falling asleep or waking. Being able to abruptly switch between the two is important, says Miesenböck. “You don’t want to be drifting through grey zones of variable drowsiness all day.”

    The next step will be to find out what natural pathways stimulate these dopamine and glutamate-releasing neurons, says van Swinderen.

    Journal reference: Wake switch, Nature, DOI: 10.1038/nature19055; Sleep switch, Nature, DOI: 10.1038/nature19097

  4. মাসুদ করিম - ৪ আগস্ট ২০১৬ (৪:১২ অপরাহ্ণ)

    China’s elevated bus finally hits the road
    State media pours scorn on congestion-cutting invention

    A Chinese project to reduce urban congestion with huge elevated buses that allow cars to flow beneath them has finally hit the road, after a prototype travelled 300m down a closed section of tarmac in Qinhuangdao, a seaside town east of Beijing.

    The futuristic “batie”, which is 22m long, 7.8m wide and stands 4.8m high, has a passenger capacity of 300 although only 50 were on board at the launch.

    The bus has been in the works since the start of the decade, when Chinese engineer Song Youzhou’s “3D Express Coach” was hailed by Time magazine as one of the top 50 inventions of 2010.

    But the man responsible for building it is not Mr Song but a property developer named Bai Zhiming, who last year bought the technology behind the bus.

    Apart from contributing the name “batie”, Mr Bai’s role has mostly been to finance a project that had been looking ever more doubtful.

    Speaking from his offices in Beijing’s prestigious Galaxy Soho development, Mr Bai said that before their deal, “Old Song” had been worried the project would fall through as his company had been haemorrhaging funds.

    “They could barely afford plane tickets,” said Mr Bai, adding that a deal was struck within five minutes.

    Mr Song originally asked for Rmb3.8bn ($570m) for the technology but after a fortnight of haggling, Mr Bai paid him Rmb500m, agreeing to give the inventor a cut of any profits.

    The main problem for Mr Song’s original venture was finding local government partners and interested investors, according to Mr Bai. A trial project with the Beijing municipal government announced in 2010 never materialised.

    Mr Bai has not resolved this problem as much as worked around it. “We are using our own capital. First we want to manufacture the bus … Then we will look for investors.”

    He is hoping to lead his conglomerate, Huaying Group, away from property and towards public-private partnerships with local governments.

    The appearance of the straddling bus this week may appear proof that Mr Bai has succeeded. But appearances may be deceptive.

    According to an article published by the Communist party mouthpiece the People’s Daily on its WeChat account, the relevant government departments in Qinhuangdao did not know about the tests. The online videos were of an internal company test, not a real trial run, it said.

    Also listed in the article are a series of criticisms of the batie’s practicality. The bus is too tall to go under bridges, but too short for some vehicles to pass underneath. A fully loaded bus would be too heavy for many cities’ roads. Then there is the potential for traffic accidents.

    “We will wait to see [whether] the batie is a ‘bus in the sky’ or a ‘castle in the sky’,” the article concludes.

  5. মাসুদ করিম - ১০ আগস্ট ২০১৬ (৮:২০ পূর্বাহ্ণ)

    Burma marks anniversary of 8888 uprising

    The 28th anniversary of the 8888 uprising was commemorated across Burma on Monday.

    In Rangoon, activists gathered in front of City Hall at 8:08am for a multi-faith vigil to remember those who were gunned down in the streets by security forces on 8 August 1988.

    Another major event marking the day in Rangoon was organised by activist group the 88 Generation Peace and Open Society at the Dhammapiya Monastery in Thingangyun Township. The event was joined by the National League for Democracy’s patron Tin Oo and the 88 Generation’s leader Min Ko Naing.

    The ruling National League for Democracy in Rangoon’s Sanchaung township also held an event marking the day, handing out donations to family members of the protesters who died in the uprising, said the 88 Generation’s Ko Jimmy, who joined the event.

    “The National League for Democracy in Sanchaung chipped in what they could to provide financial assistance to the families of the protesters who died in 88. It is a very nice thing to do — I guess they will do the same thing in other townships as well,” said Ko Jimmy.

    Meanwhile, university students from Mandalay and Yadanarbon universities in Mandalay also marked the day by donating rice to Buddhist monks at the corner of 33rd and 84th streets.

    An event commemorating the day also took place in Pegu Division’s Kanyutkwin Township.

  6. মাসুদ করিম - ১৮ আগস্ট ২০১৬ (৯:২১ পূর্বাহ্ণ)

    চাকরি নিয়ে শঙ্কায় গুলশানের হোটেল-রেস্তোরাঁর কর্মীরা

    হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর আবাসিক ভবনে গড়ে তোলা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গুলশানের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর কর্মীদের মধ্যে। এরই মধ্যে অনেকে পেয়েছেন চাকরিচ্যুতির নোটিস, বাকিরা আছেন আশঙ্কায়।

    গত ১ জুলাইয়ের জঙ্গি হামলার পর ব্যবসা বাণিজ্যে ধসের মধ‌্যে শুরু হওয়া এই উচ্ছেদ অভিযানের কারণে স্বস্তিতে নেই মালিকরাও।

    রাজধানীজুড়ে উচ্ছেদ অভিযানে এরই মধ্যে গুলশানের ১২টি রেস্তোরাঁ ও একটি হোটেল, উত্তরায় ১৭টি রেস্তোরাঁ ও পাঁচটি হোটেল, ধানমন্ডিতে নয়টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

    এ উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সব মিলিয়ে ১ লাখ লোক কর্মহীন হতে পারে বলে আশঙ্কা হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিকদের।

    এজন‌্য হোটেল, গেস্ট হাউজ ও রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা, যাতে এফসিসিআইও সমর্থন দিয়েছে।

    তবে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্থির।

    “আবাসিক এলাকায় এসব বাণিজ্যিক ভবন রাখা যাবে না, কোনোভাবেই না। আমরা এদের আর অ্যালাউ করব না।”

    হোটেল-গেস্টহাউজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এইচজিআরওএবি)-র তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমণ্ডি ও উত্তরায় সব মিলিয়ে ৬০টি হোটেল ও গেস্ট হাউজ এবং ৫০০টি রেস্তোরাঁ রয়েছে।

    এসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের।

    হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার তিন সপ্তাহ পর ২০ জুলাই আবাসিক এলাকায় থাকা ২ হাজার ৪০০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নোটিস দেয় রাজউক, এরপরই শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান।

    গত ২৭ জুলাই গুলশানের হলিডে ভিলাগ্রাম হোটেলে অভিযান চালায় রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে হোটেলে থাকা বিদেশি অতিথিদের বের করে দেওয়ারও নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।

    এরপর থেকেই চাকরি হারানোর ভয়ে আছেন হোটেলটির ৪৪ জন কর্মী।

    “জীবনের অর্ধেক সময় পেরিয়ে এখন অন্য কোনো পেশায় যাওয়ার জায়গা নেই। এখন উঠিয়ে দিলে আমরা যাব কোথায়?” বলেন হোটেলের ফুড এন্ড বেভারেজ ব্যবস্থাপক নাজিম সরদার।

    উচ্ছেদের আগে ‘বিকল্প নির্ধারণে’ সময় চান তিনি।

    “আমরাও সরকারের এ উদ্যোগকে সমর্থন করি। কিন্তু বিকল্প তৈরি না করে এভাবে উচ্ছেদ করলে তো বিপদে পড়ে যাব।”

    ৮ নম্বর সড়কে থাকা এ হোটেলের মহাব্যবস্থাপক আশিকুর রহমান জানান, গুলশানে হামলা হওয়ার পর থেকে গ্রাহকখরায় আছেন তারা।

    “১২ জুলাই পর্যন্ত কোনো রিজার্ভেশন পাইনি। এরপর আস্তে আস্তে অতিথিরা আসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু এ উচ্ছেদ অভিযানের কারণে তাদের আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে।”

    হলি আর্টিজানে হামলায় ১৭ বিদেশি নিহত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশের দূতাবাস তার দেশের নাগরিকদের চলাচলে সতর্কতা জারি করে। ফলে বিদেশিদের যাতায়াত কমে যায় রেস্তোরাঁগুলোতে।

    আবার ওই হামলার পর নিরাপত্তার কড়াকড়িতে দেশের মানুষও গুলশান এলাকা এড়িয়ে চলতে চাইছেন।

    বাংলাদেশে বিদেশি মিশনগুলোর অধিকাংশই এই গুলশানে। এসব মিশনের কর্মকর্তারা কর্মস্থলের পাশে গুলশানে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ‌্য বোধ করেন। তারাই ছিল গুলশানের রেস্তোরাঁগুলোর প্রধান ভোক্তা।

    হলিডে ভিলাগ্রামের মহাব‌্যবস্থাপক আশিক বলেন, “গুলশান হামলার পর বিদেশিরা এমনিতেই বেশ আতঙ্কিত। এরপর অভিযান চালিয়ে হোটেলে থেকে বের করে দিলে তারা তো এদেশে থাকতেই চাইবে না।”

    চাকরি হারানোর আতঙ্কে আছেন ১১৩ নম্বর সড়কের ইস্তানবুল রেস্তোরাঁর কর্মীরাও।

    নিজের চাকরি নিয়েও শঙ্কায় থাকা রেস্তোরাঁটির ব্যবস্থাপক মো. ইউনুস আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন চাকরির বাজার খুব খারাপ। গুলশানের ঘটনার আগে মালিকরা দক্ষ ম্যানেজার-ওয়েটার খুঁজত। কিন্তু এখন কর্মীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, কাজ নাই। উচ্ছেদ করে দিলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।”

    ২৮ জুলাই রাজউক কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁটি বন্ধ করে দেয়। ১০দিন পর আবার চালু হলেও কাঙ্ক্ষিত গ্রাহক না পাওয়ায় মালিকপক্ষ দ্রুতই চাকরি ছাড়ার নোটিস দিতে পারে বলে শঙ্কা ইউনুসের।

    রাজউকের এ উচ্ছেদ অভিযান হোটেল-রেস্তোরাঁর ‘মন্দা বাজার’কে আরও সঙ্কটে ফেলবে বলে মত গুলশানের মিরাকি রেস্তোরাঁর মালিক শাহ আলমের। উচ্ছেদ অভিযানের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

    “এসব প্রতিষ্ঠান তো একদিনে গড়ে উঠেনি। রাজউকের লোকজনের চোখের সামনেই গড়ে উঠেছে। তখন তারা কেন বলল না যে এখানে এসব স্থাপনা গড়ে তোলা যাবে না। কেউ তো এসে বলেনি, এসব স্থাপনা করছো কেন?”

    এ উচ্ছেদ অভিযানের কারণে পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ট্যুর অপারেটররাও। তাদের ভাষ্য, মাঝারি মানের হোটেলেগুলো বন্ধ হলে বিদেশি অতিথিদের থাকার জায়গার সঙ্কট হবে।

    এবি ট্যুরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুরশিদ আলী মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক পর্যটকই ঢাকায় দু-একদিন অবস্থান করে বাইরে বেড়াতে চলে যান। এ ধরনের অতিথিরা স্বল্পমূল্যের হোটেলে থাকতে চায়, তাই মাঝারি মানের হোটেল বন্ধ হয়ে গেলে তাদের জন্য অসুবিধা হবে। তারা হয়ত আর আসতেই চাইবেন না।”

    হোটেল রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ না করে এগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে হোটেল-গেস্টহাউজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ‌্যাসোসিয়েশন-এইচজিআরওএবি।

    সংগঠনটির নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদুর রহমান সানি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের একটা নিয়ম করে দিক, আমরা সেভাবেই এসব হোটেলে-রেস্তোরাঁ পরিচালনা করব।

    “যাদের পার্কিংয়ের জায়গা নেই তাদের পার্কিংয়ের জায়গা করতে বাধ্য করা হোক, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে নির্দেশনা দেওয়া হোক।”

    পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) হোটেল রেস্তোরাঁ খাতের অবদান ১ দশমিক ০৩ শতাংশ, আগের বছরেও যা ছিল ১ দশমিক ০২ শতাংশ।

    “এই সেক্টরটাকে ধ্বংস করে দিয়েন না, এগুলো তুলে দিলে আমরা যাব কোথায়?” অনুরোধ সানির।

  7. মাসুদ করিম - ১৮ আগস্ট ২০১৬ (৯:২২ পূর্বাহ্ণ)

    জম্মু–কাশ্মীর নিয়ে কথা হবে না:‌ ভারত

    জম্মু–কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলার কোনও এক্তিয়ার পাকিস্তানের নেই বলে আজ ইসলামাবাদকে জানিয়ে দিল দিল্লি। পাক বিদেশ সচিব আইজাজ আমেদ চৌধুরি ইসলামাবাদে কাশ্মীর নিয়ে ভারত–পাক বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকের জন্য ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তারই জবাবে আজ ইসলামাবাদকে ভারতের বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর জানিয়ে দিয়েছেন, জম্মু–কাশ্মীর যেহেতু ভারতের অংশ, তাই এ নিয়ে কোনও কথা হবে না। তবে সেখানকার সমস্যা যে কারণে তৈরি হয়েছে, সেই সীমান্তপারের সন্ত্রাস সংক্রান্ত বিষয় ও অনুপ্রবেশ নিয়ে কথা বলতে দিল্লি আগ্রহী। জয়শঙ্করের এই চিঠি ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনার গৌতম বাম্বাওয়ালে পাক কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, সোমবার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বালুচিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তোলার ঘণ্টা কয়েকের মধ্যে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনার গৌতম বাম্বাওয়ালেকে তলব করেন পাক বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া। মোদির ভাষণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বাম্বাওয়ালের হাতে বিদেশ সচিব আইজাজ আমেদ চৌধুরির আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন। এখন দিল্লির উত্তরের পর সেই বৈঠকের সম্ভাবনা প্রায় থাকল না। তাঁর এই চিঠি বুঝিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তানের আক্রমণাত্মক কথাবার্তার জবাব দিতে ভারত এবার ভারতীয় কাশ্মীরকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে তুলে নিয়ে যেতে চাইছে। এদিকে, পাকিস্তানের ওপর সন্ত্রাস নিয়ে চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি ভারতীয় কাশ্মীরের আন্দোলনকারীদের টাকার উৎস খোঁজার দায়িত্ব কেন্দ্র এন আই এ–র হাতে তুলে দিয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেত্রী আসিয়া আন্দ্রাবির দুখত্রানান–এ–মিল্লাত, জামাত–এ–ইসলামি প্রমুখ সংগঠনের কাছে ২৪ কোটি টাকা এসেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর লাগাতার জঙ্গি আক্রমণ চলছেই। মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লায় সেনা কনভয়ের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। প্রাণ হারান ২ সেনা এবং ১ পুলিসকর্মী। স্বাধীনতা দিবসে শ্রীনগরের অদূরে নওহাট্টার সুফি সৌধের কাছে পুলিসকে লক্ষ্য করে জঙ্গি–হামলায় নিহত হন ১ সি আর পি এফ অফিসার। পুলিসের পাল্টা গুলিতে মারা যায় ২ জঙ্গিও। কেন্দ্রীয় সরকারি আমলারা জানাচ্ছেন, পাকিস্তানের পাঠানো টাকাতেই এইসব হামলার জন্য লোক নিয়োগ করছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো। অস্ত্রও কিনছে। ৮ জুলাই নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে খুন হয় জঙ্গিনেতা বুরহান ওয়ানি। তার মৃত্যু ঘিরে কাশ্মীরে ক্রমাগত পুলিস–সাধারণ মানুষের সঙ্ঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৯ জন। জখম প্রায় ৫০০০ হাজার। শ্রীনগর, অনন্তনাগ, বদগামে ৪০ দিন ধরে জারি কার্ফু। শ্রীনগরের খবর, কাশ্মীরের বিরোধী দলগুলির নেতারা সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করবেন বলে ঠিক করেছেন। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা ইতিমধ্যেই ঘোরতর কেন্দ্রবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন বালুচিস্তানের প্রসঙ্গ তুলছেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। আজ রাজ্যের বিরোধী দলগুলির এক বৈঠকের পর তিনি দাবি করেন, কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বিচারবিভাগীয় কমিশন তৈরি করা উচিত। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ১৫ আগস্ট তাঁর ভাষণে বলেছেন, বাহিনীর একাংশ সংযমী হওয়ার পরামর্শ মেনে চলেনি। উপত্যকার পরিবেশ যাতে শান্ত হয় তার জন্য পদক্ষেপ করার দাবিও তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে জানাবেন। এই সর্বদলীয় বৈঠকে ওমরের দল ছাড়া ছিল কংগ্রেস ও সি পি এম। অন্যদিকে ইসলামাবাদের খবর, সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জামাত–‌উদ–‌দাওয়ার নেতা হাফিজ সঈদ এবার‌ পাকিস্তানের সেনাপ্রধান রাহিল শরিফকে কাশ্মীরে গিয়ে লড়াই করার ‘‌হুকুম’‌ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সম্প্রতি পাকিস্তান–বিরোধী হাওয়া জোরালো হওয়ায় হাফিজের নিদান, এই সময়ে যদি বিপর্যস্ত চাকোঠিতে নিজে ত্রাণ নিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তাহলে পাকিস্তানের প্রতি কাশ্মীরের আস্থা জাগবে। কাশ্মীরের মানুষ বিশ্বাস করবেন যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে আছেন।‌

  8. মাসুদ করিম - ২৩ আগস্ট ২০১৬ (১২:৪৬ অপরাহ্ণ)

    World’s most inaccessible art found in the heart of the Colombian jungle

    Prehistoric paintings on vertical rock face in wilderness photographed and filmed for the first time

    A British wildlife film-maker has returned from one of the most inaccessible parts of the world with extraordinary footage of ancient rock art that has never been filmed or photographed before.

    In an area of Colombia so vast and remote that contact has still not been made with some tribes thought to live there, Mike Slee used a helicopter to film hundreds of paintings depicting hunters and animals believed to have been created thousands of years ago. He said: “We had crews all over the place and helicopters filming all over Colombia. As a photographer, Francisco Forero Bonell discovered and took the pictures for my movie.”

    The extraordinary art includes images of jaguar, crocodiles and deer. They are painted in red, on vertical rock faces in Chiribiquete national park, a 12,000 square kilometre Unesco world heritage site that is largely unexplored. There are also paintings of warriors or hunters dancing or celebrating. “It is the land that time forgot,” Slee told the Observer.

    There had previously been only vague reports of rock art in the area, which is known as Cerro Campana, he said: “There’s no information, maps or communication. It’s such a massive central part of Colombia.” Though some paintings had previously been found and photographed elsewhere in Chiribiquete, this Cerro Campana art has never been filmed or photographed, Slee said: “It was an absolutely stunning moment to be able to get the footage.”

    Slee used a helicopter to gain access to the area, as the terrain is impenetrable – thick vegetation, forested rock peaks and valleys, sheer cliffs and giant rock towers soaring through a rainforest canopy.

    Professor Fernando Urbina, a rock art specialist from the National University of Colombia, was struck by the “magnificent naturalism” of the depictions of deer when shown the photographs.

    “They reveal the hand of a master of painting,” he said, adding that the paintings could be up to 20,000 years old. He was particularly interested in a human figure in a seated position whose arms appear to be folded over his shoulders, a ritual position in Amazonian cultures. “A seated man has special significance as the sage of the tribe,” he said.

    The art may have been painted by the Karijona tribe, a few of whose members still live in the region. The seated position might suggest a prisoner or slave, Urbina said.Jean Clottes, a French prehistorian, and author of Cave Art – a book covering key sites such as Lascaux in France – described the images as exciting and well-preserved, but said it would be hard to determine their age because radiocarbon dating could not be used, as they were painted with mineral-based materials derived from iron oxide rather than the charcoal used in European rock art.

    The species depicted are thought to include capybaras, snakes and anteaters. Slee described the art as a wildlife chapel. “The peoples who once lived here have left in pictures testimony of their awe and respect for the wild,” he said. “When I saw the images, I honestly felt an affinity with the artists. They were attempting to capture the power, grace, spirit and essence of the animal in pictures. Perhaps it was to make the hunt better next day, but there is clearly careful observation in their art. It’s what contemporary photographers, painters, film-makers set out to do when they create a wildlife project.”

    Slee made his name making natural history films and directed the movie Bugs! 3D, about two rainforest insects, narrated by Judi Dench. In 2012, the Observer reported that his Flight of the Butterflies 3D had captured butterflies in unprecedented detail, moving scientists to tears at an early screening. Over the past three years, Slee has been exploring Colombia to make Colombia: Wild Magic, which will be in cinemas next year. Through spectacular footage, it portrays “a majestic tropical wilderness” – but one he said was threatened by humans who are “taking more than they are giving”. With swooping aerial footage and detailed close-ups, it reveals a landscape of canyons and caves, lakes and lagoons, rivers and rock masses with “the largest varieties of living things on the planet”, including unique species of hummingbird and endangered jaguar.

    Drawing on the expertise of a dozen scientific advisers, the film warns of threats from the world’s “craving” for natural resources such as gold and emeralds. Slee said: “We’ve got illegal gold-mining polluting the rivers, we’re overfishing the seas, the habitat destruction is massive. We’re taking out the rainforest, we’re losing species every week. We have the most beautiful country on Earth and we are in danger of destroying it. There are places that no Colombian has been. It’s mainly because, when you think of Colombia, you think of kidnapping and drugs.”

    Bonell, a Colombian conservationist and photographer, was inspired to become executive producer of the film, describing the region as “one of the few areas on our planet that still remains unspoiled and unexplored”.

    The film has been produced by British company Off The Fence, and will be distributed free in schools in Colombia, as well as cinemas, “spreading the word about what their country has and the need to protect it”, Slee said. Slee hopes to return for another large-scale expedition focusing on the rock art. “We’ve probably only scratched the surface,” he said. “There are believed to be many hundreds of these cave paintings dotted throughout that central region.”

  9. মাসুদ করিম - ২৩ আগস্ট ২০১৬ (১২:৫৭ অপরাহ্ণ)

    Are the Sinhalese people descendants of Bengali and Odiya sea merchants?

    A history of the Indian Ocean suggests as much, citing genetic studies as well as legends.

    The injection of Indian DNA into Australia around 2000 BC shows that people living on India’s eastern seaboard were capable of sailing long distances even before the Iron Age. Archaeologists have found remains of a possible river port at a place called Golbai Sasan in Odisha that dates back to 2300 BC. However, there is a distinct boom in coastal trade from around 800 BC. At the heart of this maritime boom was Kalinga (roughly modern Odisha) and the adjoining areas of West Bengal.

    The remains of many ancient ports have been found all along the coast between the western-most mouth of the Ganga and Chilika lake. The river connected the sea ports to the kingdoms of the interior while the lake, which has an outlet to the sea, acted as a safe harbour. You will find bits of ancient pottery strewn everywhere if you walk along the banks of Chilika lake.

    The Bengali-Odiya mariners were not capable of sailing directly across the Indian Ocean at this early stage. Instead, they would have hugged the shore and traded their way down the Andhra and Tamil coast. At some stage they seem to have sailed across to Sri Lanka and begun to settle there.

    Genetic studies have confirmed that the island was already inhabited by the ancestors of the Vedda, a small tribe that has long been suspected of being the original inhabitants. They are probably descendants of people who had migrated here before the Great Flood separated them from the mainland. The new migrants from eastern India, however, would soon become the dominant population – the Sinhalese.

    The Mahavamsa, an epic written in Pali, tells the founding myth of how the Sinhalese came to Sri Lanka. It is said that at the beginning of the sixth century BC, the king of Vanga (i.e., Bengal) had a beautiful daughter who was kidnapped by a powerful lion. He kept the princess prisoner in a cave and had a son and daughter by her. The son, Sinhabahu, grew up to be a strong lad. One day, when the lion was away, he broke open the cave-prison and escaped with his mother and sister. The lion followed in hot pursuit. Eventually, after several adventures, Sinhabahu faced his father and killed him.

    Sinhabahu then established a kingdom and built a capital city Sinhapura which means Lion City (notice that this is derived from the same etymological roots as Singapore). Many years passed and Sinhabahu had a son called Vijaya who turned out to be a violent lout and a disgrace to the family. My guess is that he inherited that from the paternal grandfather. After hearing repeated complaints from his subjects, King Sinhabahu eventually decided to banish Vijaya and 700 of his supporters.

    So, Vijaya sailed south and landed in Sri Lanka. There he faced some resistance from the locals, presumably the Vedda, led by a woman called Kuveni. However, Vijaya prevailed and established his kingdom. The Mahavamsa tells us that King Vijaya now gave up his earlier erratic behaviour and ruled responsibly for thirty-eight years. He also married a Tamil princess from the Pandya clan.

    The legend of Prince Vijaya should not be taken literally; I have always harboured some doubts about the bit related to the lion kidnapping the princess. Nevertheless, the epic makes it clear that the Sinhalese retained a memory of their Bengali-Odiya origins when the Mahavamsa was composed and compiled almost a thousand years later.

    The Sinhalese link to eastern India matches genetic, linguistic and cultural evidence and survives in many little ways. For example, the lion is an important symbol of the Sinhalese people; they are literally the Lion People. One finds this echoed in Odisha which remains a major centre for the worship of Narasimha (the god Vishnu as half-lion and half-man).

    The town of Puri is famous for the temple of Jagannath, another form of Vishnu, but also has a very ancient temple to Narasimha and there are several rituals where the latter is given precedence to this day. Similarly, in Bengal, the goddess Durga is almost always depicted as riding a lion. In other words, the lion on the Sri Lanka flag and Durga’s lion share the same cultural origins.

    The clinching evidence on the origins of the Sinhalese, however, comes from another custom. Robert Knox, an Englishman who spent many years in Sri Lanka in the seventeenth century, made the following observation: “In their infancy they have names whereby one may be called and distinguished from the other; but, when they come to years, it is an affront and shame to them, either men or women, to be called by those names.” Bengali and Odiya readers will know exactly what this means.

    Excerpted with permission from The Ocean Of Churn: How The Indian Ocean Shaped Human History, Sanjeev Sanyal, Penguin Viking.

  10. মাসুদ করিম - ২৫ আগস্ট ২০১৬ (৮:৫১ পূর্বাহ্ণ)

    Powerful earthquake hits central Myanmar

    Breaking: A powerful 6.8 magnitude earthquake hit central Myanmar today, the US Geological Survey reported.

    The quake, which the agency said struck at a depth of 84 kilometres (52 miles), was felt in Yangon, as well as in the Thai and Bangladesh capitals.

    Officials from Myanmar’s Relief and Resettlement Department confirmed four casualties, as well as damage to 68 stupas and pagodas.

    The epicentre was near Chauk, a town on the Ayeyarwady River around 30 kilometres south of Bagan, Myanmar’s most famous archaeological site and home to more than 2,500 Buddhist monuments.

    “Some famous pagodas were damaged during the earthquake,” a tourist police officer from Bagan said, adding some of the damage in the major tourist destination was “serious”.

    Soe Win, a regional MP from the township in Magwe region, told AFP the tremors lasted for several minutes.

    “There was also some sound as well. A pagoda collapsed in Salay and a building also collapsed,” he said. The death of a 22-year-old in a building collapse near the epicentre was also confirmed.

    The USGS estimated that the impact would be “relatively localised” but noted that many buildings in the region are “highly vulnerable” to earthquake shaking.

    The quake was also felt in the Indian city of Kolkata, rocking tall structures and sending panicked residents out onto the streets.

    “Services of the underground railway have been suspended fearing aftershocks of the quake,” Kolkata Metro Railway spokesman Indrani Banerjee told AFP.

    It was also felt throughout south and southwestern Bangladesh close to the border with Myanmar, with television footage showing residents running into the streets.

    At least 20 people were injured as panicked workers tried to flee a building in the industrial area of Savar outside Dhaka, ATN Bangla television reported.

    “All of us ran to the streets leaving the houses and shops unsecured as the quake seemed very dangerous,” Nazmus Sakib from the southern city of Chittagong close to the Myanmar border wrote on his Facebook wall.

    Earthquakes are relatively common in Myanmar, though there has not been a major quake since 2012.

    The last major quake struck in a nearby region in April and caused minor damages but no casualties.

  11. মাসুদ করিম - ২৯ আগস্ট ২০১৬ (৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ)

    বিদায় প্রিয় কবি শহীদ কাদরী

    এ মাসেই ১৪ আগস্ট ছিল তার ৭৪তম জন্মদিন; আগস্টেই মৃত্যুর নামে লেখা হয়ে গেলেন কবি শহীদ কাদরী। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রাণপুরুষ কবি শহীদ কাদরী আর নেই। তিনি ছিলেন পঞ্চাশের দশকের বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি। দীর্ঘ কয়েক যুগ যুক্তরাষ্ট্রে

    স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা কবি নিউইয়র্কের নর্থ শোর বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সকাল ৭টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এক শোক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কবি শহীদ কাদরীর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারাল।’ তিনি তার বিবৃতিতে কবির পাঠক ও শুভার্থীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

    কিডনি-সংক্রান্ত নানা জটিলতায় অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন প্রিয় কবি শহীদ কাদরী। কিছুদিন আগেই পুরো দুই সপ্তাহ হাসপাতালে কাটিয়ে বাসায় ফিরেছিলেন তিনি। পরের দিনই আবার ডায়ালাইসিস। হুইলচেয়ারে বসে টেলিফোনে নিজের অসুস্থতা, ক্লান্তি, নিউইয়র্কের জীবন, দেশ ও আড্ডাময় জীবন আর তার আজন্মসঙ্গী কবিতার মানুষের কথা বলেছিলেন কবি। কিন্তু সাত দিন আগে আবার তাকে উচ্চ রক্তচাপ ও জ্বর নিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন প্রেম ও দ্রোহের এই কবি।

    ‘ভয় নেই/ আমি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে সেনাবাহিনী/ গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে/ মার্চপাস্ট করে চলে যাবে/ এবং স্যালুট করবে/ কেবল তোমাকে প্রিয়তমা।’ কিংবা ‘বন্য শূকর খুঁজে পাবে প্রিয় কাদা/ মাছরাঙা পাবে অন্বেষণের মাছ,/ কালো রাতগুলো বৃষ্টিতে হবে শাদা/ ঘন জঙ্গলে ময়ূর দেখাবে নাচ/ প্রেমিক মিলবে প্রেমিকার সাথে ঠিক-ই/ কিন্তু শান্তি পাবে না, পাবে না, পাবে না’- এমন সহস্র পঙ্ক্তিতে কবি শহীদ কাদরী বাংলা কবিতায় প্রেমের এক অনন্য উচ্চারণ করে গেছেন।

    শহীদ কাদরীর জন্ম কলকাতায় ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার পর তার পরিবার স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসে। শৈশবেই বাবাকে হারিয়েছিলেন কলকাতায় আর মাকে ঢাকায়। আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক যন্ত্রণা ও ক্লান্তির অভিজ্ঞতাকে কবিতায় রূপ দিয়েছেন তিনি। ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যের তীক্ষষ্ট শানিত রূপ তার কবিতাকে বৈশিষ্ট্য দান করেছে। শহর ও সভ্যতার বিকারকে শহীদ কাদরী ব্যবহার করেছেন তার কাব্যে। ‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’, ‘আমার চুম্বনগুলো পেঁৗছে দাও’- মাত্র এ চারটি কাব্যগ্রন্থে অধিকার করে নিয়েছেন আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম আসন।

    জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সমকালকে জানান, কবিপত্নী নীরা কাদরী তাকে জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কবির মরদেহ বাংলাদেশে আনা হবে। কবিপত্নী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার লাশ দাফনের ইচ্ছা পোষণ করেছেন। বাংলাদেশে মরদেহ আসার পর তাকে শহীদ মিনারে জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে জানান মুহাম্মদ সামাদ।

    শহীদ কাদরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী, জাতীয় কবিতা পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।

    তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কবি বেলাল চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘আমার বন্ধু ছিল সে। খুবই শক্তিমান কবি। তার এ চলে যাওয়া আমার জন্য বড় ক্ষতি।’

    ১৪ বছর বয়সে শহীদ কাদরীর প্রথম কবিতা ‘এই শীতে’ বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই দিনটি ছিল কবির কাছে একই সঙ্গে আনন্দ আর বেদনার। কারণ, কাকতালীয়ভাবে সেদিনই তার মা মারা যান।

    ১৯৭১ সালে শহীদ কাদরী বিয়ে করেন পিয়ারীকে। তার সঙ্গে ১৯৭৮ সালে পাড়ি দেন জার্মানিতে। পিয়ারীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি নতুন সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন তার ভক্ত নীরাকে। তার একমাত্র সন্তান আদনান কাদরী।

    কবি শহীদ কাদরী বাংলা সাহিত্যে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০১১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়া মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন খ্যাতিমান এ কবি। তার স্মৃতির প্রতি সমকাল পরিবারের গভীর শ্রদ্ধা।

    তোমাকে অভিবাদন, বন্ধু
    বেলাল চৌধুরী

    আমরা সবাই আজ বিদায়ের দিকে হাঁটছি। শহীদ কাদরী আগেই হেঁটে চলে গেল। আমাদের ঢাকা, কলকাতার শহরময় সমস্ত রাত পরিভ্রমণের সেই দিনগুলোতেও সে আগে আগে হেঁটে চলে যেত। শহীদ কাদরী, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, ফজল শাহাবুদ্দিন; আমরা সারারাত হাঁটতাম- শহরের এ-মাথা থেকে ও-মাথায়। আজ আর কেউ নেই।
    একে একে থেমে গেছে কবিতার পদযাত্রা।
    শহীদ কাদরীর কবিতা ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীক্ষষ্ট আর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষণীয়। সবচেয়ে বেশি আড্ডাতুর তুমুল ছেলেটাই ছিল শহীদ। এবার চলে গেল চিরনিদ্রায়। যেন আড্ডার মধ্যমণি আজ আড্ডা ভেঙে দিয়ে চলে গেল।
    পুরানা পল্টনে শহীদ কাদরীকে ঘিরে আমরা আড্ডার ঝড় তুলতাম। কবি রফিক আজাদ, আবদুল মান্নান সৈয়দ, মাহমুদুল হক, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, রবিউল হুসাইন, রাজীব আহসান চৌধুরী, মুহম্মদ খসরু, আবিদ আজাদ, শিহাব সরকার, ইমদাদুল হক মিলন, মাহবুব হাসান, হাফিজুর রহমান, হাসান হাফিজ, ত্রিদিব দস্তিদার, ইকবাল হাসান- কে না আসত! রাহাত খান এবং আল মুজাহিদীও আসত কখনও কখনও। আড্ডা হতো নয়াপল্টনে, আমার ‘সচিত্র সন্ধানী’ অফিসেও। বিউটি বোর্ডিংয়েও শহীদ ছিল তুমুল চাঞ্চল্যকর এক নাম।
    তারপর শহীদের শুরু হয় সে এক নির্বাসিত জীবন। দূর পরবাসে। আমাদের কথা হতো টেলিফোনে। অনেক দিনই আমরা স্মৃতিতে আর কান্নায় মাখিয়ে ফেলতাম টেলিফোনের এপার থেকে ওপারে। ফেলে যাওয়া বাংলাদেশ, বাংলা কবিতা, বিশ্বসাহিত্য-সমাজ ও মানুষ নিয়ে অনর্গল বলত শহীদ কাদরী। সমস্ত জীবন যেমন ছিল তুখোড়- তেমনি অনবদ্য তার কবিতা। শহীদ লিখেছিল- ‘রাষ্ট্র মানেই স্ট্রাইক, মহিলা বন্ধুর সঙ্গে/ এনগেজমেন্ট বাতিল/ রাষ্ট্র মানেই পররাষ্ট্র নীতি সংক্রান্ত/ ব্যর্থ সেমিনার/ রাষ্ট্র মানেই/ নিহত সৈনিকের স্ত্রী/ রাষ্ট্র মানেই ক্রাচে ভর দিয়ে হেঁটে যাওয়া/ রাষ্ট্র মানেই রাষ্ট্রসংঘের ব্যর্থতা/ রাষ্ট্রসংঘের ব্যর্থতা মানেই/ লেফ্ট রাইট, লেফ্ট রাইট, লেফ্ট-!’
    দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল সে। হাসপাতালের তীব্র যন্ত্রণাময় সেই দিনগুলোতেও শহীদকে ভেঙে পড়তে দেখিনি তেমন। ছেলেবেলাতেই বাবা-মাকে হারিয়ে ফেলা শহীদ, এ নিয়ে সামনে কখনও কাঁদেনি। অথচ ওর ভেতরে ভেতরে বয়ে যেত নীরব কান্নার নদী; দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। বাংলাদেশের জন্য, বাংলা সাহিত্যের জন্য ও সব সময় বলত। বলত, আমি সব কিছু ছেড়ে এই দূরদেশে এসে পড়ে রইলাম। আমাকে কিছুদিন আগেও ও বলছিল, ডায়ালাইসিস শুরুর পর মানুষ বড়জোর তিন থেকে চার বছর বাঁচে। আর আমি তো দিব্যি ছয় বছর পার করে দিলাম।
    শহীদ কাদরীর সাথে আমার যেমন গভীর বন্ধুত্ব ছিল- তেমনি ছিল বিবাদ। বাংলা কবিতা নিয়ে। সমসাময়িক সকল কবিকে নিয়ে। ও সবার লেখা পড়ত। আর অকপট বলে দিত সত্যি কথাটা। আজ কেবল বন্ধু হিসেবে নয়_ আজীবন তার লেখার কাছে, নিজের কাছে সৎ একজন দুর্দান্ত পরাক্রমশালী কবি শহীদ কাদরীর প্রতি আমি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে ভালোবাসা জানাই। ভালো থেকো শহীদ কাদরী। ওপারের জীবনে তোমাকে অভিবাদন, বন্ধু।

    বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড মানতে পারেননি শহীদ
    কবীর সুমন

    শহীদের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল জার্মানির কোলনে। আমাদের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন বাংলা বিভাগের জনাবা নাজমুন্নেছা। সে সময় শহীদ ওদের ছেলে আদনানকে নিয়ে সেখানে থাকতেন। তার আগে শহীদ কাদরীর কবিতা, বলাবাহুল্য পড়েছি, খুব বেশি না। পড়েছি কি প্রধানত, আমার অত দূর নাগাল ছিল না।

    আমাদের বন্ধু আবদুল্লাহ আল ফারুক ও সহকর্মী শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত, ওদের কাছে বই ছিল শহীদের। সেসব পড়েছিলাম। তারপরে উনি এলেন এবং আসার সময় থেকেই প্রথম দিকে ওর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেল। এর একটা কারণ ছিল, আমার হাতে সময়ও ছিল। আমি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ছিলাম। আমরা কাছাকাছিও থাকতাম।

    এটা ১৯৭৬-৭৭ হবে। আমার তখন ৩০ বছরও বয়স হয়নি। শহীদ আমার চেয়ে বয়সে কিঞ্চিৎ বড়, চিরকাল আপনি আপনিই করে গেছি। কিন্তু অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এই সময়টাতে আরকি।

    উনি ভীষণ রসিক লোক। সারাক্ষণই কোনো না কোনো রসিকতা করতেন, সেটা বাংলাদেশের অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই বলা যায়, রসিক। এবং অসম্ভব লেখাপড়ার রেঞ্জ। মাঝেমাঝে হাঁটতে হাঁটতে, আমরা যেখানে থাকতাম, সেটা আসলে ছিল কোলনের প্রাণকেন্দ্র। ওখানে হাঁটতে হাঁটতে আমরা কফির দোকানে বসতাম। বইয়ের দোকানে ঢুকতাম।

    একটি ঘটনা, স্যরি দুঃখের মধ্যেও হাসি পাচ্ছে, উপায় নেই (একটি ঘটনার কথা মনে করে হেসে ফেলেন)। একটা বই ছিল কার যেন লেখা, ‘এসেন্ট অব ম্যান’, বইটা দেখে আমার কেন জানি লোভ হলো। শহীদ বলল, বইটা খুব ভাল, বুঝলেন সুমন। বইটা খারাপ না ভাল। তারপরে গল্প করতে করতে আমরা চলে গিয়েছি।

    আমি বিকেল বেলায় এসে বইটা কিনে নিয়েছি, বুঝলেন? এটা আমি শহীদকে বলিনি। পরের দিন শহীদ বলল, চলেন তো বইয়ের দোকানটায় আবার যাই। হাঁটতে হাঁটতে গিয়েছি। ওখানে বইটি নেই। আমি তখনো ওকে বলছি না যে, বইটা আমি কিনেছি। উনি বললেন, বইটা কোথায় গেল? বইটা কোথায় গেল? আমি বললাম, আমি কী করে জানব?

    এরপর চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে, ‘বইটা না, এবার আমি খুঁজছি, বইটা যে কিনেছে তাকে।’ এই হচ্ছেন শহীদ কাদরী, বুঝলেন? এই দুঃখের সময়েও না হেসে উপায় নেই।

    আমি কলকাতায় একজনকেও চিনি না, যিনি এই রকম রসিকতা করতে পারেন। উনি আন্দাজ করতে পেরেছেন আমি কিনেছি, বুঝতে পারছেন।

    তারপর আমি বলে দিলাম হাসতে হাসতে, ‘আমি কিনেছি’। ও বলেছে, ‘আমি জানি না ভেবেছেন? আপনি বিকেলবেলা বা কখন এসে কিনে নিয়েছেন।’

    সে খুব সেনসিটিভ একজন মানুষ, ভীষণ সংবেদনশীল, রসিক, শিক্ষিত। আমি ওই রকম শিক্ষিত একজন আধুনিক বাঙালি তার আগে খুব কম দেখেছি। এটা আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, যে যা-ই মনে করুন।

    আমি পশ্চিমবঙ্গের, তখন আমার যৌবন মনে রাখতে হবে, কাজেই পশ্চিমবঙ্গে যে আমি সবাইকে চিনতাম তা না, কিন্তু এই রকম একজন শিক্ষিত আপাদমস্তক শিক্ষিত আধুনিক, সম্পূর্ণ উদার অসাম্প্রদায়িক মানুষ আমি কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দেখিনি।

    কিন্তু মনে রাখতে হবে তখন আমার যৌবন। পরবর্তীকালেও আমি পশ্চিমবঙ্গে দেখিনি, শহীদের মতো আপাদমস্তক শিক্ষিত, আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক বাঙালি আমি পশ্চিমবঙ্গে…… না, দেখছি বলে মনে পড়ছে না। বলাবাহুল্য, আমি পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যাগুরুদের কথা বলছি।

    উনি নিজের লেখা নিয়ে খুব কম কথা বলতেন। কিন্তু আবার বলতেনও। আমি মাঝে মাঝে বলতাম, আপনি কবিতা লেখেন কখন? উনি বলতেন, না তো আমি কবিতা লিখি না তো! ওটা ইয়ার্কি মারি অনেক সময়। আমি বলি, মানে? ‘অনেক সময় আমি, ইয়ে মানে, হাসপাতাল বা কোনো জায়গায় গিয়ে কয়েকদিন থাকি।’

    আমি বলি, ‘বাজে কথা বলেন না তো’। উনি বললেন যে, আমি যা লিখেছি, সেটা টা..না, একটানা লেখা।

    তিনি খুব মজার মজার গল্প করতেন। যেমন একটা গল্প, বলি সেটা। শহীদের একটা অদ্ভুত স্বভাব ছিল, সেটা বন্ধুরা জানে না আমি জানি। আমি যখন বোস্টনে শহীদের কাছে গেলাম। বললেন, সুমন কবিতা-টবিতার মধ্যে আমি কিন্তু আর নাই। আমি বললাম, মানে? ‘আমি কবিতা পড়িও না।’ হঠাৎ বললেন, হাতুড়ির নিচে কবিতা। এই রকম কবিতা যদি লিখতে পারতাম, তাহলে লিখতাম। কবিতা আমি পড়িও না।

    খানিক সময় পরে আমি বাথরুমে গিয়েছি, বুঝলেন? শহীদের বাথরুমে। বাথরুমে গিয়ে দেখি, বাথরুমের সিটস্ট্যান্ডের নিচে সাত-আটটি কবিতার বই। ওইখানে কবিতার বই!

    আমি বললাম যে, ইয়ার্কি মারার জায়গা পান না, আপনি কবিতা পড়েন না, সব বই ওখানে রেখেছেন কেন?

    কবে নাকি একবার হয়েছিল, ঢাকার বাড়িতে বোধ হয় আল মাহমুদ হবেন, আল মাহমুদ বন্ধু তো.. আল মাহমুদকে বুঝানো হয়েছে শহীদ উনার কবিতা মুখস্থ বলতে পারেন। কিন্তু উনি বিশ্বাস করছেন না। বাথরুমে আল মাহমুদের কবিতার বই আগে থেকে রেখে দিয়েছে, বুঝতে পেরেছেন? বাথরুমে ঢুকে শহীদ একের পর এক কবিতা বলে যাচ্ছে সোনালি কাবিন-টাবিন। আল মাহমুদতো পায়চারি করছেন অস্থির হয়ে, ‘দোস্ত, এই তুই কি দেখালি? আমিতো জীবনে ভাবতেও পারিনি। এভাবে তুই আমার কবিতা পড়িস।’ ওখানে আরও দুইজন ছিলেন, যাদের একজনের ছাপাখানা ছিল। ওদের আড্ডার সব বন্ধুরা সেখানে যেতেন। আল মাহমুদ, শহীদ, মহাদেব সাহা সবাই আড্ডা মারতেন।

    তারপর বেরিয়ে পড়লো যে, তিনি বাথরুমে ঢুকে আল মাহমুদের কবিতার বই থেকে পাঠ করছিলেন।

    দেশ ছাড়ার প্রসঙ্গ

    দেখুন। সঠিকভাবে কিছু উনি বলেননি। উনি আমাকে… যে কথাটি আমি বলব, সেটা কি আমার বলা ঠিক হবে? আমি ভারতের নাগরিক, বাংলাদেশ আমার বন্ধু রাষ্ট্র।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু উনি নিতে পারেননি। এটা উনি আমায় বলেছিলেন। আমি বলেছিলাম, আপনার মতো লোক যদি দেশে না থাকেন, তাহলে দেশের কী হবে? উনি আমায় বলেছিলেন, সুমন আপনি কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে চিনতেন না ব্যক্তিগত জীবনে। আপনি জানেন না।
    বঙ্গবন্ধুকে ওইভাবে হত্যা করা আমি নিতে পারিনি, সুমন; আমি ফিরব না।

    এটা উনি খুব সরাসরি বলেছেন।

    উনি কিন্তু আমার খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

    উনি কী রকম জানেন, কলকাতার অভাবটা উনি কোনো দিন ভুলতে পারেননি। কলকাতা থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। অনেক দিন পর্যন্ত ওর আম্মা, বড় ভাই আর ওকে স্থানীয় হিন্দুরা রক্ষা করেছিল অনেকদিন, অনেকদিন। ওরা বলেছে, আপনারা যাবেন না, আপনাদের যেতে হবে না। পরে নেতৃস্থানীয় হিন্দুরা এসে বলেন, আমরা আর আপনাদের রক্ষা করতে পারব না, কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আপনারা চলেই যান, আপনাদের আর রক্ষা করতে পারছি না। খুব কষ্ট নিয়ে উনারা চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। যেভাবে ওখান থেকে অনেক হিন্দু চলে আসতে বাধ্য হয়েছিল।

    যেমন ধরুন, আদনান আইসক্রিম খেতে চাইছে কোলনে, শহীদ বলছে আরে কি এখানে কি আইসক্রিম খাবি। আমি তোকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে আইসক্রিম খাওয়াব। আইসক্রিম মানে কলকাতা। শহীদ সমানে মিস করেছেন কলকাতা, তেমনি ঢাকা, বুদ্ধদেব বসু কবিতা পত্রিকায় শহীদের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল। এবং শহীদ তখনো প্রায় হাফপ্যান্ট পরা ছেলে। বুদ্ধদেব বসু জানতেন না, শহীদের বয়স এত কম। আমার সামনে বসে বসে বুদ্ধদেব বসুর কবিতা এভাবে একে একে বলে যাচ্ছেন, আমি কলকাতার কাউকে এরকম দেখিনি।

    এটা কিন্তু উনি তার বহু বছর পর ’৭৬-৭৭ সালে জার্মানিতে একসাথে থাকা, আড্ডা-গল্প, সময় কাটানো, তারপর ১৯৮৫-তে আমেরিকা। তারপরেও সে কিন্তু একই থেকে গেছে। তফাৎটা শুধু এই, জার্মানিতে যখন ছিলেন, তখন রান্না করতেন না, আমেরিকায় বোস্টনের বাসায় যখন গেলাম তখন উনি ভাল করে মাংস-ভাত রেঁধে খাওয়ালেন। এই তফাৎটা হয়ে গেছে। কিন্তু এইছাড়া ভেতরে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
    ওর কবিতাপ্রীতি, মানে সারা পৃথিবীতে কোথায় কী কবিতা বেরিয়েছে। আরেকটা কথা, আমি কখনো ভুলব না, আমি এখানকার বন্ধুদেরকেও বলেছি। শুনুন সুমন, যখন পাকিস্তানের হানাদাররা আসে, তখন কিন্তু আমরা সবাই পালিয়ে গিয়েছি, আমরা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। আমি আমার কবিতার বইগুলো মাটিতে পুঁতে দিয়েছি। পাইলেতো মারবে। ট্যাংক আসছে, বুঝলেন সুমন, ট্যাংকটা চলে যাচ্ছে সেই মাটির ওপর দিয়ে, যেখানে আমার কবিতার বই পোঁতা। আমার কবিতার বইগুলোকে চাপা দিয়ে যাচ্ছে, আমি সমানে ভাবছি, এবার একবার বিস্ফোরণটা হোক। এবার মাইনের মতো ফাট। ফাটলো না। একবারের জন্য বিস্ফোরণ ঘটাতে পারলাম না। তাহলে কিসের কবিতা? তাহলে আর কিসের কবিতা?

    • মাসুদ করিম - ২৯ আগস্ট ২০১৬ (১২:৪৭ অপরাহ্ণ)

      শহীদকে ঘরে ধরে রাখা যায় না

      কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, জার্মান প্রবাসী কবি-প্রাবন্ধিক

      এই মুহূর্তে, এই দুঃসংবাদ, যদিও প্রত্যাশিত। আমি ভীষণ কেঁপে আছি, এটা একেবারেই স্বতঃসিদ্ধ।যেহেতু প্রায় দেড় দশক দুই দশক ধরে এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। এবং ভেবেছিলাম যে, একদিন এই চূড়ান্ত দুঃসংবাদ পাব, এর জন্য তৈরিও ছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, আসলে আমরা তৈরি থাকলেও, আমরা যারা নশ্বর মানুষ, তাদের পক্ষ এ রকম ঘটনা সহ্য করে নেওয়ার মতো কোনো রকম সামর্থ্য নেই।

      যখনই এই খবর ফারুকের (জার্মান প্রবাসী সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল-ফারুক) মধ্য দিয়ে পেলাম, ফারুক আমার ভাই স্বরূপ, আমি তখনই ফারুককে বললাম যে ফারুক, আমার শক্তির (কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়) বিয়োগ পেয়ে আমি আমি একটা সনেট পাঠিয়েছিলাম, আজকে যদি তোমাকে একটা শোকগাথা পাঠাই, আমার মনে হলো আমি পারি, আমি শোকগাথা লিখতে পারব, কিন্তু সেটা খুব আলঙ্কারিক হবে। এখন আমি যেটা বলতে চাই দু’চারটি কথা যে, এই মুহূর্তে আমাদের শহীদ কাদরীর প্রতিভার মূল্যাঙ্কন করার সামর্থ্য আমাদের নেই। কিন্তু এইটুকু আমার মনে হয়, আমার ভীষণভাবে মনে হয়, গত কয়েক বছর ধরে যতদিন তাকে দেখিনি, সেই সময় অন্য একটা সান্নিধ্য গড়ে উঠেছিল, কী লিখছে কী না লিখছে। তো এখন ওর সবশেষ যেই বইটা যেটা প্রবাসে লেখা আমার ‘চুম্বনগুলি পৌঁছে দাও’, সেটা আমার হাতে আসেনি। কে যেন টুইটারে, টুইট করে জানিয়ে দিয়েছিল যে এই বইটা ২০০৯ সালে বেরিয়ে গেছে।

      এবং আমি ভাবছিলাম যে, এলিয়ট এক জায়গায় যেমন বলেছিলেন যে, প্রত্যেক কবি, প্রত্যেক মানুষ থেকে বয়স বিলম্বিত, অনেক বড়। প্রত্যেক কবির ক্ষেত্রে এই কথাটা বলা যায় যে, তারা তাদের এই মৃত্যু একটা আমাদের বিবেকের সঙ্গীতের পক্ষে খুব প্রয়োজনীয় একটা ঘটনা।

      তিনি বলেছিলেন, দার্শনিকতা করার মানে হচ্ছে, মৃত্যুকে কীভাবে আয়ত্ব করা যায় সেটা শিখে নেওয়া। এখানে একটা ঘরোয়া সেমিনারের মতো চলছিল।

      বুঝতে পারলাম, নশ্বরতার একটা কবিতার মন্ত্র আছে। যে কবিতাটাকে সঞ্চালিত করতে পারে।

      আপাতত বলাই বাহুল্য যে, সেই জায়গায় আমি কোনো রকম কোনো কথা বলব না যেটা কোনো বইয়ের, কোনো শোকলিপির উপক্রমণিকা হতে পারে। আমি সেটা বলব না।

      আমি যেটা বলব সেটা হচ্ছে- যখন আমি প্রথম, সম্ভবত আটাত্তরে। প্রথম শহীদকে দেখি, কোলন শহরে, যেখানে জার্মান বেতার তরঙ্গ। সেখানে যখন দেখলাম তখন আমার যা মনে হয়েছিল… প্রথম দৃষ্টিপাতেই একটা অদ্ভুত বিদ্যুৎ বিহরণ ঘটে গেল। সেটা হচ্ছে যে একদিক থেকে দেখছি ওকে। ঘুরে আমি চেয়ার নিয়ে আরেক দিকটায় বসলাম। আমি বুঝতে পারলাম ও নিজের মধ্যে প্রত্যেক কবির মতো অপূর্বভাবে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আছে।

      একদিকে এই প্রথম আমাকে দেখবার অপূর্ব আনন্দ, অন‌্যদিকে যেটা দেখলাম, সে কোনো বন্দিতে নির্মিত হওয়ার মত মানুষ নয়, সে এক অদ্ভুত মানুষ। শনাক্ত হতে চায় না। ইংরেজিতে বলব- ওয়ান, হু ডাজন্ট ওয়ান্ট টু বি আইডেন্টিফায়েড।

      এই যে দ্বিধাবিভক্ত রূপটা দেখেছিলাম, একদিকে অসামান্য লাজুক, অন্যদিকে বিশ্ববাসী। ওই সময়টাতে আমি বুঝতে পেরেছিলাম ওকে কলকাতা বা ঢাকায় ধরে রাখা যাবে না।

      ও বেরিয়ে পড়ল। তারপরে লন্ডন, আমেরিকায় বেরিয়ে পড়ল, যদি তাকে দায়বিদ্ধ করি, আমি দায়বদ্ধ বলছি না বলছি দায়বিদ্ধ করি। যে তুমি কেন দেশের মাটিতে বসে লিখছ না। তাহলে আমাকেও তো দায়বিদ্ধ করতে হয়। আমি সবসময় তো দেশের মাটিতে থাকি না। কাজেই আমরা কি বলব না, প্রবাসী বাঙালি বলে কেউ নেই?
      বাঙালিরা চিরন্তন প্রবাসী। এবং ওই লাইনটা আমার।

      আচ্ছা ওই দিকে দ্বিধাবিভক্ত মুখাবয়ব, সেটা অপূর্ব লেগেছিল।

      বুদ্ধমূর্তিকে একদিক থেকে মনে হয় কাঁদছেন, অন্যদিক থেকে মনে হয় হাসছেন। আমরা তো সবাই দ্বিধাবিভক্ত।

      সেজন্য আমি ওই লাইনটা লিখলাম, যে, এই যে প্রবাসের মধ্য থেকে আসলে ওর ভাষার একটা উন্মোচনও দাবি করছে। এবং যখন আমার সাহস বাড়ল, যদিও আমার থেকে এক দশকের ছোট প্রায়। ওর তো জন্ম ১৯৪২, আমার ৩৩ এ। আমার মনে হল কিন্তু একটা অদ্ভূত কথা। যে ও ভাষার শহীদ। এখন ‘ভাষার শহীদ’ এইটা অনেকে বলবে খুব খারাপ বলেছি। এটা শব্দ নিয়ে জাদু খেলা খেললাম। তা নয় কিন্তু। মানে এটা আমরা সবাই ভাষা শহীদ। এই যে তোমার সঙ্গে কথা বলছি। এইযে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলবার যোগ্যতা অর্জন করলাম। কারণ আমরা ভাষার শহীদ হতে চাই বলে। যে যেখানে থাকি। এই জায়গাটা তার পরে কী হল, আমি কলকাতায় যায়, আসি। কবীর সুমনের স্বরলিপি এবং সুরে বেরুল। তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা। এবং এখানে তখন থেকে কলকাতায় অনেকেই ভাবে (এটা একটা নতুন তথ্য তোমাকে দিচ্ছি) যে শহীদ আর আমি এক শহরের নাগরিক। আমরা শুধু প্রতিবেশীই, আমরা এক বাড়িতেই থাকি। আমাকে কলকাতায় মাঝে মাঝে লোকজন জিজ্ঞেস করে- কাদরীদা কেমন আছেন।

      এই ব্যাপারটা খুব মজা লেগেছে। এই ব্যাপারটা তোমাকে আমি যখন সম্বোধন করে কথা বলছি, কোনোদিন তোমাকে দেখিনি, কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে ভাষার মধ্যে দিয়ে শনাক্ত করছি। আশা করি আমাদের এই আত্মীয়তার বন্ধনটা অটুট থাকবে।

      আমি বলছি যে, গত কয়েক বছর ধরে কলকাতায় কয়েকজন জিজ্ঞেস করে, কেউ না কেউ ভাবে ও বোধ হয় জার্মানিতেও থাকত।

      আমি জানতে পারতাম কয়েকজনের মাধ্যমে যে ও কেমন আছে। আমি খবর নিতাম।

      এবং আরেকটা কথা হচ্ছে যে, যখন ওর ওই বইটাই বোধ হয়, ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’। এটা বোধ হয় ৭৮ এ বেরুল। এবং তখনই বুঝতে পারলাম একটা শব্দের তাৎপর্য।

      কবিরা একটা জায়গায় আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে আত্মগোপন করে থাকে। ক্রন্দন না থাকলে কবিতা নেই। এবং সেই জায়গাটা আমরা রাখতে পারিনি বলে আমরা বাংলা ভাষার উপাসকেরা আমাদের আত্মপরিচয় হারিয়ে ফেলেছি। আমরা ক্রন্দনহীন হয়ে গেছি।

      এই লাইনটা বাংলা ভাষায় একটা প্রবাদ হয়ে গেছে- কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই। তার মানে হচ্ছে- সব জায়গায় ক্রন্দন ছড়িয়ে আছে। মনে আছে রবীন্দ্র সঙ্গীত?

      “অশ্রুভরা বেদনা। দিকে দিকে জাগে।”

      এই লাইনটা সেন্সর করে দিয়ে আমি গান গেয়েছিলাম। তোমরা আবার সেন্সর করো না।

      এইটের মধ্যে দিয়ে আজকে আমি আমার অনুজ সতীর্থের সম্পর্কে আমার ভক্তি-স্নেহ ব্যক্ত হয়ে উঠছে। এবং আমার মনে হয় যে তোমার আর আমার কথার মধ্য দিয়ে একটু আগেই আমরা মহাপার্বন সেরে এলাম।

      আজকে আমার মনে হয় আমরা একটা উপাসনা করলাম। তুমি এটা জানিয়ে দাও সারা জগতের কাছে। আমার প্রাণের ঘরেতেও পৌঁছে দিও।

      • মাসুদ করিম - ২৯ আগস্ট ২০১৬ (১:২৩ অপরাহ্ণ)

        শহীদ কাদরীকে তো কেউ দেশে ডাকেননি

        দাউদ হায়দার, জার্মানিতে নির্বাসিত কবি

        তিনি আমার বয়সে বড়। উনি মারা গেছেন। আমি গতবছরই উনার ওখানে দীর্ঘ সময় কাটালাম, নিউ ইয়র্কে। খুবই পরিচিত জন। যেহেতু উনার চেয়ে আমি বয়সে ১০ বছরের ছোট। আমি উনার বন্ধু নই, তবে বন্ধুস্থানীয়।

        শহীদ কাদরীর মতো প্রাণবন্ত মানুষ, বাংলা ভাষায় বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তার হাসি, উচ্ছ্বাস কিংবা কথা বলার ঢঙ, একেবারেই আলাদা এবং বাঙালিদের তুলনায় অনেক বেশি আন্তর্জাতিক বোধে তিনি উদ্দীপ্ত ছিলেন, জারিত ছিলেন। তিনি সব সময় নিজেকে সর্বদেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবতেন। এরকম বাঙালি কবিদের মধ্যে খুবই কম দেখা যায়। একই সঙ্গে দেশীয়, আন্তর্জাতিক একই সঙ্গে ঘরোয়া, একই সঙ্গে পারিবারিক, একই সঙ্গে সার্বজনীন।

        এবং যদি তার সঙ্গে আড্ডায় মশগুল হতে পারা যায়, তিনি ভেতর থেকে কতটা অন্তরঙ্গ, কতটা আত্মিক এবং সব মিলিয়ে শহীদ কাদরী তিনি তার কবিতার মতোই, ছড়ানো ছিটানো এবং একই সঙ্গে অন্তর্গত।

        তাকে পড়লে তার কবিতা পড়লে তাকে চেনা যায়, তার সমাজকে চেনা যায়, তার দেশকে চেনা যায় এবং তার বিশ্বকে চেনা যায়। সর্বোপরি গোটা বিশ্বকে চেনা যায় তার কবিতা পড়লে। কেননা তার মতো স্মার্ট আধুনিক কবি বাংলা কবিতায় বিষ্ণু দের পরে আর কেউ নেই। এবং এইটাই আমাদের কাছে বড় রকম অভাববোধ, যদিও তিনি খুব কম লিখেছেন, কিন্তু এই কম লেখাটাই যে আসলে অনেক বেশি লিখা, অনেক বড় রকমের লেখা। ৫০টি কবিতার বই লিখে তো লাভ নেই। টিএস এলিয়ট ৮২টি কবিতা লিখেছেন যথেষ্ট। এবং শহীদ কাদরী সব মিলিয়ে দুইশ কবিতাও লিখেননি, দেড়শ কবিতাও লিখেননি। কিন্তু বাংলা ভাষা যতদিন বেঁচে থাকবে তিনি থাকবেন।

        কারণ তার কবিতা হচ্ছে আমরা-আপনায় মিলে তার কবিতা, জনগণের কবিতা, জনমানুষের কবিতা, দেশের কবিতা এবং বিশ্বের কবিতা। সেই মানুষ তিনি, তিনি বিশ্বের মানুষ, পাঠককে তিনি বৈশ্বিক করতে চেয়েছেন। সেই বোধটাই আমাদের মাঝে দিয়েছেন নানাভাবে।

        উনি যখন ঢাকায় ছিলেন সিদ্ধেশ্বরীতে। তখন প্রায়ই যেতাম তার কাছে। তার সঙ্গে আড্ডা হত, যদিও তিনি বয়সে বড়। প্রথম প্রথম ওই আড্ডায় বসার সৌভাগ্য হয়নি। পরের দিকে সেখানে বসতাম। সেখানে মানুষের হইচই, সবকিছুকে তিনি তুচ্ছ মনে করতেন, এবং বেপরোয়া। ভাবে ভঙ্গিতে সব সময় তিনি বেপরোয়া। এবং এই বেপরোয়া ভাবটাই তাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছে। এই চিহ্নতকরণের মধ্যেই শহীদ কাদরী যেন একক হয়ে গেছেন।

        তার পরেই হচ্ছে, আপনি ধরুন, সেই ষাটের দশকের কথা। তার পরে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে খুব কম। ধরুন সেভেনটি থ্রিতে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। প্রায়ই তার বাড়িতে যাচ্ছি, সন্ধ্যার সময় নয়, দুপুরে-সকালে যখন তিনি অফিসে যাচ্ছেন না তখনও। তার পরে নানা রেস্তোরাঁয় দেখা হচ্ছে, আড্ডা দিচ্ছেন।

        নিউ ইয়র্কে, তিনি যখন বস্টনে ছিলেন, তখনও দেখা হয়েছে আমার সঙ্গে। তারপরে নিউ ইয়র্কে গতবছর, তার আগের বছর গিয়ে দু-তিন সন্ধ্যা কাটানো, আড্ডা দেওয়া, খাওয়া-দাওয়া।

        এবং তার সিগরেট খাওয়া নিষেধ। আমি যখন সিগরেট খাচ্ছি তখন তিনি বলছে- ঠিক আছে, তুমি আমাকে খানিকটা সিগরেট দেবে? কিন্তু এটা তার নিষেধ। কিন্তু আমি সিগারেট খাচ্ছি, তিনি লুকিয়ে সিগারেট খাচ্ছেন। যখন নীরা ভাবী পাশে থাকছেন না, দুটো টান দিয়ে রেখে দিচ্ছেন। যখন ভাবী আসছেন- বলছেন, তোমার ভাবী এসে গেল, নাও সিগারেটটা তুমি টানো।

        যখন তাকে নিয়ে কবিতার কথা হচ্ছে, তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে, সেই সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কথা হচ্ছে। কারণ লোকে ভুলে গেছে আসলে, তিনি আসলে ভেতর থেকে বামপন্থি ।

        এবং তিনি যদিও মার্কিন দেশে থাকেন, তিনি সত্যিকারে বামপন্থি, বামপন্থি রাজনীতির সাথে তার যে চর্চা, কবিতা বলুন, প্রবন্ধ বলুন, ইতিহাস বলুন, আন্তর্জাতিক বিষয় বলুন তিনি প্রচণ্ড লেখাপড়া করেন। এবং তার বোধটাই হচ্ছে বামপন্থার বোধ। এটা হতে পারে- তার সমসাময়িক যে কবি তারা বামপন্থি।

        ঢাকায় তিনি চাকরি করতেন সোভিয়েত ইনফরমেশন সেন্টারে। সেই ঘোরটাও হতে পারে। তার চাইতে বড় কথা হচ্ছে যে, তার সমস্ত কবিবন্ধুরা বামপন্থায় বিশ্বাস করতেন।

        এবং তিনি আমেরিকায় যাওয়ার পরেও, বিশেষ করে আমেরিকায় যাওয়ার পরে আমেরিকায় এই চাকচিক্য হোক আর যাই হোক, অর্থনীতির দিক থেকে চাকচিক‌্যের দিক থেকে… কিন্তু আসলে যে আগ্রাসী একটা সাম্রাজ্যবাদী দেশ… ভেতরে ভেতরে যে বোধ সম্পন্ন লোক, তিনি আসলে তা বুঝতে পারতেন।

        এটা নিয়ে আমার সঙ্গে খুবই কথাবার্তা হত, যেহেতু আমার কবিতায় বামপন্থি একটা বিষয় থাকে এবং আমি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এবং সেটা সোচ্চারভাবেই বলা হয়। আমেরিকাকে আক্রমণ করতে গেলে আমি যখন আক্রমণ করি সেটা সরাসরিভাবেই করি। এবং তিনি যখন আমার কবিতা পড়েন তখন বলেন, হ্যাঁ এইগুলিই আমরা বলতে চেয়েছি। এরকম আড্ডা আরকি।

        তিনি দেশ থেকে যেটা চেয়েছিলেন হয়তো সেটা পাননি। যেটা আশা করেছিলেন, যেটা না পাওয়ার একটা কারণ আছে…। তার স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে। দ্বিতীয় বিষয়টা হচ্ছে ওখানে থেকে তিনি যেটা চেয়েছেন, কখনো কখনো উনি চাইবেন, তার আশা ছিল দেশ তাকে কখনও না কখনও ডাকবে। কিন্তু সেটা আসলে কেউ বলেননি। সরকার বলেননি, বিরোধী দল বলেননি, রাজনৈতিক নেতারা বলেননি, এমনকি লেখক গোষ্ঠীও বলেননি। এটাই আসলে তার ভিতর যে একটা অভিমান তৈরি হয়েছিল সেটা বড় হয়ে যায়।

        কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি বাংলা সাহিত্য বেশি পড়তেন, বাংলা কবিতা বেশি পড়তেন। তার সবচাইতে প্রিয় কবি, জীবনান্দের চাইতেও প্রিয় কবি হচ্ছে অমিয় চক্রবর্তী। কেননা অমিয় চক্রবর্তীর কবিতার মধ্যে যে আন্তর্জাতিকতার বোধ, বেদনা, দ্বেষ সেটি তাকে আক্রান্ত করেছিল। জীবনানন্দও তিনি পড়তেন, কিন্তু সেই অর্থে বিষ্ণু দে যতটা পড়তেন, বুদ্ধদেব বসু অতটা পড়তেন না। কিন্তু অমিয় চক্রবর্তী পড়তেন।

        কিন্তু তার ভেতরে যে বোধ ছিল নির্বাসনের বোধ, কিন্তু তাকেতো ওইভাবে ডাকা হয়নি। ডাকাও হয়নি, বলাও হয়নি।

        এবং প্রাইমমিনিস্টার শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কে গেছেন তিন/চারবার। তিনি হুমায়ুন আহমদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, শহীদ কাদরীর সঙ্গে বুঝি দেখা করতে পারেন না?

        শহীদ কাদরী খুবই অসুস্থ, বাংলাভাষার এরকম একজন শ্রেষ্ঠতম কবি, তিনি তার খোঁজও নেন না, দেখাও করেন না। এই কষ্টটা তার মধ্যে থাকতেই তো পারে। তাই না?

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.