গার্ডিয়ানে দেলওয়ার হুসেইনের নিবন্ধে যুদ্ধাপরাধী চক্রের কালো থাবা, রুখে দাঁড়ান

বাংলাদেশ যখন প্রত্যাশা করছে, ২০০৮-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে, বিদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী যুদ্ধাপরাধীদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবে, ঠিক তখনই একটি ঘটনার মধ্যে দিয়ে যুদ্ধাপরাধী চক্র আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে, এ-ধরণের বিচারপ্রক্রিয়াকে ঠেকানোর জন্যে এবং বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত তথ্যায়ন প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার জন্যে তারা যথেষ্ট সংঘবদ্ধ।

উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাকের ব্রিটেন সফর নিয়ে এই ব্লগেই এ মাসের পাঁচ তারিখে একটি পোস্ট লিখেছিলেন অবিশ্রুত এহুদ বারাকের ব্রাইটন মিশন : ব্রিটেন কি যুদ্ধাপরাধীদের ভূস্বর্গ? শিরোনামে। প্রসঙ্গত তিনি লিখেছিলেন,

ব্রিটেন যে যুদ্ধাপরাধীদের ভূস্বর্গে পরিণত হয়েছে, এই ক্ষোভ এর আগেও প্রকাশ পেয়েছে অন্যান্য দেশের বিভিন্ন নাগরিকদের মন্তব্য থেকে। বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, তাদের কারও কারও নিরাপদ বাসস্থান এখন এই ব্রিটেন। এই ব্রিটেনে বসেই গোলাম আযম পরিচালনা করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন।

মুক্তাঙ্গনে এই পোস্ট প্রকাশের দু-দিন পর ৭ অক্টোবর তারিখে গার্ডিয়ান পত্রিকায় যুক্তরাজ্য-নিবাসী কথিত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মুঈনউদ্দিনকে নিয়ে লেখেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্র দেলোয়ার হুসেন।

তাঁর লেখাটির শিরোনাম ছিল ‘প্রসিকিউট বাংলাদেশ’স ওয়ার ক্রিমিনালস’, যাতে প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে, ব্রিটেনে আশ্রয়গ্রহণকারী বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মুঈনউদ্দিনসহ বিভিন্ন জনের কথাও। চৌধুরী মুঈনউদ্দিনের যুদ্ধকালীন ভূমিকা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। গণহত্যা-সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইটেও তার সম্পর্কে তথ্যপত্র রয়েছে, যাতে সুস্পষ্ট যে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি হন্তারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এমনকি ব্রিটেনে আশ্রয় নেয়ার পরও তিনি যে-ভূমিকা রেখে চলেছেন, তা অতীতের রাজনৈতিক আদর্শেরই জের। গার্ডিয়ানে লেখাটি প্রকাশ পাওয়ার পর চৌধুরী মুঈনউদ্দিন তা ধামাচাপা দেয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠেন এবং শেষ পর্যন্ত খানিকটা সফলও হয়েছেন বলা চলে। কেননা আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার হুমকির মুখে গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটের মূল লেখাটিতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে।এ প্রসঙ্গে গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন

On 13 October this article was changed following a legal complaint.

এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার, যুদ্ধাপরাধী চক্র খুবই সংঘবদ্ধ এবং তারা ব্রিটেনের একটি প্রধান সারির পত্রিকার ওপর সাময়িক কিংবা সুদূরপ্রসারীভাবে চাপ তৈরি করতে সক্ষম। গণতান্ত্রিকতা ও বাকস্বাধীনতা চর্চার সুযোগ গ্রহণ করে যুদ্ধাপরাধীরা এখন এখানে গণতান্ত্রিক আইনী পদ্ধতিতে ঐতিহাসিক ও প্রতিষ্ঠিত সত্যকেও পাল্টে ফেলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে আমরা দেখেছি, ব্রিটেন থেকে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী এহুদ বারাককে সদর্পে ঘুরে যেতে; আর এখন দেখতে পাচ্ছি, বছরের পর বছর ধরে এখানে বসবাসকারী এক যুদ্ধাপরাধীকে তার অপরাধ ঢাকার অপচেষ্টা চালাতে। আমাদের জানা মতে, চৌধুরী মুঈনউদ্দিনের পক্ষ থেকে লেখক এবং গার্ডিয়ান পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা রুজু করার চেষ্টা চলছে। যদিও এখনো ঠিক বোঝা যাচ্ছে না, মুঈনউদ্দিনরা কি সত্যি সত্যিই মামলা করতে চায় নাকি মামলার ভয় দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা মানুষদের কণ্ঠরোধ করতে চায়।

এটি বলার অবকাশ রাখে না, এই পরিস্থিতি আমরা মেনে নিতে রাজি নই। এও বলার অপেক্ষা রাখে না, আমরা দেলওয়ার হুসেইনের পাশে আছি। তার প্রতি আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, সঠিক তথ্যই তিনি তুলে ধরেছিলেন তাঁর নিবন্ধটিতে। গার্ডিয়ান-এর লিগ্যাল টিম তাদের অবস্থান থেকে পত্রিকাটির সম্পাদকীয় স্বাধীনতা বজায় রাখার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলেও আমরা আশা করছি। এ ছাড়াও আইনী সহায়তা কেন্দ্রীভূত করা যায় কি না সেটি চিন্তা করতে হবে বিভিন্ন দিক থেকে।

ইতিহাসের প্রকৃত সত্যকে আমরা আপোষহীনভাবে তুলে ধরব, প্রকাশ করব এবং এ জন্যে যে-কোনও ধরণের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে আমরা একটুও কুণ্ঠিত নই, দ্বিধান্বিত নই। আমরা সকলের প্রতি আহ্বান রাখব, আমাদের এই প্রতিবাদ ও সংহতিজ্ঞাপক লেখাটি সবখানে ছড়িয়ে দিতে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে বিভিন্নজনের সামর্থ্য অনুযায়ী আরও অজস্র প্রতিবাদগাথা রচনা করতে। আমরা সকলের প্রতি আহ্বান রাখব, যুদ্ধাপরাধীদের মুখোশ খুলে দেয়ার জন্যে আবারও সবাইকে কলম ধরতে, পাঠচক্র ও আলোচনা সভার মাধ্যমে ইতিহাসের প্রকৃত সত্য তুলে ধরে সবাইকে সংঘবদ্ধ করতে; যাতে এই যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। আমাদের পূর্ব-প্রজন্ম গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন করে গেছেন; তাদের উত্তরসূরি হিসেবে আমাদের হাত একটুও কাঁপবে না এইসব যুদ্ধাপরাধীদের আইনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে শাস্তি দিতে, বরং আমরা আরও শাণিত ও সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্তই নেব অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে।

আমরা জানি, ইতিহাস আমাদের পক্ষে, জনগণও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমরা ইতিহাস এবং জনগণের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

এই বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কিছু লিন্ক:
১. The Guardian Has Received ANOTHER Libel Threat
২. The Guardian Will Shortly Receive A Libel Threat From Carter Ruck

১০ comments

  1. মনজুরাউল - ১৫ অক্টোবর ২০০৯ (১১:৪২ অপরাহ্ণ)

    দেলওয়ার হুসেনের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন। তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। এই একাত্মতা আরো বেশি করে দেখানো দরকার যারা প্রবাসী বিশেষ করে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের। এই পোস্টটি অন্য ব্লগেও পোস্ট করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।

  2. Pingback: Global Voices Online » Bangladesh: Article On War Criminals Censored

  3. ফারুক ওয়াসিফ - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ)

    দেলওয়ার হোসেনের আরো লেখা গার্ডিয়ানে ও ওপেন ডেমোক্রেসিতে পড়েছি। তার সঙ্গে এবং মুক্তাঙ্গনের উদ্যোগে সংহতি।

  4. মোহাম্মদ মুনিম - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (৪:০২ পূর্বাহ্ণ)

    গার্ডিয়ানের ব্লগ থেকে চৌধুরী মুঈনউদ্দিনের নাম মুছে ফেলা হয়েছে মনে হচ্ছে। চৌধুরী মুঈনউদ্দিন যে মসজিদের সাথে যুক্ত আছে, সেখার মুসুল্লিদের সাথে যোগাযোগ করে তার কীর্তিকলাপের কাহিনী প্রচার করা যায়। কয়েক বছর আগে ব্রিটেনে এক আফগান যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছিল। তার বিচার সম্ভব হলে মুঈনউদ্দিনের বিচারে বাধা কোথায়। মুঈনউদ্দিনের যুদ্ধাপরাধের কথা একটি পাকিস্তানি ব্লগেও এসেছে।

  5. অবিশ্রুত - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ)

    এই মুহূর্তে শুধু দেলওয়ার হুসেইনের সঙ্গে সংহতিপ্রকাশই যথেষ্ট নয়। আমাদের একটি অন্যতম পদক্ষেপ হওয়া গার্ডিয়ান যাতে তাদের ওয়েবসাইটে মূল নিবন্ধটি অবিকৃত অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে, এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা। তাই এটিও জানা প্রয়োজন, কোন ধরনের আইনী আপত্তির কারণে তারা নিবন্ধটি পরিবর্তন করেছেন। এ ব্যাপারে গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যাখ্যা দিয়েছে কি?
    দ্বিতীয়ত প্রয়োজন, একটি আইনী প্রস্তুতি নেয়া। আমার কাছে মনে হচ্ছে, চৌধুরী মুঈনউদ্দিনরা চাইছে, এ লেখাটিকে কেন্দ্র করে তার যুদ্ধাপরাধসংক্রান্ত অতীত অপকর্মকে ধুইয়ে ফেলার উদ্যোগ নিতে। বাংলাদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন ও লেখার বদলে গার্ডিয়ানের লেখাটিকে কেন্দ্র করে সে এগুতে চাইছে কেন সেটি চিন্তা করে দেখা প্রয়োজন, বিশেষত আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকে।
    তৃতীয়ত, বাংলাদেশে এবং ব্রিটেনে ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে আরও সামনে নিয়ে আসা দরকার। এ জন্যে বিশেষত যারা বাংলাদেশে আছেন, তাদের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। মুক্তাঙ্গন সঠিকভাবেই চিহ্নিত করেছে যে আমাদের প্রয়োজন আরও পাঠচক্র, আলোচনাচক্র, প্রদর্শনী ইত্যাদির ব্যবস্থা করা, যাতে আমাদের মন আবারও জেগে ওঠে। পাশাপাশি প্রয়োজন ইংরেজিতেও বিষয়গুলির তথ্যায়নের উপর গুরুত্বারোপ করা, যাতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও চৌধুরী মুইনউদ্দিনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে সঠিক ধারণা ছড়িয়ে পড়ে।
    মুক্তাঙ্গন এবং দেলওয়ার হুসেইনকে ধন্যবাদ তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্যে। পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি সকলের সঙ্গে।

  6. ইনসিডেন্টাল ব্লগার - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ)

    জাতিগতভাবেই আমরা একটু ধীর-স্থির। আমাদের সব কিছুই হয় একটু আস্তে ধীরে। একটা দীর্ঘ সময়ই আমরা অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারি অলস আলোচনা আর সিদ্ধান্তহীনতায়। কিন্তু একবার আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসলে এই জাতিকে এবং বিশেষত এর তরুণ সমাজকে থামায় তেমন শক্তি নেই। শত অপ্রাপ্তি আর বঞ্চনার দেশ, ছোট্ট দেশ বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুবার সে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এসব ভেবেই এখন কেন যেন মনে হচ্ছে চৌধুরী মুঈন-উদ্দিনরা বুঝি একটা বড়ো ভুলই করে বসলো এবার। যুক্তরাজ্যের আদালতে মামলা করতে চাইলে করুক। ফাঁস হওয়ার মতো গোমর কি তার কিছু কম আছে? সবই তখন বেরুবে একে একে। এটা মহা পরাক্রমশালী বৃটিশ রাষ্ট্রের নৈতিক মানকে পৃথিবীর কাছে উম্মোচন করারও এক সুবর্ণ সুযোগ। এতোদিন দুধ কলা দিয়ে সাপকে পেলেছে, সেই সাপের সাথে গলা-জড়াজড়ি বন্ধুত্ব করেছে মাল্টিকালচারালিজম ইত্যাদি নানা ছুতোনাতায়। এবার কিছুটা হলেও মূল্য দিক। আমাদের দায়িত্ব হবে নগ্ন রাজাকে মনে করিয়ে দেয়া তার গায়ে কাপড় নেই। কেন যেন মনে হচ্ছে দেলওয়ার হুসেইনের এই ঘটনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রচেষ্টার আন্দোলনের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। কেন‍‍ যেন মনে হচ্ছে এবার সত্যিই গা ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠবে আমাদের ঘুমন্ত প্রজন্ম। এবার ওরা শুধু যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের ডজনখানেক মুঈন-উদ্দিনদেরই তাড়া করে থামবে না, বাংলাদেশে তাদের দোসর ভাই বেরাদরদের বিরুদ্ধেও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে জোরেশোরে মাঠে নামবে ওরা। কোন ধরণের সরকারী সমর্থন কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক আশির্বাদের তোয়াক্কা না করে। ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে আবারো জেগে উঠুক নতুন প্রজন্ম, গর্জে উঠুক।

    আর বাক্য-অপচয় নয়, এখন সময় হোক কর্মের। সংহতি দেলওয়ার হুসেইনের সাথে, সংহতি মুক্তাঙ্গনের সাথে।

    • রায়হান রশিদ - ২৩ অক্টোবর ২০০৯ (৮:৩৭ অপরাহ্ণ)

      কেন যেন মনে হচ্ছে দেলওয়ার হুসেইনের এই ঘটনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রচেষ্টার আন্দোলনের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। কেন‍‍ যেন মনে হচ্ছে এবার সত্যিই গা ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠবে আমাদের ঘুমন্ত প্রজন্ম। এবার ওরা শুধু যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের ডজনখানেক মুঈন-উদ্দিনদেরই তাড়া করে থামবে না, বাংলাদেশে তাদের দোসর ভাই বেরাদরদের বিরুদ্ধেও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে জোরেশোরে মাঠে নামবে ওরা। কোন ধরণের সরকারী সমর্থন কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক আশির্বাদের তোয়াক্কা না করে।

      গত কয়েক দিনে যেভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সের, পেশার মানুষ এগিয়ে এসেছেন ‘ওয়ার ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম’ এর কর্মকান্ডে সামিল হওয়ার জন্য, তা থেকে এমনটাই মনে হচ্ছে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এগুনো কাজগুলো হঠাতই যেন পেয়েছে নতুন গতি। সিসিবি-তে ব্লগার ফয়েজ এর এই উচ্চারণ সে বিশ্বাসকেই দৃঢ়তর করে:

      আমাদের সবকিছু একবারে হয়নি। কিন্তু ধাপে ধাপে তো হয়েছে। আমরা জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি, আমাদের নিজস্ব ভাষা হয়েছে, নিজস্ব দেশ হয়েছে। হয়তো দেশটা এখনো পুরোপুরি গড়ে উঠেনি। দাড়াতে পারেনি নিজের পায়ে।

      বাংগালীকে জাতি হিসেবে তৈরীর পিছনে আমার অবদান “শুন্য”, নিজস্ব ভাষা হিসাবে বাংলাকে প্রতিষ্টিত করার ব্যাপারে আমার অবদান “শুন্য”, স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আমার অবদান “শুন্য”।

      অবদান রাখার জায়গা এখন একটাই, দেশটাকে যদি গড়ে তোলা যায়, স্বপ্নের মত করে। নতুবা আমার মেয়ের কাছে আমার পরিচয় হবে “বুদ্ধিজীবিদের গালি দেয়া, সেলিব্রিটিদের গসিপ পড়া এবং ডেইলী সোপ অপেরা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে মরে যাওয়া একজন মানুষ”।

      অনেকে অনেক কিছু করেছে, বা করেনি, এটা এত গুরুত্বপূর্ন নয় একজন মানুষের জীবনে। গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে, সে নিজে কতখানি করেছে।

  7. tawheed reza noor - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (১২:৩৭ অপরাহ্ণ)

    I believe The Guardian and other concerned will watch the documentary film by Twenty Twenty Television titled WAR CRIMES FILE and decide how to deal with the current situation. I believe The Guardian and other media will come forward to give appropriate coverage of the genocide and intellectual killings that took place during the liberation war of Bangladesh back in 1971. For the sake of creating a humanitarian world/future, we must look back, which will help new/young generations all over the world how to react…together we all must work for creating a just society where our mind will remain without fear….TIME HAS COME WHEN TRUTH MUST BE TOLD…

    • রেজাউল করিম সুমন - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (৮:১৪ অপরাহ্ণ)

      ধন্যবাদ, WAR CRIMES FILE-এর কথা সবাইকে মনে করিয়ে দেয়ায়।

      দেলোয়ার হুসেইন এবং মুক্তাঙ্গনের উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।

  8. বিনয়ভূষণ ধর - ১৬ অক্টোবর ২০০৯ (৮:১৬ অপরাহ্ণ)

    আজ প্রায় ১০ মাস হতে চললো আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। এই ১০ মাসে যখনই যুদ্ধ-অপরাধী বিষয়টি নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করা হয় তখনই সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীগণ আমাদের জনসাধারণকে নানারকম বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে আসছেন। কেউ বলেন দুমাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে, আবার অন্যদিকে আরেকজন বলা শুরু করলেন যুদ্ধ-অপরাধীদের বিচার না করার জন্যে নাকি আন্তর্জাতিক চাপ আছে। তার একদিন পরে আবার আরেকজন বলা শুরু করলেন যুদ্ধ-অপরাধীদের বিচার করতে কোন আন্তর্জাতিক চাপ নেই। তবে এখন পর্যন্ত যেটা সত্যি কথা সেটি হচ্ছে সরকার এখনো কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয় নাই এ বিষয়ে। আদৌ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়ে গেছে। কারণ কিছুদিন আগে সরকারকে বলতে শুনলাম কিছু চিহ্নিত যুদ্ধ-অপরাধীর প্রাথমিকভাবে বিচার শুরু করতে যাচ্ছে। সত্যি কথা বলতে কি আমি এখন আর এই সরকার থেকে এই বিষয়ে আর কোন-কিছু আশা করতে পারছিনা। কারণ সরকার এখন নানা বিষয় নিয়ে ব্যস্ত শুধুমাত্র এই একটি বিষয়টি ছাড়া…

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.