লাতিন ভাষার কথা : ২০

|| দৈনন্দিন জীবনের ভাষা || আবহাওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে, কর নিয়ে অভিযোগ করার সময়, বা, পড়শীর বৌকে নিয়ে গালগপ্পো করার সময় লোকে লাতিনে কি বলত? আজ যে-ভাষায় কথা বলা হয় সে ভাষার ক্ষেত্রে এটা স্রেফ শুনেই বলে দেয়া যায়। কিন্তু লাতিন আমরা কেবল পড়তেই পারি, শুনতে পারি না, কাজেই রোজকার ভাষা কেমন ছিল তা বলা বেশ কঠিন। [. . .]

Tore Janson-এর সুইডিশ ভাষায় রচিত Latin: Kulturen, historien, språket গ্রন্থের Merethe Damsgård Sørensen ও Nigel Vincet-কৃত ইংরেজি অনুবাদ A Natural History of Latin-এর বাংলা ভাষান্তর

দৈনন্দিন জীবনের ভাষা

আবহাওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে, কর নিয়ে অভিযোগ করার সময়, বা, পড়শীর বৌকে নিয়ে গালগপ্পো করার সময় লোকে লাতিনে কি বলত? আজ যে-ভাষায় কথা বলা হয় সে ভাষার ক্ষেত্রে এটা স্রেফ শুনেই বলে দেয়া যায়। কিন্তু লাতিন আমরা কেবল পড়তেই পারি, শুনতে পারি না, কাজেই রোজকার ভাষা কেমন ছিল তা বলা বেশ কঠিন। যে সমস্ত বই-পত্তর আমাদের কাছে আছে তা থেকে অনেকটাই কুড়িয়ে-কাছিয়ে নেয়া যায় অবশ্য। কিন্তু বেশিরভাগ লেখক-ই কথ্য ঢং-এ লেখেন না, বরং ইচ্ছে করেই একটি শিল্পসম্মত উপায়ে লেখেন (তার মানে কি কথ্য ঢংটি শিল্পসম্মত নয়? – অনুবাদক), ব্যবহার করেন ব্যপক বিস্তৃত শব্দসম্ভার ও প্রায়ই, দীর্ঘ বাক্য; সেই সঙ্গে, ব্যাকরণের নিয়ম-কানুনের প্রতি সব সময়ই প্রদর্শন করেন পরম সম্মান। লোকে আজকাল এভাবে কথা বলে না, এবং অবশ্যই রোমেও তারা তা করত না। তাছাড়া, আমরা দেখেছি, বেশিরভাগ লেখকই এসেছিলেন সমাজের উঁচুতলা থেকে। এবং তাঁদের কথা বলার ধরন সম্ভবত অধিকাংশ রোমকদের কথা বলার ধরনের চাইতে ভিন্ন ছিল। আর তাই, সিসেরো বা তাঁর বন্ধুস্থানীয়দের মধ্যে কথ্য ভাষার যেসব উপাদান পাওয়া যায় তা প্রতিনিধিত্বমূলক নয়।

সাধারণ মানুষ কিভাবে কথা বলতেন তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে প্লতাসের কমেডি থেকে, যার কথা আগে বলেছি আমরা। এখানে পরস্পরের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হওয়া দুই গৃহবধূ ক্লেওস্ত্রাতা আর মিরিনা-র একটা ছোট সংলাপ তুলে দেয়া হলো :

Cleostrata: Myrrhina, salve.
 Myrrhina: Salve, mecastor: sed quid tu’s tristis, amábo?
 Cleostrata: Ita solent omnes quae sunt male nuptae: Domi et foris aegre quod sit, satis semper est. Nam ego ibam ad te. 
Myrrhina: Et pol ego istuc as te. Sed quid est, quod tuo nunc ánimo aegre’st? Nam quod tibi’st aegre, idem mihi’st dividiae.

ক্লেওস্ত্রাতা: কি খবর, মিরিনা? 
মিরিনা: এই তো। কিন্তু তোমাকে এতো মনমরা দেখাচ্ছে কেন, গো? 
ক্লেওস্ত্রাতা: সবার-ই এমন হয় যদি সংসার জীবনে সুখ না থাকে; ঘরে বাইরে, কোথাও কোনো শান্তি থাকে না। আমি স্রেফ তোমার সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছি। 
মিরিনা: ভাবো দেখি! আমি-ও তো তোমার সঙ্গে দেখা করবো বলে বেরিয়েছি। কিন্তু ঠিক কি হয়েছে বলো তো যে এমন মুখ কালো করে আছো? তোমার মন ভালো না থাকলে আমরাও যে ভালো লাগে না।

অনেকটাই কথ্য ভাষা এটা, ছোট ছোট বাক্য, প্রতিদিন মানুষ যে ভাষায় কথা বলে ঠিক সেরকম অভিব্যক্তি আর একই শব্দের বেশ কয়েকটি পুনরাবৃত্তি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, অনেক ভারি ভারি লেখার চাইতে এই বাক্যগুলো অনুবাদ করা বেশি কঠিন। তার কারণ, সেখানে অনেক বাগধারা ইত্যাদি থাকে। সেসবের কয়েকটি নিয়ে একটু আলাপ করা যাক। মিরিনা তার প্রথম কথা শেষ করে ‘amabo’ শব্দটা দিয়ে। যার আক্ষরিক মানে, ‘আমি ভালোবাসব’। কিন্তু এখানে যেটা বোঝানো হচ্ছে তা হলো অনেকটা এই যে, আমি তোমাকে পছন্দ করব বা তোমার প্রতি আমি প্রসন্ন হবো বা আমার ভালো লাগবে (যদি আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়); এবং কোনো বন্ধুসুলভ, প্রীতিপূর্ণ প্রশ্ন করা হলে এই অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করা হয়। এটার ইংরেজি অনুবাদ হতে পারে ‘মাই ডিয়ার’ (বাংলায় যেটা ‘গো’ দিয়ে বোঝানো হয়েছে), বা, এমন কি স্রেফ, ‘তাহলে’-ও হতে পারে।

তো, এরপর সে বলে ‘et pol ego istuc ad te’। ‘Et ego ad te’-টা বোঝা সহজ – ‘আর আমিও তোমার কাছে বা দিকে’। ‘istuc’ শব্দটার মানে ‘তোমার’, বা, ‘তুমি যেখানে’, যা আবারও তর্জমা করে বোঝানোর দরকার নেই। ছোট্ট শব্দ ‘pol’ টা একটা সমস্যা বটে। আসলে সেটা দেবতা বা, আরো সঠিকভাবে বলল, উপদেবতা ‘Pollux’-এর নামের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটা হচ্ছে খুবই ছোটখাট কোনো দিব্যি দেবার শব্দ। কথ্য ভাষায় বহুল ব্যবহৃত এই শব্দটি, এবং এটার মনমতো অনুবাদ করা খুব কঠিন। আমি এখানে সেটা করেছি, ‘ভাবো দেখি!’

কোনো একটি কথ্য ভাষার সঙ্গে যিনি বেড়ে ওঠেননি তাঁর জন্য সেটি বোঝা সব সময় সহজ নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে যে, ব্রিটেনে সদ্য আগত একজন অভিবাসী হয়ত প্রায়-ই দেখবেন যে পানশালার মানুষের কথাবার্তার চাইতে সম্প্রচারিত খবর বুঝতে তাঁর কম অসুবিধা হচ্ছে। ঠিক একইভাবে, রাস্তার ভাষা বোঝার চাইতে লাতিনে লেখা রাজনীতি বা দর্শন সংক্রান্ত যুক্তি-তর্ক বেশি সহজে বুঝতে পারছি আমরা। তবে একবার বুঝতে পারলে কথ্য ভাষাতে প্রায়ই বেশি মজা পাওয়া যায়, এবং দুই হাজার বছর আগে সাধারণ মানুষ ঠিক কিভাবে জীবনযাপন করে গেছেন সেকথাটা এই কথ্য ভাষা আমাদের বলে দিতে পারে। নাটক ছাড়াও আরো কিছু টেক্সট-এ প্রাচীন রোমের কথ্য লাতিন থেকে সরাসরি নেয়া ভাষার দেখা পাই আমরা। (আমাদের ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’র কথা মনে পড়ছে এই প্রসঙ্গে। – অনুবাদক)।

ভিসুভিয়াসের ভস্ম ৭৯ খৃষ্টাব্দে যখন পম্পেই নগরীকে চাপা দেয় তখন সেটির দেয়ালগুলোসহ অনেক কিছুই সেই ভস্মের নিয়ে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গিয়েছিলে। কয়েক শ বছর আগে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা নগরটি খুঁড়তে শুরু করলে – আগেও বলেছিলাম – তাঁরা আবিষ্কার করেন যে সেই দেয়ালগুলো নানান লেখায় আকীর্ণ। সব ধরনের বার্তা বা সংবাদের জন্য ব্যবহৃত হতো সে-দেয়ালগুলো, যেমন বিজ্ঞাপন, নির্বাচনী পোস্টার, ইত্যাদি। তবে সেসবের বেশিরভাগই আজকের জমানার শহরের দেয়ালগুলোতে যে-সমস্ত জিনিস দেখতে পাওয়া যায় অনেকটা সেরকম, এ-প্রসঙ্গে গণশৌচাগারের কথা না হয় না-ই তোলা হলো। সব ধরনের বার্তা আছে সেখানে, আর সেগুলোর একটা উল্লেখযোগ্য অংশ যৌনতা বিষয়ক। সেসব বার্তার লেখকেরা বলছেন হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা, বা কারো নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করছেন যে সে-ব্যক্তি এটা করেছে বা সেটা করতে পারছে না। লাতিন ভাষায় বহু কেজো শব্দ রয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে যোনিজ, মুখ, আর পায়ুসঙ্গম বিষয়ক নানান ক্রিয়াপদ, এবং দেয়ালগুলোর গায়ে উৎকীর্ণ লিপিতে সেগুলোর কোনোটাই বাদ পড়েনি। তবে এসব উৎকীর্ণ লিপিতে যে রোজকার বা দৈনন্দিন জীবনের ভাষা আছেই তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে সেখানে তারা যা বলেছিল তার চাইতে যা তারা মুখ ফুটে বলার সাহস করে উঠতে পারেনি খুব সম্ভবত সেসব কথাই ছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এমনকি আজও সেসব লেখা পড়ে অনেকের ভুরু কুঁচকে উঠতে পারে।

রোজকার ভাষার আরেকটি যে উদাহরণ রয়েছে সেটি ‘Cena Trimalchionis’ বা ‘ত্রিমালকিওর নৈশভোজনোৎসব’ নামে খ্যাত। এটি হলো প্রাচীন লাতিন সাহিত্যে গুটিকতক যে-উপন্যাস রয়েছে সেগুলোর মধ্যে দীর্ঘ একটি থেকে নেয়া পৃষ্ঠা তিরিশেকের একটি নির্বাচিত অংশ। বইটির কিছু ছোট ছোট অংশ যাকে ‘Satyrica’ বলা হতো এবং যা সম্বন্ধপদীয় বহুবচন – genitive plural – ‘Satyricon’ হিসেবেই সাধারণত উল্লিখিত হয় – তা আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। পাণ্ডুলিপি থেকে জানা যায় লেখকের নাম ছিল পেত্রনিয়াস, এবং ধারণা করা হয় তিনি হলেন সেই পেত্রনিয়াস যিনি ছিলেন একাধারে এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং রোমের ধনী ফ্যাশনদুরস্ত পরিমণ্ডলের উৎসব-আয়োজন-পান-ভোজনোৎসবে অংশগ্রহণকারী শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি। বলা হয়ে থাকে সম্রাট নিরো তাঁকে ‘elegantiae arbiter’ বা, ‘সুরুচির মীমাংসাকারী’ হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। এই উদ্ধৃতাংশে রয়েছে রোমের এক হঠাৎ বড়লোক ত্রিমালকিও-র বাড়িতে জাঁকজমকপূর্ণ এক নৈশভোজনোৎসবের কাহিনী। বেশিরভাগ অতিথিই ভূতপূর্ব দাস যাঁরা গৃহকর্তার মতোই দুটি পয়সা আর সৌভাগ্যের মুখ দেখেছেন পরে, আর তাঁদের সংলাপ বলে দেয় তাঁরা কিভাবে কথা বলতেন। তো তাদেরই একজন ‘একিওন’ যখন তাঁর সন্তানের শিক্ষা নিয়ে কথা বলেন তখন তা কেমন শোনায় তার নমুনা নিচে দেয়া হলো :

Emi ergo nunc puero aliquot libra rubricata, quia volo illum ad domusionem aliquid de iure gustare. Habet haec res panem. Nam litteris satis inquinatus est.

তো, ছেলেটাকে কিছু আইনের বই-পত্র কিনে দিলাম। কারণ, আমি চাই ও বাসায় বসেও একটু আধটু আইনের স্বাদ পাক। ওটা দিয়ে কিছু একটা করে খেতে পারবে ছেলেটা। এমনিতে তো মাথায় সাহিত্যের পোকা কিলবিল করছে।

এই মানুষগুলো সন্তানদের নিয়ে খুব উচ্চাশা পোষণ করতেন, চাইতেন – যেমনটা এখনকার অনেক মা-বাবাই চান, – তারা তাদের পড়াশোনার ফলাফলের জোরে আরো ভালো একটা জীবন পাক। পেত্রনিয়াস, যিনি নিজে সমাজের উচ্চাসনে একটা পাকাপোক্ত ঠাঁই করে নিয়েছিলেন, তিনি এধরনের উচ্চাশাকে হেয় চোখে দেখতেন। উপরের কথাগুলো এক হাস্যকর সামাজিক ভুঁইফোঁড়ের ছবি ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করছে, যা আরো জোরালো হয়েছে যথোপযুক্ত ভাষার ব্যবহারে। সাধারণ লিখিত ভাষার সঙ্গে তুলনা করলে সেখানে ভুলের ছড়াছড়ি দেখা যাবে, যা অনুবাদে তুলে আনা মুশকিল। উদাহরণ হিসেবে বলে যায়, একিয়ন ‘liber’ বা ‘বই’-এর বহুবচন হিসেবে ‘libros’-র বদলে ‘libra’ ব্যবহার করেছেন, যা প্রমাণ করে তিনি খুবই সাধারণ ও পরিচিত শব্দের শব্দরূপ সম্পর্কে নিশ্চিত নন। ব্যাপারটা অনেকটা ইংরেজিতে কথা বলার সময় ‘children’-এর বদলে ‘childs’ ব্যবহার করার মতো।

ভাষার পরিবর্তন নিয়ে যে সব ভাষাবিজ্ঞানী কাজ করছেন তাঁরা এ-ধরনের কিছু অদ্ভুত ব্যাপার-স্যাপার বেশ আগ্রহ নিয়ে খেয়াল করেন। যেমন ধরুন, একিয়ন বলছেন ‘aliquid de iure’, ‘একটু-আধটু আইন’ (a little law) – আক্ষরিক অর্থে, ‘আইনের খানিকটা’। সাধারণ লিখিত লাতিনে এটা হওয়ার কথা ছিল, ‘aliquid iuris’, যেখানে ‘iuris’ রূপটি বিশেষ্য ‘ius’ বা, ‘আইন’-এর সম্বন্ধপদীয় রূপ (genitive)। কিন্তু একিয়ন বিশেষ্যটির সম্বন্ধপদীয় রূপ ব্যবহার না করে একটি প্রসর্গ (preposition) ‘de’ আর একটি বিশেষ্য ব্যবহার করেছেন; আর মজার বিষয় হচ্ছে রোমান্স ভাষাগুলোতে (ইতালীয়, ফরাসি, হিস্পানী, রুমানীয়, ইত্যাদি) ঠিক এটাই হয়। ফরাসিতে ‘একটু-আধটু আইন’ হবে ‘un peu de droit’ – আক্ষরিকভাবে, ‘আইনের খানিকটা’ (a little of law)। তার মানে, বিশেষ্যের কারকভেদে অন্ত্য রূপ (case endings), যা লাতিনে দেখতে পাওয়া যায়, সেটা থেকে বিশেষ্যসহ প্রসর্গ বা preposition-এর বড়সড় পরিবর্তনের সূত্রপাত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব, যা আধুনিক রোমান্স ভাষাগুলোর বৈশিষ্ট্য। পেত্রনিয়াস তাঁর মুক্ত কিন্তু তখনো ‘অশিক্ষিত’ দাসদের মুখে এধরনের বেশ কিছু বিষয় বসিয়েছেন যা ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের আভাস দেয়।

অন্য কথায় বলতে গেলে, মনে হয় যেন কথ্য ভাষাতে কিছু কিছু পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছিল, যদিও সেসময়কার আরো ‘সঠিক’ লিখিত টেক্সট-এ এমনটি প্রায় কখনোই ঘটে না। আর সেটা মোটেই অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। সব কথ্য ভাষার মধ্যেই পার্থক্য আছে, এবং সেগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়, কিন্তু স্কুল-কলেজে যে লিখিত ভাষা শেখানো হয় তা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি রক্ষণশীল। গোটা প্রাচীনকালে লিখিত ভাষার পরিবর্তন হয়নি বললেই চলে, আর তার ফলে, স্পষ্টতই তা কথ্য ভাষার চাইতে ক্রমেই আরো বেশি আলাদা হয়ে গেছে।

যে-ধরনের লাতিনটা ঠিক দাপ্তরিক বা আনুষ্ঠানিক লিখিত লাতিন নয়, এবং যে লাতিনের উদাহরণ পাই আমরা পম্পেই-এর উৎকীর্ণ লিপিগুলোতে আর পেত্রনিয়াসের সংলাপে, সেটাকে প্রায়ই ‘Vulgar Latin’ (অশিষ্ট লাতিন) বলা হয়। দুর্ভাগ্যজনক একটা অভিধা এটা, যদিও বহুদিন ধরেই সেটা প্রচলিত। প্রথম কথা, ‘vulgar’ শব্দটার একটা নিন্দাসূচক মানে আছে ইংরেজিতে, যেমনটা আছে জার্মান ও ফরাসি ভাষায় সেটার প্রতি-শব্দে : ‘vulgär’, ‘vulgaire’। সবগুলোই এসেছে লাতিন ‘vulgaris’ থেকে, যার মানে ‘জনপ্রিয়’, বা ‘সাধারণ’, আর সেটার অর্থ-ও সাধারণত নিন্দাসূচক। ওটা আবার এসেছে ‘vulgus’ শব্দটা থেকে যার মানে ‘সাধারণ মানুষ’। দ্বিতীয়ত, কথাটা শুনে সহজেই মনে হতে পারে যে ‘Vulgar Latin’ একটা স্বাধীন ভাষা, সাধারণ লাতিন থেকে একেবারেই ভিন্ন, অথচ আসলে সেটার মানে হচ্ছে এই: সাধারণ যে-লাতিনে জনসাধারণ কথা বলে। সেটা যে লিখিত ভাষার চাইতে খানিকটা আলাদা, আর কথ্য ইংরেজি যে লিখিত ইংরেজির চাইতে বেশ কিছু দিক থেকে ভিন্ন, এই দুটো বিষয়ের কোনোটাই একটা অন্যটার চাইতে বেশি আশ্চর্যের কিছু নয়। কিন্তু কাউকে তো কথ্য ইংরেজিকে ‘Vulgar English’ বলতে শোনা যায় না!

(ক্রমশ)

জি এইচ হাবীব

জন্ম ১০ই মার্চ ১৯৬৭। পেশা: শিক্ষকতা।

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.